Imran Khan: অপারেশন সিন্দুরের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো তাতে সাময়িক ছেদ পড়লো গতকাল। সন্ধ্যেবেলা দুই দেশই সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করে। ঠিক হয়েছে যে আগামী ১২ তারিখ দুপুর ১২টার সময় ফের বৈঠকে বসবেন দুই দেশের ডিজিএমও’রা (ডায়রেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস)। পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারিত হবে সেই বৈঠকেই। সংঘর্ষবিরতির পর স্বস্তি ফিরবে উপমহাদেশে, আশা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু গতকাল রাতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছিলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি খবরকে কেন্দ্র করে। জানা যায় যে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan) নাকি জেল হেফাজতে মারা গিয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য সামনে এসেছে সত্যিটা। বেঁচে রয়েছেন ইমরান, মিলেছে তথ্য।
Read More: IPL 2025: এক সপ্তাহে শুরু করা সম্ভব নয় আইপিএল, সেপ্টেম্বর অবধি অপেক্ষাই করতে হবে BCCI-কে !!
ছড়ালো ইমরানের মৃত্যুর ভুয়ো খবর-

“অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা জানাচ্ছি যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জেল হেফাজতে থাকাকালীন মারা গিয়েছেন। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হচ্ছে…” পাক বিদেশমন্ত্রকের এমনই একটি প্রেস বিবৃতি গতকাল রাতে ছড়িয়ে পড়েছিলো সোশ্যাল মিডিয়ায়। রক্তাক্ত ইমরানের (Imran Khan) একটি ছবিও ভাইরাল হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই। বিষ দিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করেছে গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-উঠতে থাকা অভিযোগ। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শনও শুরু করেছিলো ইমরানের (Imran Khan) দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থকেরা। কিন্তু অনুসন্ধানে উঠে আসে অন্য তথ্য। জানা যায় যে ঐ বিবৃতি আদতে ভুয়ো। সাথের ছবিটিও বহু পুরনো। ২০১৩ সালে লাহোরে ভোটের প্রচারের সময় ফর্ক-লিফট থেকে পড়ে আহত হয়েছিলেন ইমরান (Imran Khan) । সেই ছবিই প্রচারিত হচ্ছিলো সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই মুহূর্তে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দী রয়েছেন ইমরান খান (Imran Khan) । দুর্নীতি, দেশদ্রোহিতার মত ২০০-র বেশী অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারত-পাক উত্তেজনার আবহে জেলের অন্দরে তাঁর প্রাণসংশয় রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রাক্তন পাক অধিনায়কের ঘনিষ্ঠ একজন। “ভারতের ছোঁড়া ড্রোন পাকিস্তানের অনেকটা ভিতরে ঢুকে হামলা চালিয়েছে। পাক সেনা তা প্রতিহত করতে পারে নি। সেগুলির মধ্যেই কোনো একটি হামলা করতে পারে আদিয়ালা জেলে।” খাইবার পাখতুনখওয়া অঞ্চলের পিটিআই সভাপতি জুনেইদ আকবর আবার শাহবাজ শরিফের সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন। “সংঘর্ষের আবহে পাক সরকারই ইমরানকে খুন করতে পারে। সেক্ষেত্রে ড্রোন বা মিসাইল হামলা বলে চালিয়ে দেওয়া সহজ হবে,” বলেছেন তিনি।
ফেক্ নিউজের বাড়বাড়ান্ত দুই দেশেই-

ভারত-পাক সংঘর্ষ চলাকালীন ফেক নিউজের বাড়বাড়ন্ত দেখা গেলো ওয়াঘা সীমান্তের দুই তরফেই। পাকিস্তানের তরফে দাবী করা হয় যে অন্তত পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে তারা। এর মধ্যে অন্তত তিনটি অত্যাধুনিক রাফাল জেট’ও রয়েছে। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফের (Khawaja Asif) কাছে প্রমাণ চাওয়া হলে তিনি অবশ্য জানান যে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে খবর পেয়েছেন তিনি। তাঁর দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য মুখ পুড়িয়েছে পাক সরকারের। ভুয়ো খবর প্রচারে পিছিয়ে ছিলো না ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। প্রথম সারির বেশ কিছু টেলিভিশন চ্যানেল ভারতীয় সেনার গতিবিধি সম্পর্কে একাধিক অসত্য তথ্য প্রচার করেছিলো। প্রতিবাদ জানানো হয় খোদ সেনাবাহিনীর তরফ থেকেই। ভুয়ো তথ্য পরিবেশন থেকে চ্যানেলগুলিকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।