চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অসহায় আত্মসমর্পণের পর শোরগোল ফেলে দিয়েছিলো কিংবদন্তি সুনীল গাওস্করের (Sunil Gavaskar) একটি মন্তব্য। স্পোর্টস টুডে’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আমি মনে করি যে ভারতের ‘বি’ দলও পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেবে। ‘সি’ দল’কে নিয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে ‘বি’ টিম’কে হারানো যে পাকিস্তানের পক্ষে বেশ কঠিন হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।” টি-২০ বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও গ্রুপ পর্বেই বিদায় নিয়েছে পাকিস্তান। আয়োজক দেশ হয়েও সবার আগে ছিটকে গিয়েছে তারা। গাওস্করের (Sunil Gavaskar) মন্তব্য’কে তাই সমর্থনই করেছিলেন অধিকাংশ ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ। এমনকি ওয়াসিম আক্রম, শোয়েব আখতারের মত পাক প্রাক্তনীরাও দুষেছিলেন নিজেদের দলকেই। কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন অবস্থান নিলেন জেসন গিলেসপি (Jason Gillespie)। বাবর-শাহীনদের পাশে দাঁড়িয়ে ভারতীয় প্রাক্তনীর দিকেই তোপ দাগেন তিনি।
Read More: IND vs NZ: ভারতকে জেতাতে আইসিসির দুরন্ত প্ল্যান, পাকিস্তানের পিচে হবে কিউই বধ !!
গাওস্করের দিকে আঙুল তুললেন গিলেসপি-

গাওস্কর (Sunil Gavaskar) ও অন্যান্য প্রাক্তনীদের আলোচনাতেও বারবার উঠে এসেছে পাক ক্রিকেটে প্রতিভার দৈন্যতার বিষয়টি। জাহির আব্বাস, ইমরান খান, জাভেদ মিয়াঁদাদ, ওয়াসিম আক্রম, ওয়াকার ইউনিসদের মানের ক্রিকেটার ওয়াঘা সীমান্তের পশ্চিম পারে আর তৈরি হচ্ছে না, আক্ষেপ চুইঁয়ে পড়েছে তাঁদের বক্তব্যে। কিন্তু এই মতবাদ মানতে রাজী নন অস্ট্রেলীয় প্রাক্তনী ও পাকিস্তানের সদ্য-প্রাক্তন টেস্ট কোচ জেসন গিলেসপি (Jason Gillespie)। বেশ কয়েক মাস পাক ক্রিকেটকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। প্রতিভার অভাব নেই সেখানে, শুধু প্রয়োজন সেই তরুণ তুর্কিদের লাইমলাইটে তুলে আনার, এমনটাই মনে করেন গিলেসপি। গাওস্করকে (Sunil Gavaskar) রীতিমত আক্রমণ করেই তিনি জানিয়েছেন, “আমি এই বক্তব্যের সাথে একদমই একমত নই। দেখলাম সুনীল গাওস্কর বলেছেন যে ভারতের বি বা সি টিম পাকিস্তানের প্রধান দলকে হারিয়ে দেবে। এগুলো একেবারের ভিত্তিহীন কথা।”
দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতার অভাবই সাম্প্রতিক অতীতে ডুবিয়েছে পাক দল’কে, মনে করেন জেসন গিলেসপি। বলেন, “পাকিস্তানের উচিৎ সঠিক খেলোয়াড়দের বেছে নিয়ে তাঁদের উপরেই ভরসা রাখা। ওদের সাফল্য পাওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া উচিৎ, শেখার সময় দেওয়া উচিৎ, খেলাকে উন্নত করার সুযোগ দেওয়া উচিৎ। ওরা যে কোনো দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। আমার এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ওদের (পাকিস্তানের) উঁচু মানের প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু সঠিক ব্যক্তিদের বেছে নিতে হবে। ওদের সমর্থন যোগাতে হবে। একই সাথে ধৈর্য্যও ধরতে হবে।” “পিসিবি যদি উন্নতি চায় তাহলে তাদের সঠিক জায়গায় সঠিক মানুষদের নিয়োগ করতে হবে। সঠিক খেলোয়াড়দের সুযোগ দিতে হবে। নির্বাচক কমিটিতেও যোগ্য ব্যক্তিদের সুযোগ দিয়ে তাঁদের পাশে থাকতে হবে। ধৈর্য্য ধরে তাঁদের কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে,” সংযোজন তাঁর।
আকিব জাভেজকে তুলোধোনা গিলেসপি’র-

২০২৪-এ পাকিস্তানের টেস্ট দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন জেসন গিলেসপি (Jason Gillespie), সাদা বলের দুই ফর্ম্যাটে কোচের আসনে বসেছিলেন গ্যারি কার্স্টেন। নির্বাচক কমিটি ও পিসিবি কর্তাদের সাথে মতানৈক্যের কারণে দুজনেই কয়েক মাসের মধ্যে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন পাকিস্তানের প্রাক্তন পেসার আকিব জাভেদ। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতার পর বর্তমান প্রশিক্ষক দুষেছিলেন পূর্বসূরিদের। ঘনঘন ম্যানেজমেন্ট পরিবর্তনই বিপদ ডেকে এনেছে, জানিয়েছিলেন তিনি। এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন গিলেসপি। আকিব’কে ব্যঙ্গ করে থ্রেডস অ্যাপে তিনি লেখেন, “এটা (মন্তব্যটি) খুবই হাস্যকর। আকিব (জাভেদ) নিজে আমার ও গ্যারি (কার্স্টেন)-এর নির্দেশ না মেনে পর্দার পিছনে নিজে সব ফর্ম্যাটের কোচ হওয়ার জন্য তদ্বির করছিলো। ও আসলে একটা ‘ক্লাউন’।”