স্ট্যাম্প মাইকে রেকর্ড হলো, বোলারদের দেওয়া ধোনির মজাদার টিপস! 1

ভারতীয় দলে তরুণ বোলারদের সফল হওয়ার পিছনে, সেই মানুষটা এখনও অবদান রেখে চলেছেন, যে মানুষটা ২০১১ সালে একশো কুড়ি কোটি ভারতবাসীর স্বপ্ন সফল করেছিল। মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ছয় মেরে ভারতকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার ভিডিওটা ভারতবাসী যতবার দেখে, শরীরে এখনও কাঁটা দিয়ে ওঠে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক এমএস ধোনি কাগজে কলমে বিরাটের হাতে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেও, নৈতিকভাবে দলের দায়ভার এখনও নিজের কাঁধে বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। সে ম্য়াচ চলাকালীন বিরাটকে পরামর্শ দেওয়া থেকে শুরু করে মাঠে ফিল্ডিং সাজানো বা তরুণ বোলারদের উদ্দীপ্ত করা – সবই করে যাচ্ছেন মাহি। অধিনায়ক বিরাটকে শুধু ক্রিকেট মাঠের বাইরে ড্রেসিং রুমের রাজনীতি ও ম্য়াচের আগে টস ব্য়াপারটা সামলাতে হচ্ছে (অবশ্য়ই এখানে নেতা বিরাটের কথা বলা হচ্ছে, তাই ব্য়াটসম্য়ান বিরাটের প্রসঙ্গ এখানে অপ্রাসঙ্গিক)।
ভারতীয় ক্রিকেট দলে ধোনি এখনও অপরিহার্য সম্পদ। শচীন তেন্ডুলকরের পর যদি ভারতীয় ক্রিকেট যদি কোনও জীবন্ত কিংবদন্তি উপহার দিয়ে থাকে, তাহলে নিঃসন্দেহে তাঁর নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। শ্রীলঙ্কায় ভারতকে উদ্ধার করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজের প্রথম ম্য়াচেও অভিভাবকের ভূমিকায় আবার অবতীর্ণ মাহি। গত রবিবার (সতেরো সেপ্টেম্বর) ভারতকে ব্য়াটহাতে উদ্ধার করার পর বৃষ্টিবিঘ্নিত পরিস্থিতিতে দলকে বাঁচাতে মাহি ফ্য়াক্টরই বড় হয়ে দাঁড়ালো। ২৪ ওভারে জয়ের জন্য় ১৬৪ রান তাড়া করতে গিয়ে ওভার পিছু রান রেট ১১ থেকে নয় রানে কমিয়ে এনেছিলেন গ্লেন ম্য়াক্সওয়েল। কিন্তু, উইকেটের পিছনে পোড় খাওয়া মাথা, ক্ষিপ্র গতির মাহির পরিকল্পনা সব কিছু ভেস্তে দেয়। দুই তরুণ স্পিনার যুজবেন্দ্র চহল ও কুলদীপ যাদব অস্ট্রেলিয়ার যে পাঁচটি উইকেট তুলে নিয়েছেন চিপকে, তার সবকটির পেছনে কোনও না কোনওভাবে মাহির অবদান রয়েছে। কিভাবে ম্য়াচের মোড়কে ভারতীয় দলের পক্ষে ঘোরাতে হয়, তা এখনও ভোলেননি বিশ্বজয়ী প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। চিপকে তরুণ স্পিনারদের গাউড করতে মাহিকে বারবার বলতে শোনা যায়, ‘‘এমন কিছু বল ফেল, যাতে মারতে পারে। টার্ন হয়ে ভেতর দিকে যাক, কি বাইরে বেরোক, যা কিছু।” ”ওই ঘুর্ণি বলটা ফেল।” মাহির পোড় খাওয়া মাথার পরিকল্পনার কাছে বিপক্ষ দলের ব্য়াটসম্য়ানরা এখনও অসহায়। আর তরুণ ভারতীয় বোলার অভিভাবক ধোনির ছত্রছায়ায় একেবারে নিশ্চিন্ত।
ধোনি যখন বোলারদের গাইড করে যান, নেতা বিরাটও তখন তা চুপচাপ তা করতে দেন। কোনও বাড়তি উপদেশ দিতে এগিয়ে আসেন না। ম্য়াক্সওয়েল যখন কুলদীপের ফেলা ম্য়াচের একাদশতম ওভারে ২২ রান তুলে নেন, তখন তাঁকে মাহি বোঝান, কিভাবে আলগা বল ফেললেও, ব্য়াটম্য়ানের অত কাছে ফেলা যাবে না। পরের ওভারে যুজবেন্দ্র কেউ একইভাবে গাইড করে যান ভারতের দু’বারের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। যতবার ভুল করেছেন, ততবার ঠান্ডা মাথায় দুই স্পিনারকে উদ্দীপ্ত করে গিয়েছেন মাহি। নেতা বিরাট আক্রমণাত্মক হলেও, ভারতীয় দলের জয়ের পেছনে মহেন্দ্র সিং ধোনির পর্দার আড়ালে থেকে অধিনায়কত্বকে কখনই অস্বীকার করা যায় না।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *