IPL 2025: পহলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই চলছিলো ভারত-পাক কূটনৈতিক দড়ি টানাটনি। তা চরমে পৌঁছায় গত মঙ্গলবার রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অপারেশন সিন্দুরের পর। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের নয়টি জায়গায় মিসাইল হামলা চালানো হয়। ধ্বংস হয় একের পর এক জঙ্গিঘাঁটি। পালটা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো পড়শি দেশ। তবে তাদের ড্রোন ও মিসাইল হামলা্র চেষ্টা রুখে দেয় ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এস-৪০০। করাচী, রাওয়ালপিন্ডি, লাহোরের মত শহরে ড্রোন পাঠিয়েই প্রত্যুত্তর দেয় ভারতীয় সামরিকবাহিনী। ভারত-পাক দ্বন্দ্বের প্রভাব শুধু রাজনৈতিক স্তরেই আটকে নেই। পড়েছে আইপিএলের (IPL) উপরেও। নিরাপত্তাজনিত কারণে গতকালের পাঞ্জাব বনাম দিল্লী ম্যাচটি বন্ধ করতে হয়েছে মাঝপথে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ নিয়েই।
Read More: রোহিত সরতেই ভাগ্য খুললো এই ৩ তরুণ তুর্কি’র, সুযোগ পাবেন ওপেনার হিসেবে !!
উদ্বিগ্ন বিদেশীরা, চাইছেন দেশে ফিরতে-

গতকাল ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিলো পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লী ক্যাপিটালস (PBKS vs DC)। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো পাঞ্জাব। তাদের ইনিংসের বয়স যখন ১০ ওভার ১ বল, তখনই নিভে যায় একটি বাতিস্তম্ভের আলো। এরপর ধীরে ধীরে নেভে আরও দু’টি বাতিস্তম্ভ। ক্রিকেট মাঠে যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে বাতিস্তম্ভের আলো নেভার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তাই তেমন গা করেন নি কেউই। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায় দ্রুত। আইপিএল (IPL) চেয়ারম্যান অরুণ ধূমল ও পাঞ্জাব কিংস ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক প্রীতি জিন্টাকে দেখা যায় দর্শকদের মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিতে। পরে জানা যায় যে পাক ড্রোন হামলার আশঙ্কায় উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ব্ল্যাক আউটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই কারণেই খালি করা হয়েছে ধর্মশালার স্টেডিয়ামও। পরে ম্যাচটিই পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়।
ভারত-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সে সম্পর্কে নিশ্চিত নয় কেউই। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ যদি সম্মুখসমরে জড়ায় তার ফলাফল যে সুদূরপ্রসারী। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত আইপিএলের (IPL) বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে যুক্ত বিদেশী ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরাও। সংবাদমাধ্যম PTI সূত্রে খবর যে ইতিমধ্যেই দেশে ফেরার চেষ্টায় রয়েছেন একাধিক তারকা। আইপিএলের (IPL) বাকি ম্যাচগুলি যদি আয়োজিত হয় সেক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে বিসিসিআই ও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিকে যে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হবে সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। আইপিএলের (IPL) সমান্তরালে পাকিস্তানে চলছিলো পিএসএল (PSL)। যুদ্ধের আবহে টুর্নামেন্টের বাকি অংশ আরব আমিরশাহীতে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পিসিবি। পিএসএলের বিদেশী তারকারাও নিরাপত্তা নিয়ে একই রকম উদ্বিগ্ন বলে খবর সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
কি হবে IPL-এর ভবিষ্যৎ? সিদ্ধান্ত আজ-

২০২০ সালে কোভিড অতিমারির কারণে মরসুমের মাঝপথে স্থগিত হয়ে গিয়েছিলো আইপিএল (IPL)। পরে আরব আমিরশাহীতে আয়োজিত হয় টুর্নামেন্টের বাকি অংশ। ২০২৫-এও কি নিরাপত্তাজনিত কারণে মাঝপথে বন্ধ হবে টুর্নামেন্ট? অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে আজ বৈঠকে বসছে আইপিএলের গভর্ণিং কাউন্সিল। আজ একানা স্টেডিয়ামে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি হওয়ার কথা লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের। চেয়ারম্যান অরুণ ধূমল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, “আপাতত এই ম্যাচটি হচ্ছে। অবশ্যই পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয় সেদিকে নজর রয়েছে আমাদের।” গতকালের ম্যাচ বাতিল হওয়ার পর কার্যত একই কথা জানান বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সইকিয়াও। বলেন, “দেশের স্বার্থ মাথায় রেখে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেওয়া হবে। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। সবকিছু খতিয়ে দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”