আগামী মাসেই শুরু হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (Champions Trophy 2025) দুই বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় দলের টার্গেট থাকবে তৃতীয়বার এই শিরোপা জয় করার। ২০০২ সালে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বিজয়ী হয়েছিল ভারত। এরপর ২০১৩ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni) নেতৃত্বে ভারতীয় দল এককভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়লাভ করে। এরপর ২০১৭ সালে সুবর্ণ সুযোগ থাকলেও বিরাট কোহলির (Virat Kohli) নেতৃত্বাধীন দল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল। যদিও ভারতীয় দলের টার্গেট থাকবে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিজেদের দখলে আনতে। গত দুইবার ভারতীয় দলের পারফরমেন্স ছিল চমকপ্রদ। এবার অধিনায়ক রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) নেতৃত্বে ভারতীয় দলের প্রদর্শনের কেমন হয় তা দেখার। ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল।
রোহিত- গিল- বিরাটের উপর থাকবে গুরু দায়িত্ব
ভারতীয় দলের টপ অর্ডার হিসেবে দেখতে পাওয়া যাবে রোহিত শর্মা (Rohit Sharma), শুভমান গিল (Shubman Gill) , বিরাট কোহলিদের (Virat Kohli)। ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) কথা বলতে গেলে তিনি ওডিআই ফরমেটর অন্যতম সেরা ওপেনার। পাশাপাশি আইসিসি টুর্নামেন্টের একজন অন্যতম সেরা ওপেনার। আইসিসি টুর্নামেন্টের রোহিত শর্মার ব্যাট সবসময় কথা বলে। ২০২৩ সালে ওডিআই বিশ্বকাপে চলাকালীন দ্বিতীয় সর্বাধিক রান হাকিয়েছিলেন রোহিত। পাশাপাশি রোহিত শর্মা ২০১৩ এবং ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের জার্সিতে মোট ১০ টি ম্যাচ খেলেছেন ৫৩.৪৪ গড়ে এবং ৮২.৫০ স্ট্রাইক রেটে একটি শতরান ও চারটি অর্ধ-শতরানের বিনিময়ে ৪৮১ রান বানিয়েছেন। ভারতীয় দলের কাছে রোহিত শর্মার ওডিআই ফরম্যাটের ফর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
Read More: Champions Trophy 2025: “শ্রেয়স-রাহুল’কে প্রয়োজন…” চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড বাছলেন গাওস্কর, সওয়াল যশস্বীর হয়েও !!
শুভমান গিল (Shubman Gill) দলের হয়ে আরেকজন ওপেনার ব্যাটসম্যান হিসেবে নামতে চলেছেন। তিনি ওডিআই ফরমেটে গত দুই বছর ধরে ভারতের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত। এই ফরমেটে ২০২৩ সালে সর্বাধিক স্কোর তার ব্যাট থেকে এসেছিল শুধু তাই নয় রোহিতের সঙ্গে তার ওপেনিং পার্টনারশিপও বেশ ভালো। যে কারণে ভারতীয় দলের এই দুই ওপেনারকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি মাতাতে দেখতে পাওয়া যাবে। তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে আসবেন বিরাট কোহলি, ওডিআই ফরম্যাটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত হলে ২০২৩ সালে। ওডিআই বিশ্বকাপে সর্বাধিক স্কোর পাঠিয়েছিলেন বিরাট। আইসিসি টুর্নামেন্টে তার পারফরম্যান্স অন্যতম সেরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ২০০৯ সাল থেকে বিরাট কোহলি মোট ১৩ টি ম্যাচ খেলেছেন ৮৮. ১৬ গড়ে এবং ৯২.৩২ স্ট্রাইকরেটে ৫২৯ রান বানিয়েছেন বিরাট। পাশাপাশি এই ফরমেটে তিনি পাঁচ বার অর্ধ শতরান হাকিয়েছেন।
মিডিল অর্ডারে ফিরছে শ্রেয়স-রাহুল জুটি
মিডিল অর্ডারে দেখা যাবে শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) ও কেএল রাহুলের (KL Rahul) জুটিকে। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে দুজনকেই বেশ দুর্দান্ত ফর্ম দেখাতে দেখা গিয়েছিল। ভারতীয় দলের মিডিল অর্ডারে দুজন বিগত কয়েক বছর ধরে সেরা প্রদর্শন দেখিয়েছেন। শ্রেয়াস আইয়ারের কথা বলতে গেলে ওডিআই ফরমেটে তিনি মিডিল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে একজন তুখর প্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি বিশ্বকাপে যে ফর্ম দেখিয়েছিলেন, সেই ফর্ম আবার বজায় রাখতে চাইবেন। উইকেট রক্ষক কেএল রাহুলকে মিডিল অর্ডারে ব্যাটিং করতে দেখা যাবে। ২০২৩ বিশ্বকাপে শ্রেয়সের সঙ্গে তার বেশ পার্টনারশিপ লক্ষ করা গিয়েছিল। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে শ্রেয়স ৫৩০ এবং রাহুল ৪৫২ রান বানিয়েছিলেন। রাহুল এই দলের হয়ে উইকেট কিপিংয়ের ভূমিকা পালন করবেন।
দলের অলরাউন্ডার হিসেবে দলের লোয়ার মিডিল অডারে ব্যাটিং করতে দেখা যাবে হার্দিক পান্ডিয়াকে (Hardik Pandya)। ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপজয় অন্যতম বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। ভারতীয় দলের এই তারকা খেলোয়াড়কে ২০২৩ সালে বিশ্বকাপে মিস করেছিল টিম ইন্ডিয়া আসলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে বোলিং করতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। দলের দ্বিতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে রবীন্দ্র জাদেজাকে (Ravindra Jadeja) দেখতে পাওয়া যাবে। তিনি বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং করতে পারেন। পাশাপাশি বাঁহাতি হওয়ার সুবিধার জন্য স্কোয়াডে সরাসরি এন্ট্রি পাবেন তিনি। এর আগে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের মঞ্চে বেশ ভালো অলরাউন্ড প্রদর্শন দেখিয়েছিলেন তিনি।
‘কুলচা’ জুটি নিচ্ছেন ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি
দলের স্পিন বিভাগে এন্ট্রি নিচ্ছেন জুজুবেন্দ্র চাহাল (Yuzvendra Chahal)। এছাড়া স্পিন বিভাগে দলে থাকছেন কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav)। ভারতীয় দলের হয়ে ২ স্পিনার একসময় দুর্দান্ত বোলিং প্রদর্শন দেখাতেন। তবে লম্বা সময় ধরে তাদেরকে স্কোয়াডের অংশ হতে দেখা যায়নি। তবে আবার তাদেরকে একইসঙ্গে খেলতে দেখা যাবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মঞ্চে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ এবং ২০২৪ সালের বিশ্বকাপে দুর্দান্ত বোলিং প্রদর্শন করেছিলেন কুলদীপ যাদব। অন্যদিকে চাহালের কথা বলতে গেলে ঘরোয়া ক্রিকেট ও আইপিএল এর মঞ্চে তিনি বেশ দারুন বোলিং প্রদর্শন দেখিয়েছিলেন। যে কারণে দুই বোলারের ফর্মে থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দলের পেশ আক্রমণের দায়িত্বে থাকছেন জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। ভারতীয় পেস আক্রমণের নেতা হলেন তিনি তাকে নিয়ে বলার কিছুই নেই। বর্তমানের সেরা ক্রিকেটার বলা যায় তাকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফির মঞ্চে তার দিকে তাকিয়ে থাকবে ভারতীয় ভক্তরা। দ্বিতীয় স্পেশাল হিসেবে দলে রয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj) তিনি সুইং বোলার হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি ওডিআই ফরম্যাটে বেশ দুর্দান্ত বোলিং করেন তিনি শুধু তাই নয় সত্য সমাপ্ত হওয়া অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ভারতীয় দলের দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেট তিনি নিয়েছেন। দলে ফিরছেন মোহাম্মদ শামী আইসিসি ইভেন্ট এর একজন সফল বোলার হলেন তিনি ২০২৩ বিশ্বকাপে সর্বাধিক উইকেট ছিল তার নামে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উপর মোহাম্মদ শামির উপর নজর থাকবে ভক্তদের। দলের একমাত্র বাঁহাতি পেশার হিসেবে থাকছেন অর্ষদীপ সিং (Arshdeep Singh)। তিনি ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতের সবথেকে সফল বোলার ছিলেন।
রিজার্ভ প্লেয়ারে রাখা হয়েছে সূর্যকুমারকে
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতকে কমপক্ষে তিনটি এবং সব থেকে বেশি পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হবে। তার জন্য ভারতীয় দলে বেশ কিছু রিজার্ভ খেলোয়াড় কেও দেখতে পাওয়া যাবে। তালিকায় রয়েছেন সূর্য কুমার যাদব (Suryakumar Yadav) শার্দূল ঠাকুর (Shardul Thakur) এবং ওয়াশিংটন সুন্দর (Washington Sundar)। সূর্য কুমারের একজন বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে আহামরি প্রদর্শন দেখাতে পারেননি তিনি। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তিনি যেভাবে ব্যাটিং করেন তাতে ভারতীয় দলের কাছে তাকে ‘ফ্লোটার’ ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যবহার করার একটি সুবর্ণ সুযোগ থাকে। যদি দলের কোন খেলোয়াড় চোট পেয়ে যান তাহলে সূর্যকুমার হতে পারেন তাদের অন্যতম পরিবর্তন। দলে রাখা হবে শার্দুল ঠাকুরকে। যিনি একজন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে পরিচিত। কঠিন সময় বোলিং করতে এসে উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি। পাশাপাশি তার ব্যাট হাতেও দক্ষতা বেশ ভালই। দলের অলরাউন্ডার বিকল্প হিসেবে রয়েছে ওয়াশিংটন সুন্দর।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin) অবসর নেওয়ার পর থেকে ভারতীয় দলের স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে সুন্দরের জায়গা প্রায় পাকা। বিশেষ করে ভারতের মাটিতে তার বোলিং ও ব্যাটিং পারফরমেন্সে মুগ্ধ হয়ে নির্বাচকরা তাকে রিজার্ভ খেলোয়াড় হিসেবে নিয়ে যেতে পারে। যদিও দলে কোন ব্যাকআপ উইকেট কিপার রাখা হয়নি তবে প্রয়োজন পড়লে ভারতীয় দলে আবার ফিরতে পারেন ঈশান কিষান অন্যদিকে বুমরাহ এবং শ্রেয়াস আইয়ারের ফিটনেস এর উপরে নজর রয়েছে বিসিসিআইয়ের তারা যদি সুস্থ না হয়ে ওঠেন তাহলে তাদের বিকল্প খেলোয়াড়কে খুঁজতে পারে বিসিসিআই।
CHAT GPT অনুযায়ী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ভারতীয় স্কোয়াড
রোহিত শর্মা (C), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার, কেএল রাহুল (WK), হার্দিক পান্ডিয়া (VC), রবীন্দ্র জাদেজা, জুজুভেন্দ্র চাহাল, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ, জসপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি, অর্ষদীপ সিংহ।
রিজার্ভ খেলোয়াড় – সূর্যকুমার যাদব, শার্দূল ঠাকুর, ওয়াসিংটন সুন্দর
ব্যাক আপ উইকেট কিপার- ঈশান কিষান