IND vs AUS: শ্রীলঙ্কা এবং নিউজিল্যান্ডকে সীমিত ওভারের খেলায় পরাজিত করার পর টেস্টেও ছুটছে ভারতের বিজয়রথ। নয়া বছরের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে নাগপুরের জামথা স্টেডিয়ামে ইনিংস ও ১৩২ রানে হারিয়েছে ভারতীয় দল। উপমহাদেশে জয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে এইবার ভারতে এসেছিলো ক্যাঙারুবাহিনী। মাসখানেক আগেই পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ জিতেছিলো তারা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও সিরিজ ড্র রেখেছিলো। ভারতের বিরুদ্ধে তারা লড়াই দেখাবে বলেই মনে করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো ঠিক উলটো ছবি। অশ্বিন-জাদেজার স্পিনের জালে নাজেহাল হয়ে আত্মসমর্পণ করলেন স্টিভ স্মিথ, মার্নাস লাবুশেনরা। দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়ে ১-০ ফলে এগিয়ে গেলেন রোহিত শর্মারা। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারী থেকে, দিল্লীর অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। মাঠে নামার আগে চিন্তার ভাঁজ টিম ম্যানেজমেন্টের কপালে। এই ম্যাচে প্রথম এগারোতে নাও দেখতে পাওয়া যেতে পারে বিরাট কোহলিকে (Virat Kohli)।
টপ অর্ডারের ব্যর্থতা চিন্তায় রাখছে দলকে-
বড় জয় পেলেও ভারতকে চিন্তায় রেখেছে টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতা। জামথা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৭৭ রানে গুটিয়ে গিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ উইকেট নেন জাদেজা (Ravindra Jadeja)। এবং তিন উইকেট নেন অশ্বিন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪০০ রান তোলে ভারত। তবে টপ অর্ডারের কেউই বিশেষ রান পান নি। ব্যতিক্রম একমাত্র অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। কামিন্স, বোল্যান্ড, মার্ফি, লিয়ঁদের অনায়াসে খেলে তিনি ১২০ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। ২১২ বলে খেলা ইনিংসটি সাজানো ছিলো ২টি ছক্কা এবং ১৫টি চার দিয়ে। এছাড়া তারকা ব্যাটারদের মধ্যে ব্যর্থ সকলে। রানখরা অব্যাহত কে এল রাহুলের (KL Rahul) ব্যাটে। তিনি করলেন মাত্র ২০ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে শতরান করলেও অজিদের বিপক্ষে ৮ রানে ফেরেন চেতেশ্বর পূজারা। টেস্ট অভিষেকে রান পেলেন না সূর্যকুমার যাদবও (Suryakumar Yadav)। তাঁরও সংগ্রহ মাত্র ৮ রান। ২০১৯ এর পর থেকে যে গ্রহণ দেখা যাচ্ছে বিরাট কোহলির ব্যাটে, নাগপুর টেস্টেও দেখা গেলো তারই ছায়া। ২৬ বলে ১২ রান করে বাইরের বলে অহেতুক খোঁচা দিয়ে আউট হলেন কোহলি (Virat Kohli)। টপ অর্ডারকে কম রানে সাজঘরে ফেরাতে পারলেও অজিদের বোলিং ব্রিগেডকে দমিয়ে রাখলেন দুই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। রবীন্দ্র জাদেজা (Ravindra Jadeja) ৮১ এবং অক্ষর প্যাটেল (Axar Patel) ৮৪ রান করেন। দশ নম্বর ব্যাটার হিসেবে মহম্মদ শামিও (Mohammed Shami) একটি ধুন্ধুমার ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন। মূলত লোয়ার অর্ডারের বদান্যতাতেই ২২৩ রানের লিড পায় ভারত।
বিরাট’কে বাইরে রেখেই নামবে ভারতীয় দল-
২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিপক্ষে গোলাপী বল টেস্টে কেরিয়ারে ২৭তম টেস্ট শতরানটি করেছিলেন বিরাট কোহলি। এরপর কেটে গিয়েছে তিন বছরেরও বেশী সময়। কিন্তু বিরাটের (Virat Kohli) টেস্ট শতরানের সংখ্যা আটকে রয়েছে সেই ২৭-এ। ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফর্ম্যাটে চিরচেনা বিরাটসুলভ আগ্রাসন যেন কোথাও ফিকে হয়ে গিয়েছে শেষ কয়েকমাসে। ব্যাট হাতে ক্রিজে তাঁকে যেন বিশেষ স্বচ্ছন্দ্য লাগছে না। কোথাও যেন স্থান পেয়েছে জড়তা ,আত্মবিশ্বাসের অভাব। এছাড়া কোনোভাবেই দীর্ঘ তিন বছরের অফ ফর্মকে ব্যাখ্যা করতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে গত কয়েকমাসে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রান পেয়েছিলেন বিরাট (Virat Kohli)। শতরানের খরাও কাটিয়েছিলেন। এছাড়া টি-২০ বিশ্বকাপেও বেশ ভালো খেলেছিলেন। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে এখনও আলোর দিশা দেখা যায় নি তাঁর ব্যাটিং-এ। বাংলাদেশের বিপক্ষে গত বছরের শেষ দিকে দুই টেস্টের সিরিজে রান পান নি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও শান্তই থেকে গেলো ব্যাট। লাল বলের খেলায় শেষ দশ ইনিংসে তাঁর রান মাত্র ১৬৯। নেই কোনো শতরান বা অর্ধশতরান। ব্যাটিং মহাতারকার অফ ফর্ম বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির মত গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে সমস্যায় ফেলতে পারে ‘টিম ইন্ডিয়া’কে। সেই কারণেই হয়ত দিল্লীর ছেলে বিরাটকে বাইরে রেখেই দিল্লীতে দল সাজাতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। রিজার্ভ বেঞ্চে রয়েছেন দুরন্ত ফর্মে থাকা শুভমান গিল (Shubman Gill)।রয়েছেন ঈশান কিষণ (Ishan Kishan)। বিরাটের বিকল্প হিসেবে তাঁদের সুযোগ দিয়ে দেখতে পারেন কোচ দ্রাবিড়।