এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড নিঃসন্দেহে আইপিএল (IPL)। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ টুর্নামেন্ট দেখতে দেখতে পেরিয়ে গিয়েছে সতেরো বছর। ক্রিকেট ও বিনোদনের সুস্বাদু ককটেলের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে নি বিন্দুমাত্র। এখনও এপ্রিল-মে মাসের আইপিএলের জন্য সারা বছর অপেক্ষা করেন দর্শকেরা। গোটা বিশ্বের সেরা তারকাদের একসাথে খেলতে দেখতে পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ ছাড়তে চান না তাঁরা। আইপিএলের (IPL) দেখানো পথে হেঁটে ইতিমধ্যেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ শুরু করার পথে হেঁটেছে অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশের মত রাষ্ট্র। এমনকি আমেরিকা বা কানাডার মত দেশ, যেখানে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা অপেক্ষাকৃত কম, সেখানেও দেখা গিয়েছে মেজর লীগ ক্রিকেট (MLC) বা গ্লোবাল টি-২০’র (GT-20) মত টুর্নামেন্ট।
ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগের উত্তেজনায় সামিল হতে চেয়েছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড’ও (ECB)। টি-২০ ফর্ম্যাটে আরও খানিক বদল করে তারা শুরু করেছে ‘দ্য হান্ড্রেড।’ কুড়ি-বিশের খেলায় প্রতিটি ইনিংস ২০x৬ অর্থাৎ মোট ১২০টি বৈধ ডেলিভারি থাকতে পারে। হান্ড্রেডের ক্ষেত্রে সেই বৈধ ডেলিভারির সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১০০তে। সাধারণত এক ওভারে ৬টি বৈধ ডেলিভারি থাকে। ইংল্যান্ডের এই নয়া টুর্নামেন্টে পাঁচ বলের হয়ে এক একটি সেট। ক্রিকেটকে আরও দ্রুত গতির, আরও জমজমাট করে তুলতে এই ১০০ বলের খেলাই আগামীর বিকল্প বলে মনে করছে ইসিবি। ২০২৩ থেকে শুরু হয়েছে টুর্নামেন্ট। ৮ দলীয় প্রতিযোগিতা জনপ্রিয়তা পেয়েছে ইতিমধ্যেই। আরও বেশী বিনিয়োগ টানতে এবার IPL ফ্র্যাঞ্চাইজিদের দিকে তাকিয়ে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা।
Read More: পাঞ্জাব কিংসের মালিকদের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে, আদালতের দ্বারস্থ প্রীতি জিন্টা !!
IPL ফ্র্যাঞ্চাইজিদের চাইছে ইংল্যান্ড বোর্ড-
দ্য হান্ড্রেড টুর্নামেন্টের প্রসারের জন্য ভারতীয় বিনিয়োগ টেনে আনার চেষ্টায় রয়েছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (RCB)। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে তেমনটাই। এই মুহূর্তে আটটি দল রয়েছে এই প্রতিযোগিতায়। পুরুষ ও নারীদের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় লন্ডন স্পিরিট, ম্যাঞ্চেস্টার অরিজিনালস, ট্রেন্ট রকেটস, সাদার্ন ব্রেভ, নর্দার্ন সুপারচার্জার্স, বার্মিংহ্যাম ফিনিক্স ও ওয়েলস ফায়ার। আইপিএলের দশ ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছেই ‘দ্য হান্ড্রেড’-এর আট দলের শেয়ার কেনার আবেদন রাখতে পারে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। ঐ রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে যে আগ্রহ দেখিয়েছে আইপিএল (IPL) ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও। কিন্তু এখনও কিছু শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা চলছে সব পক্ষের মধ্যে। এছাড়াও ‘দ্য হান্ড্রেডে’ আগামী মরসুমগুলোতে দলের সংখ্যা বাড়ানো হবে কিনা, চর্চা থাকছে তা নিয়েও।
আইপিএল (IPL) ফ্র্যাঞ্চাইজিরা ইংল্যান্ডের প্রতিযোগিতায় বিনিয়োগ করার পর অংশগ্রহণকারী দলের নাম বদলও করতে পারেন বলে খবর। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI), চেন্নাই সুপার কিংস (CSK), কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) মত ফ্র্যাঞ্চাইজি ইতিমধ্যেই ভারতের বাইরে পা রেখেছে। এই মুহূর্তে আইপিএল, ডব্লুপিএল, আইএলটি-২০, মেজর লীগ ক্রিকেট ও এস এ ২০ মিলিয়ে মোট পাঁচটি দল রয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ফ্র্যাঞ্চাইজির। পিছিয়ে নেই চেন্নাই সুপার কিংস। আইপিএলের পাশাপাশি তারা পা রেখেছে মেজর লীগ ক্রিকেট, সিপিএল, এস এ ২০-র মত টুর্নামেন্টে। ভারতের বাইরে আইএলটি-২০, সিপিএল ও মেজর লীগ ক্রিকেটে দল রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সেরও। দিল্লী ক্যাপিটালস ফ্র্যাঞ্চাইজি বিনিয়োগ করেছে আইপিএল, ডব্লুপিএল, এস এ ২০, আইএল্টি-২০তে। ‘দ্য হান্ড্রেড’এ বিনিয়োগ করলে ক্রিকেটদুনিয়ায় ভারতের একচেটিয়া দাপট যে বাড়বে তা বলাই বাহুল্য।