IND vs NZ: একদিনের সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে ৩-০ ফলে উড়িয়ে দিয়েছিলো ভারতীয় দল। হোয়াইটওয়াশ হওয়া কিউইদের টি-২০ সিরিজেও পিছিয়েই রেখেছিলেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। কিন্তু সকল হিসেবনিকেশ’কে ফুৎকারে উড়িয়ে প্রথম টি-২০ ম্যাচটিতে ভারতকে ২১ রানে হারিয়ে দেয় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ম্যাচটিতে হারার ফলে লক্ষ্ণৌর দ্বিতীয় টি-২০ ভারতের কাছে ‘ডু অর ডাই’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। সিরিজে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচে জিততেই হত ‘টিম ইন্ডিয়া’কে। গত ম্যাচে ভারতকে চাপে ফেলেছিলো নিউজিল্যান্ডের স্পিনাররা। আজ কিউইদের স্ট্র্যাটেজিই অনুসরণ করতে দেখা গেলো হার্দিকবাহিনীকে। অতিরিক্ত স্পিনার হিসেবে যুজবেন্দ্র চাহালকে খেলালো দল। বোলারদের দাপটে মাত্র ৯৯ রানেই প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখতে সক্ষম হয়েছিলো ভারতীয় দল। তবে প্রত্যাঘাত করেন কিউই বোলাররাও। ঘূর্ণি পিচে আরও একবার ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন নিউজিল্যান্ড স্পিনাররা। ১০০ রানের লক্ষ্যমাত্রা পেরোতে ঘাম ঝরাতে হলো শুভমান, সূর্যকুমারদের। স্যান্টনার, সোধিদের স্পিনের ফাঁসে আজ অবশ্য বন্দী হলো না ‘মেন ইন ব্লু।’৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিয়ে সিরিজে সমতা ফেরালো ভারতীয় দল।
ঘূর্ণি পিচে নিউজিল্যান্ড’কে চাপে ফেলেন বোলার’রা-

গত ম্যাচে কিউই ওপেনাররা ভারতকে সমস্যায় ফেললেও আজ শুরু থেকেই বল হাতে আক্রমণাত্মক টিম ইন্ডিয়া। আজকেও নতুন বল হাতে ইনিংস শুরু করেছিলেন অধিনায়ক হার্দিক (Hardik Pandya)। যদিও গত ম্যাচের পর আজও পেস তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারলো না লক্ষ্ণৌর পিচে। দ্বিতীয় ওভারে অর্শদীপের হাতে বল তুলে না দিয়ে ওয়াশিংটন’কে (Washington Sundar) আনেন ক্যাপ্টেন। চতুর্থ ওভারে বল করতে আসেন আজকের ম্যাচে দলে ফেরা যুজবেন্দ্র চাহাল। নিজের প্রথম ওভারটি উইকেট মেডেন দেন চাহাল (Yuzvendra Chahal)। রিভার্স স্যুইপ মারতে গিয়ে বোল্ড হলেন ফিন অ্যালেন (Finn Allen)। একই সাথে ৯১তম উইকেট নিয়ে ভুবনেশ্বর কুমারকে সরিয়ে ভারতের সফলতম টি-২০ বোলার হলেন তিনি। ডেভন কনওয়েকে (Devon Conway) আউট করে বড় ঝটকা দিলেন ওয়াশিংটন সুন্দরও। দুই ওপেনারকে হারানোর পর নিউজিল্যান্ডের ইনিংস’কে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন ড্যারিল মিচেল। তাঁকে ফেরালেন অলরাউন্ডার দীপক হুডা (Deepak Hooda)। গত ম্যাচে বল হাতে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন অধিনায়ক স্যান্টনার। আজ ব্যাট হাতে শেষ অবদি লড়াই করলেন তিনি। ২৩ বলে ২০ রান করলেন তিনি। স্পিনারদের সাজানো মঞ্চে শেষলগ্নে সাফল্য পেলেন অর্শদীপ সিং’ও (Arshdeep Singh)। লকি ফার্গুসন এবং ঈশ সোধিকে ফিরিয়ে দিলেন তিনি। গত ম্যাচে নো-বল করে ভিলেন হয়েছিলেন তিনি। আজ ২ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে নিলেন ২ উইকেট।
স্পিন প্রশ্ন সামলে জয়তিলক ভারতের কপালে-

লক্ষ্ণৌর ঘূর্ণি পিচে জয় পাওয়া যে সহজ হবে না তা বোঝা গিয়েছিলো প্রথম ইনিংসের খেলা দেখেই। যুজবেন্দ্র চাহাল, কুলদীপ যাদব, ওয়াশিংটন সুন্দরদের জবাবে নিউজিল্যান্ড দলেও যে মিচেল স্যান্টনার (Mitchell Santner), ঈশ সোধিরা (Ish Sodhi) রয়েছেন তা জানতেন বিশ্বের ক্রিকেট অনুরাগীরা। কিউইরা মাত্র ৯৯ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পরেও তাই ভারতকে ‘ফেভারিট’ বলা যাচ্ছিলো না। গত ম্যাচে যেভাবে শুভমান (Shubman Gill), ঈশানদের (Ishan Kishan) চাপে ফেলেছিলেন কিউই স্পিনাররা আজও দেখা গেলো একই চিত্র। লকি ফার্গুসন (Lockie Ferguson), জেকব ডাফিদের মত পেসার থাকতেও আগাগোড়া স্পিন অস্ত্রেই ভরসা রাখলো নিউজিল্যান্ড। টি-২০ ক্রিকেটে শুভমানের ব্যাটে রানের খরা অব্যাহত। ব্যাকফুটে গিয়ে পুল মারতে গিয়ে আজ মাইকেল ব্রেসওয়েলের শিকার হলেন তিনি। ভারতীয় ইনিংসকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে লড়ছিলেন ঈশান কিষণ। ১৯ রানের মাথায় রাহুল ত্রিপাঠীর সঙ্গে ভুলবোঝাবুঝিতে রান আউট হলেন তিনি। ১৩ রানে ঈশ সোধির (Ish Sodhi) শিকার হয়ে ফেরেন ত্রিপাঠীও। গত ম্যাচে অর্ধশতক করেছিলেন ওয়াশিংটন। আজকেও তাঁর থেকে একটা বড় ইনিংস দরকার ছিলো ভারতের। কিন্তু সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav) সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হলেন তিনিও। মাত্র ১০০ রানের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও দুরন্ত বোলিং করে শেষ ওভার অব্দি ম্যাচ টেনে নিয়ে গেলো নিউজিল্যান্ড। শেষ ওভারে বাকি ছিলো ৬ রান। এক বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতলো ভারত। ২৬ রান করে অপরাজিত রইলেন সূর্য, সাথে ১৫ রানের ইনিংস খেলেন হার্দিক পান্ডিয়াও (Hardik Pandya)। ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরালো ভারত। তবে ‘টিম ইন্ডিয়া’ ম্যাচ জিতলেও লক্ষ্ণৌর পিচ নিয়ে প্রশ্ন যে উঠবে তা একপ্রকার নিশ্চিত। সিরিজের তৃতীয় এবং নির্ণায়ক ম্যাচটি হবে আগামী বুধবার, আহমেদাবাদে।