ভারতীয় ক্রিকেটে ট্যালেন্ট আর বিতর্কের যুগলবন্দির নাম যেন সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের অন্যতম সফল অধিনায়ক হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় দলে তাঁর অবস্থান আজও অনিশ্চিত। নিয়মিত রান করার পরেও নির্বাচকদের নজর এড়িয়ে যাওয়ায় বারবার প্রশ্ন উঠছে। এমনকি কিছু কিছু অল্প সুযোগ পাওয়ার পরেও ব্যার্থ হয়েছেন সঞ্জু। বর্তমানে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের ওপেনার হিসাবে তাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তিনি ওপেনার হিসাবে গত ১ বছরে বেশ সফলতাও পেয়েছেন।
সামনের দিনে সঞ্জু স্যামসনের এক সিদ্ধান্তের জন্য ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারে। এখন প্রশ্ন উঠছে তাঁর সুযোগ না পাওয়ার পেছনে কি গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) ভূমিকা থাকবে? সম্প্রতি গম্ভীর জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁর পছন্দ-অপছন্দের তালিকা বরাবরই খুব স্পষ্ট। রাহুল ত্রিপাঠি, ঈশান কিষানদের মতো খেলোয়াড়দেরও নিয়মিত না দেখে, অনেকেই বলছেন, সঞ্জুর ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বেশ কিছু প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সঞ্জু স্যামসনের রাজস্থান রয়্যালস দল ছড়ার কথা। তার সাথে সাথে এটাও জানা গিয়েছে তিনি আগামী দিনে সঞ্জু চেন্নাই সুপার কিংস দলের অংশ হতে চলেছেন। আর চেন্নাই সুপার কিংসে রয়েছেন এমএস ধোনি (MS Dhoni)। আর ধোনি ও গম্ভীরের মধ্যের রসায়ন কারোর অজানা নয়।
Read More: ০, ০, ০, ০…বেসামাল পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে গুটিয়ে গেলো ৪৩ রানেই !!
গম্ভীর-ধোনির ঠান্ডা লড়াই

গৌতম গম্ভীর ও মহেন্দ্র সিং ধোনির দীর্ঘদিনের শীতল সম্পর্ক। একসময় ভারতের দুই ভিন্ন নেতৃত্বের দর্শনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন তারা। ধোনি যেখানে ছিলেন ধীরস্থির সেখানে গম্ভীর বরাবরই ছিলেন আগ্রাসী ও নিয়ম-কানুনে অনড়। বিশ্বকাপ ২০১১-এর পর থেকেই ধোনির কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে অসন্তোষ দেখিয়েছিলেন গম্ভীর। অনেকেই মনে করেন, ধোনির ‘বিশ্বস্ত বৃত্ত’-এর বাইরের ক্রিকেটারদের নিয়ে গম্ভীর বরাবরই ছিলেন ভিন্নমত পোষণকারী।
এই পটভূমিতে, সঞ্জু স্যামসন যদি চেন্নাই সুপার কিংসে যোগ দেন এবং ধোনির ছায়ায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তাহলে তা গম্ভীরের কাছে একপ্রকার ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবেই ধরা পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গম্ভীর হয়তো আরও অনিচ্ছা দেখাতে পারেন তাঁকে জাতীয় দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে।
চেন্নাইয়ের গেম চেঞ্জার হতে পারেন সঞ্জু

চেন্নাই সুপার কিংস এমন একটি দল, যারা খেলোয়াড়দের স্বাধীনতা দিতে জানে। ধোনির অধীনে অনেক ক্রিকেটার নিজেকে গড়েছেন। অশ্বিন-জাদেজাদের মতন তারকাদের মহান বানাতে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন রংজ। সেই কারণেই, সঞ্জুর মতো খেলোয়াড়ের জন্য এমন একটা পরিবেশ নিঃসন্দেহে অনুকূল। অনেকেই বলছেন, সিএসকে যদি সঞ্জুকে ভবিষ্যৎ অধিনায়ক হিসেবে দলে শামিল করে তাহলে সেটা শুধু তাঁর আইপিএল ক্যারিয়ার নয়, জাতীয় দলেও তাঁর অবস্থান বদলে দিতে পারে। কিন্তু ধোনির ছত্রছায়ায় যদি সঞ্জুর ক্যারিয়ারে উন্নতি হয় তাহলে জাতীয় দলে তাঁর সুযোগ পাওয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। সুতরাং প্রশ্ন থেকেই যায়—সিএসকে-তে গেলে সঞ্জুর ক্যারিয়ার উড়বে, না গম্ভীরের হাতে থেমে যাবে সবকিছু ?