ব্যাট

চলতি মাসের ১৮ তারিখ হায়দ্রাবাদের সঙ্গারেড্ডি জেলায় এক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর মৃত্য ঘিরে ঘনীভূত হয়েছিলো রহস্য। সেদিন বাড়িতে একাই ছিলো ঐ বালিকা। তার বাবা-মা কাজে গিয়েছিলেন। ছোট ভাই গিয়েছিলো বিদ্যালয়ে। দুপুরে সন্তানদের খাবার দিতে এসে বালিকার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেন তার বাবা। হৃদয়বিদারক এই ঘটনার তদন্তে নেমে চমকপ্রদ তথ্য পায় পুলিশ। জানা যায় প্রতিবেশী এক বছর পনেরোর কিশোরের হাতেই খুন হয়েছে ঐ বালিকা। তার ছোটো ভাইয়ের একটি ক্রিকেট ব্যাটের প্রতি লোভ ছিলো অভিযুক্ত কিশোরের। সেদিন দুপুরে সেটিই চুরি করতে সে ঢুকেছিলো প্রতিবেশীর অ্যাপার্টমেন্টে। বালিকা বাধা দেওয়ায় তাকে হত্যা করে সে।

Read More: “স্বপ্ন এখনও বদলায়নি..”, কোহলির পরামর্শে অনয়ার ক্রিকেটে ফেরার বার্তা, ভিডিও ভাইরাল !!

পুলিশী তদন্তে জানা গিয়েছে যে বালিকা ও তার পরিবারের পাশের অ্যাপার্টমেন্টেই থাকত অভিযুক্ত ঐ কিশোর। তার বাবার একটি মুদিখানার দোকান ছিলো। কিন্তু বিপুল লোকসান হওয়ায় তা বন্ধ করতে হয়েছিলো কয়েক মাস আগে। ঐ কিশোরের মা একটি বেসরকারী ল্যাবরেটরিতে চাকরি করেন। হরর ফিল্ম ও ক্রাইম ওয়েব সিরিজের ভক্ত ছিলো। ‘কি করে চুরি করা যায়’, ‘ধরা পড়লে কি করলে পালাতে হবে’ জাতীয় তথ্য গুগলে সার্চ করেও দেখেছিলো সে। সেখান থেকেই ব্যাট চুরির পরিকল্পনা ছকেছিলো সে। তা একটি কাগজে লিখেও রেখেছিলো ঐ কিশোর। পরে তাতে যোগ করে, ‘মিশন অ্যাকমপ্লিশড।’ সেই কাগজটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

জেরায় জানা গিয়েছে যে ঐ দিন রান্নাঘরের একটি ছুরি নিয়ে প্রতিবেশীর বাড়ি ঢুকেছিলো অভিযুক্ত কিশোর। ব্যাট নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দেখে ফেলে ঐ বালিকা। টেনে ধরে জামা। সবাইকে জানিয়ে দেওয়ারও ভয় দেখায়। তখনই ঐ বালিকাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে তার শ্বাসরোধ করে কিশোর। ছুরি দিয়ে গলা ও শরীরে বেশ কয়েকবার আঘাত করে। খুনের পর একটি হাণ্ডি ভেঙে কিছু টাকাও চুরি করে সে। রক্তমাখা ছুরিটি ধুয়ে সেটিকে রেখে দেয় নিজের বাড়ির ফ্রিজের মাথায়। রক্তে ভেজা টি-শার্টটিকে ধোওয়ার জন্য রেখেছিলো ওয়াশিং মেশিনের মধ্যে। দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের সখ্যতা ছিলো। দিনকয়েক আগেও একটি অনুষ্ঠানে ঐ কিশোরই কেক খাইয়েছিলো বালিকাকে, তার এহেন ভোলবদল তাই অবাক করেছে স্থানীয়দের।

সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রথমে কোনো তথ্য পায় নি স্পেশ্যাল অপারেশন টিম। তাদের দিশা দেখান এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। যেদিন বালিকার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিলো সেদিন ঐ কিশোরকে যে তিনি দেওয়াল বেয়ে উঠতে দেখেছিলেন তা পুলিশকে জানান তিনিই। পরে জেরায় অপরাধ স্বীকার করে সে। জেরার সময় ঐ কিশোরের আচরণ স্বাভাবিক ছিলো বলেই খবর পুলিশ সূত্রে। “আমায় বাড়ি যেতে দিন। আমার বাবা-মা’কে কিছু জানাবেন না,” বলেছিলো সে। যদিও সেই অনুরোধ রাখে নি পুলিশ প্রশাসন। মৃত বালিকার জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে কুকাটপল্লী থানায় ধর্ণায় বসেছিলেন তার বাবা-মা। তুলেছিলেন অভিযুক্ত কিশোরের কড়া শাস্তির দাবী। পুলিশ আশ্বস্ত করায় শেষমেশ অবশ্য ধর্ণা প্রত্যাহার করেছেন তাঁরা।

Also Read: “সময় হলে জানা যাবে…” রোহিত-কোহলির ভবিষ্যৎ নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিল BCCI !!

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *