IND vs AUS: শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বর্তমানে সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলছে ভারতীয় দল। এরপর অপেক্ষা করে রয়েছে নিউজিল্যান্ডের চ্যালেঞ্জ। কেন উইলিয়ামসন, টম ল্যাথামদের বিপক্ষে একটি তিন ম্যাচের ODI সিরিজ এবং একটি তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলবে ভারত। কিউইদের পরেই ভারতকে মুখোমুখি হতে হবে অস্ট্রেলিয়ার। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির আসর এইবার বসতে চলেছে ভারতে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অজিদের ধরাশায়ী করার পর বিরাট কোহলি (Virat Kohli), রোহিত শর্মাদের (Rohit Sharma) সামনে এখন লড়াই ট্রফির ওপর কর্তৃত্ব কায়েম রাখার। ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাসে চারটি টেস্ট খেলবে দুই দল। সিরিজের প্রথম দুইটি টেস্টের জন্য গতকাল রাত্রে দল ঘোষণা করেছে ভারতের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা BCCI। সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ায় দেখা যাবে না উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থকে (Rishabh Pant)। বদলে দস্তানা হাতে উইকেটের পিছনে দাঁড়াবেন কে? তা নিয়ে রয়েছে ধন্ধ। ক্ষমতায় এসে গোড়াতেই বাংলার ঋদ্ধিমান সাহাকে (Wriddhiman Saha) জাতীয় দল থেকে ছেঁটে ফেলেছিলেন কোচ রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। অজিদের বিপক্ষে দলে উইকেটরক্ষকের প্রয়োজন থাকলে ঋদ্ধিকে ফেরালেন না তিনি। জায়গা পেলেন জাতীয় দলের হয়ে একটিও টেস্ট না খেলা কে এস ভরত (KS Bharat) এবং ঈশান কিষণ (Ishan Kishan)।
কোচের না-পসন্দ, জাতীয় দলে ব্রাত্য ঋদ্ধিমান-

নিজের ক্রিকেট কেরিয়ারের অধিকাংশ সময়টাই বাংলার ঋদ্ধিমান সাহাকে (Wriddhiman Saha) কাটাতে হয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির মত এক মহীরুহের ছায়ায়। ভারতীয় দলের হয়ে তিন ফর্ম্যাটেই ধোনি এক দশকের বেশী সময় ধরে ছিলেন অটোমেটিক চয়েজ। সেই কারণেই ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত ভালো খেলেও বহুদিন জাতীয় দলের বাইরেই থাকতে হয়েছিলো শিলিগুড়ির ‘পাপালি’কে। ২০১৪ সালে ধোনির অবসরের পর অবশেষে উইকেটের পিছনে দাঁড়ানোর ছাড়পত্র পান তিনি। ২০২১ অব্দি একটানা খেলেছেন। একের পর এক অসামান্য ক্যাচ নিয়েছেন, করেছেন বিদ্যুৎ গতির স্টাম্পিং। বিশ্বের সেরা টেস্ট উইকেটরক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছিলেন ঋদ্ধি(Wriddhiman Saha) । ঋদ্ধিমান থেকে সমর্থকেরা নাম বদলে ডাকতে শুরু করেছিলেন সুপারম্যান নামে। ৪০ টেস্টে ৯২ ক্যাচ এবং ১২ টি স্টাম্পিং করেন তিনি। উইকেটের পিছনে ঋদ্ধি থাকলে যে নিশ্চিন্তে বোলিং করতে পারেন, তা স্বীকার করেছেন রবিচন্দ্রণ অশ্বিনের মত বোলারও। তবে তাঁর ক্রিকেট আকাশে আচমকাই দুর্যোগ নেমে আসে ২০২২ এর গোড়ার দিকে। ভারতীয় দলে রবি শাস্ত্রীর (Ravi Shastri) বদলে কোচ হয়ে আসেন দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। মূলত বয়সজনিত কারণেই ঋদ্ধিমানকে বাদের খাতায় লিখে ফেলেন তিনি। এমনকি কোচ তাঁকে অবসরের পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন বাংলার প্রাক্তণী।
ফর্মে থেকেও সুযোগ এলো না টেস্ট দলে-

বয়সের পাশাপাশি বারবার সমালোচনা হয়েছে ঋদ্ধিমানের (Wriddhiman Saha) ব্যাটিং-এর। তিনি নাকি ব্যাট হাতে দলের হয়ে যথেষ্ঠ অবদান রাখেন না। নিন্দুকদের আক্রমণের তীর বারবার বিদ্ধ করেছে ‘পাপালি’কে। সমালোচনা হলেও দলের বিপদে কিন্তু বারবার ত্রাতা হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টপ অর্ডারের ব্যর্থতার দিনে বুক চিতিয়ে লড়ে শতরান করেছেন। শতরান করেছেন বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় স্যুইং সামলে করেছেন জোড়া অর্ধশতক। এমনকি বাদ পড়ার আগের টেস্টেও কিউইদের বিরুদ্ধে চাপে পড়া ভারতীয় ব্যাটিং-কে সামলেছিলো তাঁর ৬১* রানের ইনিংসটি। অসহ্য শারীরিক যন্ত্রণা নিয়েও অর্ধশতরান করেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বাদ পড়লেও ক্রিকেট মাঠে তাঁর দায়বদ্ধতা কমে নি একটুও। ২০২২-এ গুজরাত টাইটান্সের আইপিএল জেতার পিছনে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিলেন ঋদ্ধিমানই (Wriddhiman Saha) । শুভমান গিলের সাথে একের পর এক দুরন্ত ওপেনিং জুটি গড়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন কুড়ি-বিশের খেলাতেও ফুরিয়ে যান নি তিনি। চলতি মরসুমে বাংলা ছেড়ে তিনি নাম লিখিয়েছন ত্রিপুরাতে। রঞ্জি ট্রফিতে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে করেছেন শতরান, বিদর্ভের বিপক্ষে করেছেন অর্ধশতকও। ঋষভের (Rishabh Pant) অবর্তমানে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে ভারতীয় দলকে উইকেটের পিছনে নিরাপত্তা দিতে পারতেন তিনি। কিন্তু ভরত এবং ঈশানেই আস্থা রাখছেন কোচ দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। তাঁদের দুজনের সম্মিলিত টেস্ট অভিজ্ঞতা শূন্য। টেস্ট ম্যাচে উইকেটরক্ষার মত কঠিন পরীক্ষায় তাঁরা কেমন ফল করেন সেটাই এখন দেখার।