IND vs NZ: একদিনের সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ফলে জিতেছিলো ভারত। কিউইদের হোয়াইটওয়াশ করে যে আত্মবিশ্বাস জমা হয়েছিলো ভারতের ঝুলিতে তা নিমেষে হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছিলো ফর্ম্যাট বদলাতেই। একদিনের ক্রিকেটে প্রতিপক্ষকে খড়কুটোর মত উড়িয়ে দেওয়ার পর টি-২০ তে মুখ থুবড়ে পড়েছিলো ভারতীয় দল। রাঁচির মাঠে নিউজিল্যান্ডের স্পিনারদের বিপক্ষে হিমশিম খেতে দেখা গিয়েছিলো ভারতীয় ব্যাটারদের। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ডেভন কনওয়ে, ড্যারিল মিচেলদের বড় ইনিংসের সুবাদে ১৭৬ রান তুলেছিলো নিউজিল্যান্ড। জবাবে সূর্যকুমার এবং ওয়াশিংটন সুন্দরের লড়াই সত্ত্বেও ১৫৫’র বেশী এগোতে পারে নি ‘মেন ইন ব্লু।’ রাঁচির মাঠে ম্যাচ হেরে চাপের মুখে হার্দিকবাহিনী। তিন ম্যাচের সিরিজে আর একটি ম্যাচ হারলেই সিরিজ হারের লজ্জা জুটবে কপালে। সিরিজ হার আটকাতে আজকের ম্যাচ জিততেই হবে দল’কে। তাই লক্ষ্ণৌতে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা গেলো ভারতীয় দল’কে। টসে হেরে প্রথমে বোলিং করতে হলো আজ ‘টিম ইন্ডিয়া’কে। লক্ষ্ণৌর পিচে স্পিনকে অস্ত্র করেই নিউজিল্যান্ড’কে আজ ব্যাকফুটে ঠেলে দিলো ভারত।
কিউই ব্যাটারদের আজ সুযোগই দিলো না ভারত-

গত ম্যাচে কিউই ওপেনাররা ভারতকে সমস্যায় ফেললেও আজ শুরু থেকেই বল হাতে আক্রমণাত্মক টিম ইন্ডিয়া। আজকেও নতুন বল হাতে ইনিংস শুরু করেছিলেন অধিনায়ক হার্দিক (Hardik Pandya)। যদিও গত ম্যাচের পর আজও পেস তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারলো না লক্ষ্ণৌর পিচে। দ্বিতীয় ওভারে অর্শদীপের হাতে বল তুলে না দিয়ে ওয়াশিংটন’কে (Washington Sundar) আনেন ক্যাপ্টেন। চতুর্থ ওভারে বল করতে আসেন আজকের ম্যাচে দলে ফেরা যুজবেন্দ্র চাহাল। নিজের প্রথম ওভারটি উইকেট মেডেন দেন চাহাল (Yuzvendra Chahal)। রিভার্স স্যুইপ মারতে গিয়ে বোল্ড হলেন ফিন অ্যালেন (Finn Allen)। একই সাথে ৯১তম উইকেট নিয়ে ভুবনেশ্বর কুমারকে সরিয়ে ভারতের সফলতম টি-২০ বোলার হলেন তিনি। ডেভন কনওয়েকে (Devon Conway) আউট করে বড় ঝটকা দিলেন ওয়াশিংটন সুন্দরও। দুই ওপেনারকে হারানোর পর নিউজিল্যান্ডের ইনিংস’কে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন ড্যারিল মিচেল। তাঁকে ফেরালেন অলরাউন্ডার দীপক হুডা (Deepak Hooda)। গত ম্যাচে বল হাতে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন অধিনায়ক স্যান্টনার। আজ ব্যাট হাতে শেষ অবদি লড়াই করলেন তিনি। ২৩ বলে ২০ রান করলেন তিনি। স্পিনারদের সাজানো মঞ্চে শেষলগ্নে সাফল্য পেলেন অর্শদীপ সিং’ও (Arshdeep Singh)। লকি ফার্গুসন এবং ঈশ সোধিকে ফিরিয়ে দিলেন তিনি। গত ম্যাচে নো-বল করে ভিলেন হয়েছিলেন তিনি। আজ ২ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে নিলেন ২ উইকেট। ভারতের নিয়ন্ত্রিত বোলিং-এর ফলে ৯৯ রানে থামলো নিউজিল্যান্ড ইনিংস।
স্পিন আক্রমণেই লুকিয়ে জয়ের চাবিকাঠি-

রাঁচিতে টার্নিং পিচে সমস্যায় পড়তে হয়েছিলো ভারত’কে। মাইকেল ব্রেসওয়েল (Micheal Bracewell), ঈশ সোধি (Ish Sodhi), মিচেল স্যান্টনারদের (Mitchell Santner) খেলতে বারবার ব্যর্থ হয়েছিলেন ভারতের ব্যাটিং-এর রথী-মহারথীরা। রাঁচির মত লক্ষ্ণৌর পিচেও যথেষ্ঠ টার্ন রয়েছে। লাল মাটির পিচ হওয়ায় বল উইকেটে পড়ে খানিক থেমে ব্যাটে আসছে। এখানেও সহজ হবে না ব্যাটিং। গত ম্যাচের ভুলত্রুটি শুধরে সতর্কতা অবলম্বন না করলে মুশকিলে পড়তে পারেন শুভমান গিল, ঈশান কিষণ’রাও। আজকের ম্যাচ জিততে হলে তুরুপের তাস যে স্পিন তা প্রথম ইনিংস থেকেই পরিষ্কার। সোধি-ব্রেসওয়েল-স্যান্টনার ত্রয়ীর কাউকে পাওয়ার প্লে’তেই বল হাতে দেখলে তাই অবাক হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না। এই ম্যাচে ১০০ রানের লক্ষ্যমাত্রা খাতায় কলমে বিশেষ কঠিন কিছু বলে মনে না হলেও ব্যাটিং-এর সময় কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হতে পারে ভারত’কে। নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য হবে শুরুতেই উইকেট তুলে নেওয়ার। তবে যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে আজ বোলিং করেছে ভারতীয় দল, তাতে প্রথম ইনিংস শেষে বলতেই হয় যে সিরিজে সমতা ফেরানোর দিকে এক পা এগিয়ে রেখেছে তারাই।