এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) সুপার ফোরের মঞ্চে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং বাংলাদেশ (IND vs BAN)। রুদ্ধশ্বাস এই ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে এসে ভারতীয় দল ৬ উইকেটে ১৬৮ রান বানিয়েছিল। রান তাড়া করতে এসে, ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ভারতীয় দল ৪১ রানে জয় ছিনিয়ে নিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে উত্তীর্ণ হলো।
শুরুতে সমস্যায় পড়েছিল ভারতীয় দল
বাংলাদেশি বোলারদের বিরুদ্ধে শুরুতেই বেশ সমস্যায় দেখতে পাওয়া গিয়েছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। প্রথম ৩ ওভারে কেবলমাত্র ১৭ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল ভারত। তানজিদ শাকিব এবং নাসুম আহমেদ বেশ ভালো জায়গায় বোলিং করেছিলেন শুভমান ও অভিষেককে।
অসাধারণ সূচনা দেন শুভমান অভিষেক

চতুর্থ ওভার থেকে ছন্দে ফেরেন দুজনেই। শুভমান খাতা খুলতে শুরু করেন। চতুর্থ ওভার থেকে ২১ রান তোলেন দুজন মিলে। এরপর, পঞ্চম ওভারে আবার ১৭ রান তোলেন এবং পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আবার ১৭ রান তোলেন দুজনে মিলে। পাওয়ার প্লের মধ্যে ভারত ৭২ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল।
পরস্পর দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত
পাওয়ার প্লে শেষ হতেই ১৯ বলে ২৯ রান বানিয়ে আউট হয়েছিলেন শুভমান। রিশাদ হোসেনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেট হারিয়ে ফেলেন গিল। গিল আউট হতেই ব্যাটিংয়ে আসেন শিবম দুবে। তবে, দুবেও ৩ বলে ২ রান বানিয়ে রিশাদ হোসেনের বলে উইকেট হারান।
শতরান হাতছাড়া হয় অভিষেকের

অভিষেক শর্মা আবার একবার স্বপ্নের ছন্দ বিজয় রেখেছিলেন। আজকের ম্যাচেও অর্ধশতরান হাঁকিয়েছেন তিনি। ৩৭ বলে ৬টি ছক্কা ও ৫টি চারে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন অভিষেক। সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে ১৮ বলে ২৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে তবে ভুল বোঝাবুঝির কারণে উইকেট হারিয়ে ফেলেন অভিষেক।
অভিষেক আউট হতেই নেমে আসে ব্যাটিং ধস
অভিষেক শর্মা আউট হওয়ার সাথে তাসের ঘরের মতন ভেঙে পড়ে ভারতীয় দলের ব্যাটিং। ১১ বলে ৫ রান বানিয়ে উইকেট হারিয়ে ফেলেন ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদব। ৬.২ ওভারে ভারত যেখানে ৭৭ রান বানিয়েছিল সেখানে ১১৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে ১২ ওভার শেষে। ভারতের হয়ে আজ ব্যাটিং অর্ডারে বেশ পরিবর্তন দেখা গিয়েছিল। তিলক ভার্মা ব্যাটিংয়ে আসেন ছয় নম্বরে। তিনিও বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে যান। ৭ বলে ৫ রান বানিয়ে উইকেট হারিয়ে ফেলেন তিলক।
সম্মানজনক স্কোর বানায় ভারত
শেষের দিকে হার্দিক পান্ডিয়ার সাথে অক্ষর প্যাটেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে উঠেছিল। ৩৩ বলে ৩৯ রানের জুটি গড়েছিলেন দুজনে। যেখানে হার্দিক ২৯ বলে ৩৮ রান বানান এবং অক্ষর ১৫ বলে ১০ রান বানাতে সক্ষম হয়। ভারত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে হারিয়ে ১৬৮ রান।
ভালো শুরু করে বাংলাদেশ

রান তাড়া করতে এসে শুরুতেই তানজিদ তামিম ৩ বলে ১ রান বানিয়ে উইকেট হারিয়ে ফেলেন। শুরুতেই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপের মুখে পড়েছিল বাংলাদেশ। তবে, পাওয়ার প্লে সামাল দিয়েছিলেন সাইফ হাসান ও পারভেজ হোসেন। দুজন মিলে পাওয়ার প্লেতে ৪৪ রান বানিয়েছিলেন।
উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ
পাওয়ার প্লে শেষ হতেই কুলদীপ যাদবের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে উইকেট হারান ইমন। ১৯ বলে ২১ রান বানিয়ে আউট হন তিনি। এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন ইনফর্ম তৌহিদ হৃদয়। ১০ বলে ৭ রান বানিয়ে তিনি অক্ষর প্যাটেলের বলে উইকেট হারিয়ে ফেলেন।
একের পর এক উইকেট হারায় বাংলাদেশ

এক সময় ভালো ছন্দে থাকা বাংলাদেশ দল ১২ তম ওভারে অর্ধেক উইকেট হারিয়ে ফেলে। বরুণ চক্রবর্তীর বলে খাতা না খুলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন শামীম হোসেন এরপর ভুল বোঝাবুঝিতে পাঁচ বলে চার রান বানিয়ে উইকেট হারিয়ে ফেলেন বাংলাদেশি দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জাকের আলি অনিক।
একা লড়াই চালান সাইফ
তবে বাংলাদেশ দলের ওপেনার ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান একা হাতেই দলের হাল ধরেছিলেন। ভারতীয় স্পিন আক্রমণের বিরুদ্ধে বড় বড় শট হাঁকাচ্ছিলেন তিনি। পারভেজ হাসান ইমন এবং সাইফ হাসান ব্যতীত কেউই দুই সংখ্যার স্কোর খাড়া করতে পারেনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। সাইফ দলের হয়ে দুর্দান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে ছিলেন শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে ৫১ বলে তিনটি চার এবং পাঁচটি ছক্কায় ৬৯ রানের একটি লড়াকু ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। তবে ১৮ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বুমরাহকে উড়িয়ে মারার প্রচেষ্টায় বাউন্ডারির ধারে নিজের উইকেট হারিয়ে ফেলেন তিনি আর তিনি আউট হতেই বাংলাদেশের পক্ষে এই ম্যাচে আর ফিরে আসার কোন সুযোগ ছিল না।
৪১ রানে ম্যাচ জিতলো ভারত

যদিও শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়েছে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে বোলিং করতে আসেন তিলক ভার্মা। দলের শেষ ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজুর রহমানকে আউট করেন তিলক মাত্র ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং। ভারতীয় দল ৪১ রানের একটি বড় জয় ছিনিয়ে নেওয়ার সাথে সাথে এশিয়া কাপ ২০২৫ এর মেগা ফাইনালের টিকিট কনফার্ম করে ফেলল।