IPL 2024: রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ‘লাস্ট বল’ থ্রিলার জিতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছিলো গুজরাত টাইটান্স। আজ ঘরের মাঠে তাদেরকেই আইপিএলের (IPL) পয়েন্ট তালিকায় নয় নম্বরে থাকা দিল্লী ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে এগিয়ে রাখছিলেন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। ষষ্ঠ স্থানে থাকা গুজরাতের সামনে আজ মরসুমের চতুর্থ জয় তুলে নিয়ে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ ছিলো। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যে দিকে এগোচ্ছে ম্যাচ, তাতে সেই সম্ভাবনা আপাতত খুবই ক্ষীণ। টসে হেরে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে আজ প্রথমে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছিলো গুজরাত। দিল্লী ক্যাপিটালস বোলারদের সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হলো তাদের।
চলতি মরসুমে ব্যাটিং বেশ দুর্বল মনে হচ্ছে গুজরাতের। ধারাবাহিক নন কেউই। অধিনায়ক শুভমানের উপরেই থাকছে প্রধান দায়িত্ব। ইনিংসের গোড়াতে তিনি আউট হতেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়লো গুজরাত টাইটান্স ব্যাটিং লাইন আপ। ঋদ্ধিমান সাহা, সাই সুদর্শন, ডেভিড মিলার থেকে শাহরুখ খান-বড় নামের অভাব ছিলো না টাইটান্স একাদশে। কিন্তু চাপের মুখে এঁটে উঠতে পারলেন না কেউই। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রিকি পন্টিং-দের ছকে দেওয়ার স্ট্র্যাটেজি অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন ঈশান্ত শর্মা, মুকেশ কুমার’রা। শেষবেলায় রুখে দাঁড়ানোর মরিয়া প্রচেষ্টা করেন রশিদ খান। আফগান যোদ্ধার ইনিংস’ও ৮৯-এর বেশী এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলো না গুজরাত টাইটান্সকে।
Read More: IPL 2024: “বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়া নিশ্চিত…” দিল্লীর বিরুদ্ধে ধরাশায়ী শুভমান, কটাক্ষের কাঁটায় বিঁধলো নেটজনতা !!
তাসের ঘরের মত ভাঙলো টপ-অর্ডার-
আজ একাদশে ফিরেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। তাঁকে সঙ্গে নিয়েই ওপেন করতে নেমেছিলেন শুভমান গিল। কিন্তু কার্যকরী হয় নি তাঁদের জুটি। জোড়া বাউন্ডারি মেরে ইনিংস শুরু করলেও বেশী দূর এগোতে পারেন নি টাইটান্স অধিনায়ক। ৬ বল খেলে ৮ রান করেই ফেরেন তিনি। ঈশান্ত শর্মা’র বলে ধরা পড়েন পৃথ্বী শ-এর হাতে। দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে মাত্র ১১ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারিয়েছিলো গুজরাত। প্রত্যাবর্তন সুখের হলো না ঋদ্ধিমানেরও। শুরু থেকেই নড়বড়ে লাগছিলো তাঁকে। ১০ বলে ২ রান করে মুকেশ কুমারের বলে বোল্ড হন তিনি। গুজরাতের দ্বিতীয় উইকেট যখন পড়ে, স্কোরবোর্ডে তখন ২৮ রান।
বড় ইনিংস খেলার দায়িত্ব এসে পড়েছিলো সাই সুদর্শনের কাঁধে। অতীতে একাধিক ম্যাচে দারুণ খেলেছেন তামিলনাড়ুর তরুণ, কিন্তু আজ পারলেন না তিনিও। রান-আউট হলেন তিনি। ৯ বলে ১২ রান করেই সমাপ্ত হয় তাঁর ইনিংস। ঋদ্ধি ফেরার পর এক রান’ও স্কোরবোর্ডে যুক্ত হওয়ার আগেই তৃতীয় উইকেট হারায় গুজরাত। চার নম্বরে নেমেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলার। দিল্লীর বোলিং বিক্রমে স্তব্ধ রইলো তাঁর ব্যাটও। ৬ বল খেললেন তিনি। ২ রানের বেশী এগোনো সম্ভব হয় নি তাঁর পক্ষে। ঈশান্ত শর্মার বলে উইকেটের পিছনে তাঁর ক্যাচ দস্তানাবন্দী করেন ঋষভ পন্থ।
লড়লেন রশিদ খান, ব্যাকফুটেই টাইটান্স’রা-
৩০ রানের মাথায় ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা গুজরাত টাইটান্স ইনিংসের হাল ধরতে ব্যর্থ হন অভিনব মনোহর, রাহুল তেওয়াটিয়ারাও। ১৪ বল খেলে মাত্র ৮ রান করে ফেরেন অভিনব মনোহর। ট্রিস্টান স্টাবসের বলে ঝড়ের গতিতে স্টাম্পিং করে তাঁকে সাজঘরের পথ দেখান দিল্লী অধিনায়ক পন্থ’ই। বোলিং বিকল্প বাড়াতেই সাধারণত ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার পদ্ধতি ব্যবহার করে গুজরাত। কিন্তু আজ গতিক সুবিধার নয় দেখে ব্যাটার শাহরুখ খানকেই ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামিয়ে দিয়েছিলেন কোচ নেহরা। ব্যর্থ তিনিও। স্টাবস-পন্থ যুগলবন্দীতে ‘গোল্ডেন ডাক’ করে ফিরলেন তিনি।
ফিনিশার হিসেবে নজর কাড়া রাহুল তেওয়াটিয়া’ও আজ চেনা ছন্দে ধরা দিলেন না আহমেদাবাদের বাইশ গজে। হরিয়ানার ক্রিকেটার আজ গুজরাত জার্সিতে সীমাবদ্ধ রইলেন ১০ রানের মধ্যেই। অক্ষর প্যাটেলের বল আছড়ে পড়ে তাঁর প্যাডে। এরপর মোহিত শর্মা’ও ফেরেন দ্রুত। স্কোরবোর্ডে তখন ৭৮। একা কুম্ভ হয়ে এরপর বেশ খানিকক্ষণ লড়াই চালিয়ে গেলেন রশিদ খান। আফগান স্পিন তারকা রাজস্থানের বিরুদ্ধেও ঝোড়ো ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছিলেন। আজও ৩১ করে মান বাঁচানোর পুরোদস্তুর চেষ্টা করলেন। কিন্তু বাকিদের ব্যর্থতায় দলকে লড়াইয়ের জায়গায় সম্ভবত পৌঁছতে পারলেন না তিনি। নির্ধারিত ২০ ওভারের ১৩ বল আগেই থামলো গুজরাতের ইনিংস।