দাউদ ইব্রাহিম (Dawood Ibrahim), অপরাধজগত সম্পর্কে সামান্যতম জ্ঞান থাকা ব্যক্তিও নামটার সঙ্গে পরিচিত। ভারতের মুম্বইতেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা দাউদের। পুলিশকর্মীর সন্তান থেকে তাঁর আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন হয়ে ওঠার কাহিনী কমবেশী সকলেরই জানা। বলিউডের বেশ কিছু সিনেমাও হয়েছে তা নিয়ে। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় দাউদ (Dawood Ibrahim) ভারত ছেড়ে পাড়ি দেন বিদেশে। কখনও মধ্যপ্রাচ্যে আবার কখনও পাকিস্তানে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত অঞ্চমে কোথাও ঘাঁটি রয়েছে তার, মনে করছে বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। দাউদের বোন হাসিনা পার্কারের পুত্র আলিশাহ পার্কার চলতি বছরেই ভারতীয় সংবাদসংস্থা ANI-কে জানিয়েছিলেন যে করাচীতেই রয়েছেন দাউদ। ভারত সরকারের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা এই অপরাধীর নাম জড়িয়ে রয়েছে ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ এমনকি ২০০৮-এর মুম্বই সন্ত্রাসবাদী হামলার সাথেও।
দাউদের (Dawood Ibrahim) সাথে জড়িয়ে রয়েছে ক্রিকেট’ও। ৮০ বা ৯০-এর দশকে মধ্যপ্রাচ্যের ক্রিকেট ম্যাচগুলিতে তাঁকে বহুবার দেখা গিয়েছে গ্যালারিতে। গড়াপেটার সাথেও দাউদের যোগ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় দলের প্রাক্তনী দিলীপ ভেঙ্কসরকার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন ১৯৮৭ সালে শারজা’তে পাকিস্তানের সাথে ম্যাচের আগে টিম ইন্ডিয়ার সাজঘরের পর্যন্ত এসেছিলেন দাউদ। পাকিস্তানকে হারাতে পারলে সকল ক্রিকেটারকে টয়োটা গাড়ি দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন। যদিও ভারত অধিনায়ক কপিল দেব (Kapil Dev) আমল দেন নি দাউদের প্রতিশ্রুতিতে। তিনি সটান সাজঘর ছাড়তে আদেশ দিয়েছিলেন আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন’কে। কেবল গড়াপেটা নয়, ক্রিকেটের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কও রয়েছে দাউদের। পাক ক্রিকেট কিংবদন্তি জাভেজ মিয়াঁদাদের ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে দাউদের (Javed Miandad) কন্যার।
Read More: IPL 2024: কেকেআর বা চেন্নাই নয় রাজস্থান দলে যোগ দিচ্ছেন রোহিত শর্মা, চাহাল করলেন বড় খোলসা !!
হাসপাতালে দাউদ? গৃহবন্দী হলেন মিয়াদাঁদ-
বর্তমানে ৬৭ বছর বয়স দাউদ ইব্রাহিমের (Dawood Ibrahim)। কুখ্যাত ডি-কোম্পানির মালিক কি অসুস্থ? এমন খবরই ছড়িয়েছে গতকাল থেকে। শোনা গিয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় কোনো ব্যক্তির কারসাজিতে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন দাউদ (Dawood Ibrahim)। ভর্তি রয়েছেন করাচীর হাসপাতালে। পাকিস্তানের তরফে কোনো সরকারী ঘোষণা বা বিবৃতি মেলে নি দাউদের স্বাস্থ্য নিয়ে। এর আগে বেশ কয়েকবার ভারতের তরফে দাবী করা হয়েছে যে অপরাধজগতের অন্যতম প্রধান মুখ দাউদকে আড়াল করছে পাকিস্তান। প্রমাণ পেশ করার পরেও বারবার অস্বীকার করে এসেছে পাক প্রশাসন। দাউদের (Dawood Ibrahim) করাচীর হাসপাতালে ভর্তির খবর সত্যি বলে প্রমাণিত হলে ফের মুখ পুড়বে পাক সরকারের। সম্ভবত সেই কারণেই মৌনতা অবলম্বন করা হয়েছে শাহবাজ শরিফের সরকারের পক্ষ থেকে।
দাউদের অসুস্থতার কোনো রকম তথ্য বাইরে আসা আটকাতে কড়া নিরাপত্তার চাদরে হাসপাতাল মুড়ে ফেলা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। একমাত্র হাসপাতালের কর্মীবৃন্দ এবং পরিবারের সদস্যদের ছাড়া কারও দাউদ (Dawood Ibrahim) যে ফ্লোরে রয়েছেন, সেখানে পা রাখার অধিকার নেই। ২০০৬ সালে দাউদ ইব্রাহিমের (Dawood Ibrahim) কন্যা মাহরুখের সাথে বিবাহ হয় জাভেদ মিয়াঁদাদের (Javed Miandad) পুত্র জুনেইদের। দাউদ সম্পর্কীত কোনো খবর সংবাদমাধ্যমের কাছে যাতে না পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে সপরিবারে মিয়াঁদাদকেও (Javed Miandad) গৃহবন্দী করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে সূত্র অনুসারে। ইন্টারনেট পরিষেবাও জায়গায় জায়গায় বন্ধ রাখা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের। বিশেষ করে ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবের মত প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে সমস্যায় পড়েছেন পাক নেটিজেনরা। দাবী করা হয়েছে সূত্র মারফত। ইন্টারনেট বন্ধ’ও পাক সরকারের খবর বাইরে যাওয়া আটকানোর প্রচেষ্টা বলেই মনে করা হচ্ছে।