IND vs AUS: ভারত সফরটা এখনো দুঃস্বপ্নের মতই কেটেছে অস্ট্রেলিয়া দলের। ঘরের মাঠে উইন্ডিজ এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে এই দেশে পা রেখেছিলেন প্যাট কামিন্স’রা।। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে সাফল্য ২০০৪ এর পর প্রথমবার ভারতের মাটিতে ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জেতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলো অজি শিবিরকে। উপমহাদেশীয় উইকেটের স্পিন সামলানোর জন্য সিডনিতে বিশেষ উইকেত বানিয়ে অনুশীলন করেছিলেন ব্যাটাররা। ভারতে এসেও বেঙ্গালুরুর শিবিরের নেটে একঝাঁক ভারতীয় স্পিনারের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি সেরেছিলেন স্মিথ (Steve Smith), লাবুশেন’রা (Marnus Labuschagne)। এত কিছুর পরেও মাঠের খেলায় ‘টিম ইন্ডিয়া’র সামনে কোনরকম প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারে নি অস্ট্রেলিয়া। নাগপুরের জামথা স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টে পরাজিত হয়েছে ইনিংস এবং ১৩২ রানে। টসে জিতে প্রথম ইনিংসে ১৭৭ করে অজি’রা। জবাবে ভারত তোলে ৪০০ রান। অস্ট্রেলিয়র দ্বিতীয় ইনিংস অশ্বিন-জাদেজা জুটির সামনে তাসের ঘরের মতই ভেঙে পড়ে। ম্যাচে ৭ উইকেট নেন জাদেজা (Ravindra Jadeja), অশ্বিন (Ravichandran Ashwin) নেন ৮ উইকেট। দ্বিতিয় ম্যাচেও বদলায়নি কাহিনী। আবারও মাত্র ৩ দিনের মধ্যেই হারে ক্যাঙারুবাহিনী। জাদেজা-অশ্বিনের ঘূর্ণিতে কেঁপে গিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৫৩রানে ৯ উইকেট হারায় প্যাট কামিন্সের (Pat Cummins) দল। জোড়া হারের ধাক্কায় বিপর্যস্ত অজি শিবিরের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে একের পর এক তারকা’র চোট-আঘাত। অন্তত ৮ ক্রিকেটার অনিশ্চিত বাকি দুটি টেস্টে। মিনি হাসপাতালে পরিণত হওয়া দল’কে কি করে জয়ের সরণীতে ফেরানো যায় সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে অস্ট্রেলীয় টিম ম্যানেজমেন্টের।
চোট-আঘাত সমস্যায় জর্জরিত অস্ট্রেলিয়া-

ভারত সফরে আসার আগেই অস্ট্রেলিয়ার চিন্তা ছিলো অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিনকে (Cameron Green) নিয়ে। মেলবোর্নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বক্সিং ডে টেস্টে আঙুলে চোট পেয়েছিলেন তিনি। ভারত সফরে আদৌ খেলতে পারবেন কিনা সেই নিয়ে ধোঁয়াশা ছিলো। শোনা যাচ্ছিলো বোলিং না করলেও কেবল ব্যাটার হিসেবে খেলানো হতে পারে তাঁকে। তবে নাগপুর এবং দিল্লীতে প্রথম একাদশে দেখা যায় নি গ্রিনকে। তিনি ইন্দৌরে খেলার মত অবস্থায় রয়েছে কিনা সে নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। এছাড়াও চোট সাথে নিয়েই ভারতে এসেছিলেন পেসার জশ হ্যাজেলউড’ও (Josh Hazlewood)। তাঁর গোড়ালির চোটও সারে নি এই কয়দিনে। প্রথম দুই ম্যাচে বাইরে থাকার পর বাধ্য হয়েই তাঁকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে অজি শিবির। বাঁ-হাতি পেসার মিচেল স্টার্ক’কেও দেখা যায় নি প্রথম একাদশে। তিনিও কতদূর ফিট সেই নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। চোটের তালিকায় নবতম সংযোজন ডেভিড ওয়ার্নার (David Warner) এবং টড মার্ফি (Todd Murphy)। অভিজ্ঞ ওপেনিং ব্যাটার ওয়ার্নার দিল্লী টেস্টে ব্যাটিং-এর সময় মহম্মদ সিরাজেরb (mohammed Siraj) শর্ট বলে কনুই এবং পাঁজরে আঘাত পান। পরীক্ষার পর দেখা গিয়েছে যে তাঁর কনুইয়ের হাড়ে চিড় ধরেছে। সম্পূর্ণ টেস্ট সিরিজ থেকেই ছিটকে গিয়েছেন বাঁ-হাতি ওপেনার। একদিনের সিরিজের আগে ফেরার সম্ভাবনা থাকলেও তা নিয়ে এক্ষুনি নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না কেউই। চলতি সফরে অস্ট্রেলীয় শিবিরের সেরা পারফর্মারদের মধ্যে নাম থাকবে বাইশ বর্ষীয় টড মার্ফির (Todd Murphy)। নাগপুরে অভিষেক টেস্টে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তিনিও চোটের শিকার। সাইড স্ট্রেন বা পেশীতে টান ধরেছে তাঁর। তবে তৃতীয় টেস্টের আগে ফিট হয়ে যাবেন মার্ফি, আশাবাদী অজি শিবির।
দেশে ফিরলেন অধিনায়ক কামিন্সসহ আরও কয়েকজন-

ক্যাঙারুবাহিনীর সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেশে ফিরেছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স (Pat Cummins)। দিল্লী থেকেই সরাসরি সিডনির বিমান ধরেছেন তিনি। পরিবারে অসুস্থতার খবর পেয়ে সফরের মাঝপথেই দেশে ফিরেছেন তিনি। বিবৃতি জারি করে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড সংবাদমাধ্যম;কে এই তথ্য জানিয়েছে। পরিবারের সাথে সময় কাটিয়ে তৃতীয় টেস্ট শুরুর আগেই তিনি ভারতে ফিরে আসবে বলে জানা গিয়েছে। এর আগেও সন্তানের জন্মের কারণে ভারত সফর ছেড়ে দেশে ফিরেছিলেন মিচেল সোয়েপসন (Mitchell Swepson)। তাঁর পরিবর্তে জরুরী ভিত্তিতে উড়িয়ে আনা হয়েছিলো ম্যাথিউ ক্যুনেমানকে। কামিন্সের পাশাপাশি ভারত ত্যাগ করেছেন স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগারও (Ashton Agar)। তাঁকে দেশে ফিরে শেফিল্ড শিল্ড খেলার পরামর্শ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ড। সফরকারী দলের এতজন’কে একসাথে পাওয়া না যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডের (Andrew McDonald) কপালে। নতুন করে টিম সাজানো হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি।
Read More: IPL 2023: 6,6,6,6,6… আইপিএলের আগে দীনেশ কার্তিক তুললেন ঝড়, প্রতিপক্ষদের করলেন হুঁশিয়ার !!