কিছুদিন আগেই ভারত সরকার বেটিং অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে। যে কারণেই বিসিসিআই তাদের টাইটেল স্পনসর পরিবর্তন করেছে। গত দুই বছর ধরে টিম ইন্ডিয়ার টাইটেল স্পন্সর ছিল ড্রিম ইলেভেন। বেটিং অ্যাপ নিষিদ্ধ হওয়ার পর ভারতীয় দলের টাইটেল স্পন্সর এখন অ্যাপেলো টায়ারস। তবে, অন্যদিকে ড্রিম ইলেভেনের সমতুল্য বেশ কিছু বেটিং অ্যাপ সাধারণ জনগণকে আকৃষ্ট করে তুলেছিল এবং তা পৌঁছে গিয়েছিল মানুষের হাতে হাতে। ভারতীয় দলের একাধিক ক্রিকেটাররা বেটিং সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এবার সেই সংস্থার জন্যই বিপাকে পড়লেন ভারতীয় দলের দুই তারকা ক্রিকেটার।
বিপাকে দুই ভারতীয় ক্রিকেটার

ভারতীয় ক্রিকেটের দুই প্রাক্তন তারকা সুরেশ রায়না (Suresh Raina) ও শিখর ধাওয়ান (Shikhar Dhawan) বর্তমানে বড় বিতর্কে জড়িয়েছেন। বেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আর্থিক অনিয়ম ও তছরুপের অভিযোগে এই দুই তারকার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। সংস্থাটি ইতিমধ্যেই তাঁদের মোট ১১.১৪ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। জানা গেছে, রায়নার ৬.৬৪ কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড এবং ধাওয়ানের ৪ কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি ফ্রিজ করা হয়েছে।
Read More: বিশ্বকাপ জিতেও কোপ এই খেলোয়াড়ের উপর, WPL এর দল থেকে এক ঝটকায় আউট !!
ইডি তাদের এক্স (পূর্বে টুইটার) হ্যান্ডলে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানিয়েছে। বেটিং অ্যাপের প্রচারে কোনো কোনো তারকার জড়িত থাকার ঘটনা নতুন নয়, তবে রায়না ও ধাওয়ানের মতো প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটারের নাম জড়িয়ে পড়া অভূতপূর্ব। তাঁদের এই সম্পৃক্ততা ক্রিকেট মহলে প্রবল আলোড়ন তুলেছে। শুধু ক্রিকেটার নয়, বলিউড ও টলিউডের একাধিক তারকার নামও উঠে এসেছে ইডির নজরে। সেই তালিকায় রয়েছেন যুবরাজ সিং, রবিন উথাপ্পা, সোনু সুদ, ঊর্বশী রাওতেলা, অঙ্কুশ হাজরা এবং মিমি চক্রবর্তী।
ইডি সূত্রে জানা গেছে, এই বেটিং অ্যাপগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যে রাতারাতি ধনী হওয়ার প্রলোভন ছড়িয়ে বিপুল অর্থ আদায় করত। অ্যাপগুলির জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য তারা ক্রিকেট ও সিনেমা জগতের জনপ্রিয় মুখদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর বানাত। পরিবর্তে তারকারা বিপুল পারিশ্রমিক পেতেন। কিন্তু এই অ্যাপগুলির মাধ্যমে চলত হাওলা চক্র, যার মাধ্যমে টাকার লেনদেন বিদেশে চলে যেত। অভিযোগ রয়েছে, এই অর্থের কিছু অংশ সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের কাছেও পৌঁছেছে।
সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হলো রায়না – ধাওয়ানের

এই ঘটনার পরই কেন্দ্র সরকার একাধিক বেটিং অ্যাপ নিষিদ্ধ করে দেয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ‘ওয়ান এক্স বেট’। এই অ্যাপের প্রচারমূলক মুখ ছিলেন রায়না ও ধাওয়ান। বর্তমানে ইডি খতিয়ে দেখছে, তাঁদের সঙ্গে ঠিক কী ধরনের আর্থিক চুক্তি হয়েছিল এবং প্রচারের বিনিময়ে তাঁরা কত টাকা নিয়েছিলেন। জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে দুই প্রাক্তন ক্রিকেটারের বয়ানও রেকর্ড করা হয়, পাশাপাশি যুবরাজ সিং ও রবিন উথাপ্পাকেও তলব করা হয়েছিল।
ভারতীয় ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ইতিহাস নতুন নয়। একসময় আজহারউদ্দিন, অজয় জাদেজা কিংবা পরবর্তীতে শ্রীশান্তদের ঘটনাও ভারতীয় ক্রিকেটকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। আইপিএলের জন্মের পর বেটিং, জুয়া ও ফিক্সিংয়ের অভিযোগ আরও বেড়ে যায়। যদিও পরবর্তীতে বোর্ড কড়া পদক্ষেপ নিয়ে আইপিএলের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করে। তবে এবার ইডির পদক্ষেপ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও শুরু হয়েছে।