এশিয়া কাপ ২০২৫’এর (Asia Cup 2025) মেগা ফাইনালে দুর্দান্ত প্রদর্শন দেখিয়ে নবম বারের জন্য শিরোপা জয় করে নিলো টিম ইন্ডিয়া। ভারতীয় দল এবারের এশিয়া কাপের মঞ্চে এক দুরন্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। আজকের মেগা ফাইনালের কথা বলতে গেলে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে এসে দুর্দান্ত সূচনা করেও ১৪৬ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল পাকিস্তান। যে রান তাড়া করতে এসে, ২ বল বাঁকি থাকতে ও ৬ উইকেট হাতে রেখে জয় সুনিশ্চিত করে নেয় টিম ইন্ডিয়া।
হার্দিকের অনুপস্থিতিতে ভালো শুরু করেন দুবে
হার্দিক পান্ডিয়া আজকের ম্যাচ না খেলায় প্রথম ওভারে বোলিং করতে আসেন শিবম দুবে। প্রথম ওভারটি বেশ বুদ্ধিমত্তার সাথে বোলিং করেছিলেন দুবে। দ্বিতীয় ওভারে বুমরাহও চাপে রেখেছিলেন পাকিস্তানি দুই ওপেনারকে। তবে তৃতীয় ওভার থেকে ছন্দে দেখা গিয়েছিল পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের।
আগ্রাসী হয়ে ওঠেন দুই ওপেনার

বুমরাহের দ্বিতীয় ওভারে ১৩ রান তোলে দুজনে এবং শেষ দুই ওভারের জন্য স্পিনারদের নিয়ে আনেন স্কাই। পাওয়ার প্লের মধ্যে কোনো উইকেট হারায়নি এবার পাকিস্তান। কোনো উইকেট না হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে ৪৫ রান বানিয়েছিল পাকিস্তানি দুই ওপেনার।
অর্ধশতরান হাঁকান ফারহান
পাওয়ার প্লে শেষ হলেও আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে যায় ফখর ও ফারহান। নবম ওভারে অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন ফারহান। সুপার ফোরের ম্যাচেও অর্ধশতরান হাঁকিয়েছিলেন তিনি। আজকেও সেই ধারা বজায় রাখলেন। ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করলেন ফারহান। অন্যদিকে তাকে বেশ ভালো ভাবেই সমর্থন করছিলেন ফখর জমান।
প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান
দশম ওভারে বরুণ চক্রবর্তীকে ফিরিয়ে আনেন সূর্যকুমার। বরুনের উপর আগ্রাসী ব্যাটিং করতে চেয়েছিলেন সাহেবজাদা ফারহান। তবে ৩৮ বল খেলে তাকে ৫৮ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়েছে। ৮৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় পাকস্তান। এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন সাইম আয়ুব। ফখর জামানের সঙ্গে বেশ ভালো ব্যাটিং করেন আয়ুব।
ব্যাক টু ব্যাক উইকেট হারায় পাকিস্তান
স্পিন আক্রমণের ওপরেই ভরসা ছিল স্কাইয়ের। ১৩ তম ওভারে কুলদীপকে ফিরিয়ে আনেন স্কাই। ওভারের পঞ্চম বলে সাইম আয়ুবকে প্যাভিলিয়নে ফেরান কুলদীপ যাদব। ১১ বলে ১৪ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন আয়ুব। পরের ওভারেই অক্ষর প্যাটেলের বোলিংয়ে উইকেট হারিয়ে ফেলেন মোহম্মদ হ্যারিস। খাতা না খুলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
তাসের ঘরের মতন ভেঙে পড়লো পাকিস্তানের ব্যাটিং

১৫ তম ওভারে বরুণ চক্রবর্তীর বলে উইকেট হারিয়ে ফেলেন ফখর জামান। ৩৫ বলে ৪৬ রান বানিয়ে উইকেট হারান ফখর। ফখর যখন আউট হয় তখন পাকিস্তানের স্কোর ছিল ১২৬। ফখর আউট হওয়ার পর একের পর এক উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
তাসের ঘরের মতন ভেঙে পড়ে ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং

ফখর আউট হওয়ার পর তাসের ঘরের মতন ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং। অক্ষর, কুলদীপ যাদব এবং বরুণ চক্রবর্তী পাকিস্তানি ব্যাটিং অর্ডারকে তছনছ করে দেন। পাকিস্তান দল ২০ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে। ভারতের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন কুলদীপ যাদব, ২টি করে উইকেট পেয়েছেন অক্ষর প্যাটেল, জসপ্রীত বুমরাহ ও জসপ্রীত বুমরাহ।
শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের
জবাবে ব্যাটিংয়ে এসে শুরুতেই ব্যাটিং করতে এসে ভারতের শুরুটা একেবারে ভালো হয়নি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে উইকেট হারিয়ে ফেলেন অভিষেক। ৬ বলে ৫ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় অভিষেককে। ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদবও ৫ বলে ১ রান বানিয়ে আউট হয়ে যান।
পাওয়ার প্লেতে নামে ব্যাটিং ধস

ভারতীয় ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব ছিল শুভমান গিলের কাঁধে। ব্যাট হাতে শুভমান ১০ বলে ১২ হাঁকিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। পাওয়ার প্লের ভিতরেই ভারত ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে। পাওয়ার প্লেতে ভারতের সংগ্রহ ছিল মাত্র ৩৬ রান। ভারত এই পরিস্থিতিতে খেলায় অনেকটা পিছিয়ে পরে।
সঞ্জু তিলক জুটিতে ম্যাচে ফেরে ভারত
কঠিন অবস্থায় তিলক ভার্মা ও সঞ্জু স্যামসনের পার্টনারশিপ বেশ দুর্দান্ত ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। দুজনের মধ্যে ৫০ বলে ৫৭ রানের একটি পার্টনারশিপ গড়ে উঠেছিল। ২১ বলে ২৪ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় সঞ্জু স্যামসনকে।
ম্যাচে অক্সিজেনের যোগান দেন দুবে

সঞ্জু আউট হতে ব্যাটিংয়ে আসেন শিবম দুবে। দুবে এক অসাধারণ ব্যাটিং করেন। তিলকের সঙ্গে দুবের ভারতীয় ইনিংসের সর্বাধিক ৪০ বলে ৬০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে উঠেছিল। দুজনের দুরন্ত ব্যাটিং প্রদর্শনীতে ভারতের জয়টা অনেক সহজ হয়ে ওঠে। ভারতীয় দলের হয়ে ৫৩ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিলক এবং ১ বলে ৪ রানে অপরাজিত থেকে যান রিংকু। ভারত এই নিয়ে নবম বারের জন্য এই শিরোপা জয় করলো।