Asia Cup 2025: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অনবদ্য একটি প্রদর্শন দেখতে পাওয়া গেল। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের ৬ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নিলো ভারতীয় দল। প্রথমে ব্যাটিং করতে এসে ৫ উইকেটে ১৭৪ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল পাকিস্তান। রান তাড়া করতে এসে ৭ বল বাঁকি থাকতেই জয় ছিনিয়ে নেয় ভারত। ভারতের এই জয়ের সাথে সাথে এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) সুপার ফোরের গ্রুপে শীর্ষে উঠে আসলো।
ওপেনিং জুটিতে বদল ঘটায় পাকিস্তান
খেলার শুরুতে আবার একবার প্রথম ওভারে উইকেট নেওয়ার সম্ভাবনা ছিল ভারতের। তৃতীয় বলেই বড় শট খেলতে গিয়ে ডিপ থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ তুলে দেন শাহিবজাদা ফারহান। তবে অভিষেক শর্মা ক্যাচটি ফেলে দেন। প্রথম ওভার থেকে ৬ উইকেট সংগ্রহ করেছিল পাকিস্তান। তবে দ্বিতীয় ওভারে জসপ্রীত বুমরাহের বলে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। দ্বিতীয় ওভারেই বুমরাহের বিরুদ্ধে আগ্রাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ফখর।
Read More: Asia Cup 2025: অর্ধশতক হাতছাড়া শুভমান গিলের, ধুন্ধুমার ইনিংসে দাঁড়ি টানলেন ফাহিম আশরাফ !!
শুরুতেই উইকেট হারায় পাকিস্তান

দ্বিতীয় ওভারে রান আসার পর তৃতীয় ওভারেও আগ্রাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ফখর। তবে, হার্দিক পান্ডিয়ার স্লোয়ার বল বুঝতে না পেরে উইকেট হারিয়ে ফেলেন ফখর। ৯ বলে ৩টি চারের বিনিময়ে ১৫ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। পরে, ক্রিজে এসে চার দিয়ে খাতা খোলেন সাইম আয়ুব।
শুরুতেই জীবনদান পায় পাকিস্তান
পাওয়ার প্লের ভিতর স্পিন আক্রমন নিয়ে আসেন ক্যাপ্টেন স্কাই। বরুণ চক্রবর্তীর বল বুঝতে না পেরে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন সাইম আয়ুব। তবে, সহজ ক্যাচ ফেলে দেন কুলদীপ যাদব। পাওয়ার প্লের ভিতর দুটি জীবন দান পেয়েছিল পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা।
আগ্রাসী ব্যাটিং করেন ফারহান

পাওয়ার প্লের ভিতর আগ্রাসী ব্যাটিং দেখান ফারহান ও আয়ুব। পাওয়ার প্লেতে ৫৫ রান বানিয়ে ফেলেছিল। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বুমরাহকে প্রহার করেন ফারহান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ফেলেন বুমরাহ। পাওয়ার প্লে শেষে স্পিনারদের ব্যাবহার করতে থাকেন স্কাই। কুলদীপের প্রথম ওভারটা দেখে খেললেও বরুণকে আক্রমন করে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা। বরুণের ওভারেও ক্যাচ ফেলেন অভিষেক।
প্রথম ১০ ওভার ছিল পাকিস্তানের নামে

কুলদীপ যাদবের ওভারে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা চাপে ফেলার চেষ্টা করেন। কুলদীপকে ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান আয়ুব। এরপর চতুর্থ বলে বড় একটি ছক্কা হাঁকান ফারহান। এমনকি, অক্ষরের ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি সম্পূর্ণ করেন ফারহান। ১০ ওভারের মধ্যে পাকিস্তান ১ উইকেটে ৯১ রান বানিয়ে ফেলেছিল।
দুবের বোলিংয়ে ম্যাচে ফেরে ভারত
১১ তম ওভারে অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব শিবম দুবেকে বোলিংয়ে আনেন। দুবে ভারতকে দ্বিতীয় সফলতা এনে দেন। সাইম আয়ুব পুল করতে গিয়ে ধরা দেন অভিষেক শর্মার কাছে। দৌড়ে এসে অসাধারণ একটি ক্যাচ ধরে নেন অভিষেক। ১৭ বলে ২১ রানে উইকেট হারান সাইম আয়ুব। আয়ুব আউট হতে অনেকটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল পাকিস্তান।
ফারহান আউট হতেই সমস্যায় পড়ে পাকিস্তান

দুবের ওভারে ম্যাচ ভারতের দিকে ঘুরে যায়। কুলদীপ যাদবের বলে উইকেট হারিয়ে ফেলেন হুসেন তালাত। কুলদীপকে সুইপ খেলতে গিয়ে ১১ বলে ১০ রান বানিয়ে আউট হন তিনি। এরপর পাকিস্তানের রানের গতি আরও কমতে থাকে। দুবে তাঁর দ্বিতীয় ওভারে ফারহানকে আউট করেন। তিনি, ৪৫ বলে ৫৮ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
১৭১ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ব্যাটিং
শেষের দিকে দলের রান কিছুটা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালান মোহম্মদ নওয়াজ, ক্যাপ্টেন সালমান আঘা ও ফাহিম আশরাফ। পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭১ রান বানাতে সক্ষম হয়। দুবাইয়ের পিচে এই রান বানানোর মুলে ছিল ভারতের খারাপ ফিল্ডিং। ভারত এই ম্যাচে মোট ৪টি ক্যাচ ফেলেছে।
ভালো শুরু করে ভারত

হাইভোল্টেজ ম্যাচে রান তাড়া করতে এসে ভারতের শুরুটা বেশ ভালো হয়েছিল। শাহীন আফ্রিদির প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ইনিংসের সূচনা করেন অভিষেক। অন্যদিকে শুভমান গিলও আজ শান্ত ছিলেন না। তিনিও তালে তাল মিলিয়ে রান বানাতে থাকেন। পাওয়ার প্লের মধ্যেই ভারত কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৯ রান বানিয়ে ফেলেছিল।
অভিষেক-গিল ঝরে বিধ্বস্ত পাকিস্তান

পাওয়ার প্লে শেষ হলেও ভারতীয় দলের পরক্রামন বন্ধ হয়নি। শুভমান গিল ও অভিষেক শর্মার মধ্যে শতরানের একটি পার্টনারশিপ গড়ে উঠেছিল। ভারতীয় দলের ব্যাটিং দেখে হ্যারিস রউফ ও শাহীন আফ্রিদি মেজাজ হারিয়ে দুই ব্যাটসম্যানকে স্লেজ করতে থাকে। তবে তাতে কিছুই প্রভাব পড়েনি। শুভমান ও অভিষেকের মধ্যে ১০ ওভারের মধ্যে ১০৫ রানের পার্টনারশিপ গড়ে উঠেছিল।
দ্রুত ২ উইকেট হারায় ভারত
দশম ওভারের শেষ বলে ফাহিম আশরাফের বলে উইকেট হারিয়ে ফেলেন শুভমান গিল। ২৮ বলে ৪৭ রানের একটি অনবদ্য ইনিংস খেলে আউট হন শুভমান। শুভমান আউট হতে ক্রিজে আসেন ক্যাপ্টেন শুভমান গিল। ৩ বলে কোনো রান না বানিয়েই প্যাভিলিয়নে ফেরেন স্কাই। দুই উইকেট হারালেও কমেনি ভারতের দাপট।
অনবদ্য ব্যাটিং করে সাজঘরে ফেরেন অভিষেক

মারকুটে ব্যাটিং অব্যহত রেখেছিলেন অভিষেক। তবে অবরার আহমেদের বলে ৩৯ বলে ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৭৪ রানের একটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন অভিষেক। অন্যদিকে, অভিষেক আউট হলে ব্যাটিং করতে আসেন সঞ্জু স্যামসন। তাঁকে পাকিস্তানি বোলিং লাইন আপের সমানে সমস্যায় পড়তে দেখা গিয়েছিল। ১৭ বলে ১৩ রান বানিয়ে সঞ্জু রউফের শিকার হন।
৬ উইকেটে ম্যাচ জিতলো ভারত
ব্যাট হাতে তিলক ভার্মা ১৯ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলেন এবং ৭ বলে ৭ রান বানান হার্দিক পান্ডিয়া। যার জেরেই ভারত ৭ বল বাঁকি থাকতে হয় সুনিশ্চিত করে নেয়।