IND vs NZ: নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ভারত হেরে বসায় দ্বিতীয় খেলাটির গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছিলো অনেকখানি। দেশের মাঠে সিরিজ হারের হাত থেকে বাঁচতে দ্বিতীয় ম্যাচটিতে জিততেই হত ‘মেন ইন ব্লু’কে। রাঁচিতে প্রথম ম্যাচে ভারতকে ধরাশায়ী করে কিউইরা বুঝিয়ে দিয়েছিলো যে বিনা যুদ্ধে সূচাগ্র মেদিনী দিতেও রাজী নন তারা। কঠিন চ্যালেঞ্জকে আরও কঠিন করে দিয়েছিলো লক্ষ্ণৌ’র ভারতরত্ন শ্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী একানা স্টেডিয়ামের বাইশ গজ। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। লাল মাটির উইকেটে প্রথম ইনিংসের শুরু থেকেই বল ঘুরতে শুরু করে। দুই দলের পেসাররাই যেন নীরব দর্শক। ঘূর্ণি উইকেটে স্পিনাররা রাজ করলেও তা হয়ে ওঠে ব্যাটারদের বধ্যভূমি। চাহাল, কুলদীপ, ওয়াশিংটনদের দাপটে মাত্র ৯৯ রানে শেষ হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড ইনিংস। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিলো ভারতকেও। স্যান্টনার-সোধিদের সামনে মুশকিলে পড়েছিলেন ‘টিম ইন্ডিয়া’র ব্যাটাররা। শেষ অব্দি এক বল বাকি থাকতে ভারত ম্যাচ জিতলেও পিচের চরিত্র নিয়ে খুশি হতে পারেন নি অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। প্রকাশ্যেই লক্ষ্ণৌর বাইশ গজ নিয়ে তোপ দাগেন তিনি। পিচের সমালোচনা করেন ভারতীয় দলের বোলিং কোচ পরশ মামরেও (Paras Mhambrey)। গোটা ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে উত্তর প্রদেশের ক্রিকেট প্রশাসন। শোনা যাচ্ছে পিচ কিউরেটর সুরিন্দর কুমার’কে (Surinder Kumar) বরখাস্ত করা হয়েছে দায়িত্ব থেকে।
খেলা শেষে সমালোচনায় সরব হন হার্দিক-

ম্যাচ জিতলেও খুশি হতে পারেন নি ভারতীয় অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। জয়ী অধিনায়ক হিসেবে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অধিনায়ক। লক্ষ্ণৌর বাইশ গজ’কে ‘অযোগ্য’ অব্দি বলেছিলেন তিনি। সাথে আরও যোগ করেন, “সত্যি বলতে একেবারেই অযোগ্য এই পিচ। কঠিন উইকেটে খেলা নিয়ে আমার সমস্যা নেই। বরং সেটাকে স্বাগতই জানাবো, কিন্তু এই উইকেট টি-২০’র জন্য আদর্শ নয়। কিউরেটর বা মাঠ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ টি-২০ মোকাবিলার জন্য পিচ যেন আগে থেকে প্রস্তুত করা হয়।” অধিনায়কের সুরে সুর মেলাতে শোনা গিয়েছিলো ভারতীয় দলের বোলিং কোচ পরশ মামরেকেও (Paras Mhambrey)। তিনি সরাসরি পিচ কিউরেটরের কাছে জবাবদিহি দাবী করেন। মামরে সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, “এই পিচে ১২০ বা ১৩০ উঠে গেলে সমস্যায় পড়তে হত আমাদের। সেখানে প্রতিপক্ষকে ৯৯ রানে বেঁধে রাখা কম কৃতিত্বের নয়। , “একমাত্র কিউরেটর জবাব দিতে পারবেন পিচের চরিত্র নিয়ে। দেখে মনে হয়েছিলো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছি আমরা। ভাগ্য সহায় ছিলো বলেই খেলায় আগাগোড়া নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছিলাম আমরা।” এছাড়াও লক্ষ্ণৌ’র পিচ নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন ক্রিকেটবোদ্ধাদের অনেকে।
তুঙ্গে বিতর্ক, সরে যেতে হলো কিউরেটর’কে-

বাইশ গজের চরিত্র নিয়ে ভারতীয় শিবিরের অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসেছে উত্তরপ্রদেশের ক্রিকেট প্রশাসক সংস্থা। শোনা যাচ্ছে পিচ কিউরেটর সুরিন্দর কুমারকে (Surinder Kumar) বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বদলে গ্বালিয়র থেকে সঞ্জীব আগরওয়াল’কে (Sanjeev Agarwal) নিয়ে আসা হয়েছে। আসন্ন আইপিএলে লক্ষ্ণৌ’র পিচ সামলানোর দায়িত্ব থাকবে তাঁরই ওপর। মোট ৯টি পিচ রয়েছে ভারতরত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী একানা স্টেডিয়ামে। প্রতিটি পিচকেই আইপিএলের আগে আবার নতুন করে তৈরি করা হবে জানা যাচ্ছে সংবাদমাধ্যম মারফত। তবে দ্বিতীয় টি-২০ তে পিচের হালতের জন্য ভারতীয় দলকে দায়ী করছেন অনেকে। ক্রিকেটমহলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে যে ম্যাচের জন্য কালো মাটির পিচ প্রস্তুত করা ছিলো। কিন্তু খেলার তিন দিন আগে ভারতীয় দলের তরফে অনুরোধ জানানো হয় লাল মাটির পিচ প্রস্তুত করার জন্য। পর্যাপ্ত সময় না থাকায় পিচ আন্তর্জাতিক টি-২০ মানের হয়ে উঠতে পারে নি। এই বিতর্কের মাঝেই লক্ষ্ণৌ ছেড়ে ভারতীয় দল পাড়ি দিয়েছে আহমেদাবাদ। সেখানে আগামী পয়লা ফেব্রুয়ারী সিরিজের তৃতীয় এবং নির্ণায়ক ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ‘মেন ইন ব্লু।’ এক লক্ষাধিক দর্শকের সামনে হাতছানি রয়েছে সিরিজ জেতার। মাঠে উপস্থিত থাকার কথা সদ্য অনুর্দ্ধ-১৯ টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী ভারতের মহিলা দলেরও।