IND vs NZ: নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-২০ ম্যাচটিতে ২১ রানে হেরেছিলো ভারতীয় দল। কনওয়ে, মিচেলদের অর্ধশতরানের সুবাদে ১৭৬ রান করেছিলো নিউজিল্যান্ড দল। জবাবে ১৫৫ রানেই থেমেছিলো ভারতীয় ইনিংস। তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচটি হারায় দ্বিতীয় টি-২০তে মাঠে নামার আগে চাপে ছিলো ভারত। সিরিজে টিকে থাকতে গেলে জিততেই হত দ্বিতীয় ম্যাচ। না হলে দেশের মাটিতে সিরিজ খোয়ানোর লজ্জা জুটত ‘টিম ইন্ডিয়া’র কপালে। রাঁচিতে ভারতের জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো ব্ল্যাক ক্যাপস দলের স্পিন আক্রমণ। দ্বিতীয় ম্যাচের পিচে টার্ণ ছিলো আরও ভয়ঙ্কর। জয়ের পথে কাঁটা ছড়িয়ে দিতে উপস্থিত ছিলেন স্যান্টনার, সোধি, ব্রেসওয়েলরাও। গত ম্যাচের অন্ধকার কাটিয়ে অবশ্য আলোয় ফিরলো ভারতীয় দল। প্রথমে ব্যাট করে ভারতীয় বোলারদের দাপটে ৯৯ এর বেশী তুলতে পারে নি কিউইরা। স্বল্প রানের পুঁজি সঙ্গী করেও লড়ে গেলো নিউজিল্যান্ড। ভারতীয় ইনিংসকে টেনে নিয়ে গেলো অন্তিম ওভার অব্দি। শেষমেশ সূর্যকুমার যাদব এবং হার্দিক পান্ডিয়ার বদান্যতায় ম্যাচ জিতে নেয় ‘টিম ইন্ডিয়া।’ ভারত ম্যাচ জিতলেও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে লক্ষ্ণৌর পিচ। ম্যাচ শেষে অসন্তোষ গোপন করেন নি অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। এবার পিচ’কে নিশানা করলেন দলের বোলিং কোচ পরশ মামরে’ও (Paras Mhambrey)।
স্পিনের ফাঁসে নাজেহাল ব্যাটাররা, ছক্কা চোখেই দেখলো না লক্ষ্ণৌ-

টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার (Mitchell Santner)। দ্বিতীয় ওভারেই স্পিন আক্রমণের দিকে ঝোঁকেন ভারত অধিনায়ক হার্দিক (Hardik Pandya)। চতুর্থ ওভারে নিয়ে আসেন চাহাল’কে। উইকেটে যে টার্ণ রয়েছে তা বোঝা গিয়েছিলো শুরু থেকেই। যত ম্যাচে সময় গড়ালো ঘূর্ণি’র জালে দিশাহারা লাগলো ব্যাটারদের। নিজের প্রথম ওভারে ফিন অ্যালেন’কে আউট করেন চাহাল। সফল ভারতের বাকি তিন স্পিনার’ও। ওয়াশিংটন, কুলদীপ এবং দীপক হুডা (Deepak Hooda) একটি করে উইকেট নেয়। ইনিংসের শেষলগ্নে দুই ওভার হাত ঘুরিয়ে ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট পান অর্শদীপ সিং (Arshdeep Singh)। ভারত নির্ধারিত ২০ ওভারের মধ্যে ১৪ ওভার ব্যবহার করলো স্পিনারদের। নিউজিল্যান্ড মাত্র ৯৯ রানের বেশী করতে পারে নি ২০ ওভারে। ১০০ রানের আপাত নিরীহ লক্ষ্যমাত্রা হলেও জয় যে সহজে আসবে না তা নিশ্চিত ছিলো। আর সত্যি হলো তাই। ভারতের বিপক্ষেও স্পিন অস্ত্র শানিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে কিউইরা। ভারতের ইনিংসের ১৭ ওভার স্পিনারদের ব্যবহার করলেন স্যান্টনার। প্রথমেই শুভমান গিল’কে (Shubman Gill) আউট করেন ব্রেসওয়েল। মাত্র ১১ রান করলেন শুভমান। আউট হন রাহুল ত্রিপাঠীও (Rahul Tripathi)। রান-আউটের শিকার হন ওয়াশিংটন সুন্দর এবং ঈশান কিষণ। শেষ ওভার অব্দি ম্যাচ গড়ায়। নিজের মারমুখী অবতার সরিয়ে রেখে ধীরস্থির ইনিংস খেলে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। সঙ্গত করেন হার্দিক পান্ডিয়াও (Hardik Pandya)। ম্যাচে ৩৯.৫ ওভার খেলা হলেও একটিও ছক্কা দেখা গেলো না গতকাল।
সহজ ছিলো না পিচ, বলছেন বোলিং কোচ –

গতকালের ম্যাচে উমরান মালিক’কে বাইরে রেখে অতিরিক্ত স্পিনার হিসেবে যুজবেন্দ্র চাহাল’কে (Yuzvendra Chahal) খেলিয়েছিলো ভারতীয় দল। সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ‘টিম ইন্ডিয়া’র বোলিং কোচ পরশ মামরে (Paras Mhambrey) বলেছেন, “মনে হয়েছিলো একজন অতিরিক্ত স্পিনার দরকার হবে। সেই কারণেই চাহাল’কে খেলানো হয়েছে এদিন। ও দারুণ বোলিং’ও করেছে।” দলের বাকি বোলারদেরও প্রশংসা করেছেন তিনি। বলেন, “এই পিচে ১২০ বা ১৩০ উঠে গেলে সমস্যায় পড়তে হত আমাদের। সেখানে প্রতিপক্ষকে ৯৯ রানে বেঁধে রাখা কম কৃতিত্বের নয়।” তবে বিতর্কের কেন্দ্রে এই মাঠের উইকেট। লক্ষ্ণৌ’র বাইশ গজ নিয়ে ম্যাচ শেষে অধিনায়ক হার্দিক (Hardik Pandya) জানিয়েছিলেন, “টি-২০’র জন্য এই পিচ একদমই আদর্শ নয়। আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ায় কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু এই পিচ কুড়ি-বিশের ক্রিকেটের পরিপন্থী।” পিচ বিতর্কে মুখ খুলেছেন বোলিং কোচ’ও। কেনো এমন উইকেট তৈরি হয়েছে তার কোনো ব্যাখ্যা খ্যঁজে পাচ্ছেন না তিনি। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “একমাত্র কিউরেটর জবাব দিতে পারবেন পিচের চরিত্র নিয়ে। দেখে মনে হয়েছিলো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছি আমরা। ভাগ্য সহায় ছিলো বলেই খেলায় আগাগোড়া নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছিলাম আমরা।” লক্ষ্ণৌর পিচ নিয়ে জোর আলোচনার মাঝেই তৃতীয় টি-২০ ম্যাচটি খেলতে আহমেদাবাদ যাচ্ছে ভারতীয় দল। নির্ণায়ক ম্যাচ জিতে হার্দিকের অধিনায়কত্বে টানা চতুর্থ টি-২০ সিরিজ জিতে নিতে চায় ‘মেন ইন ব্লু।’