CT 2025: যত গর্জায় তত বর্ষায় না-বাংলায় প্রচলিত এই প্রবাদটিই সত্যি হতে দেখা গেলো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) ক্ষেত্রে। আয়োজনের দায়িত্ব পাকিস্তানকে দিয়েছিলো আইসিসি। জটিলতার সূত্রপাত সেখান থেকেই। বেঁকে বসে বিসিসিআই। পড়শি দেশে ভারতীয় ক্রিকেটারদের যথেষ্ট নিরাপত্তা প্রদান সম্ভব নয়। এই মর্মে হাইব্রিড মডেলের দাবী তোলেন জয় শাহ (Jay Shah), রজার বিনি’রা। গত বছর এশিয়া কাপের (Asia Cup 2023) ক্ষেত্রেও একই কারণে পাকিস্তানে যায় নি টিম ইন্ডিয়া। তখনও হাইব্রিড মডেলেই মিলেছিলো সমাধানসূত্র। কিন্তু এবার কড়া অবস্থানের কথা ঘোষণা করেছিলো পিসিবি। তাদের চেয়ারম্যান মহসীন নকভি (Mohsin Naqvi) একাধিক বিতর্কিত বিবৃতি দিয়েছিলেন ভারতীয় দল ও বোর্ড সম্পর্কে। কোনো ম্যাচ’ই সরবে না দেশ থেকে। ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষমেশ চাপের মুখে নতিস্বীকার করতেই হলো পাক বোর্ড’কে।
Read More: CT 2025: বিসিসিআই-এর মোক্ষম চালে ১২৮০ কোটি জলে পাকিস্তানের, পথে বসছে বোর্ড !!
সিলমোহর পড়লো হাইব্রিড মডেলেই-
১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম বড় মাপের কোনো আইসিসি প্রতিযোগিতার স্বাদ পেতে চলেছে পাকিস্তানের ক্রিকেট জনতা। ভারত-পাক ম্যাচের মত হাইপ্রোফাইল দ্বৈরথ আয়োজনে তাই মরিয়া ছিলো পিসিবি। বেঁকে বসা বিসিসিআই-কে রাজী করানোর জন্য বহু চেষ্টা করেছে তারা। প্রথমে প্রস্তাব দেওয়া হয় যে কোহলি-রোহিতদের নিরাপত্তার কথা ভেবে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) সব ক’টি ম্যাচ লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে করা হবে। সেমিফাইনাল দুটি করাচী রাওয়ালপিণ্ডিতে রয়েছে। যদি ভারত শেষ চারে যায়, সেক্ষেত্রে সেই ম্যাচটিও সরিয়ে আনা হবে লাহোরে। কিন্তু চিঁড়ে ভেজে নি। শেষ চেষ্টা হিসেবে ভারতীয় দলকে পাকিস্তানে এসে ম্যাচ খেলার পর ভারতেই ফিরে আসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহসীন নকভি’রা। কিন্তু অমৃতসর বা দিল্লী প্রত্যাবর্তনের সেই প্রস্তাবেও রাজী হয় নি ভারতীয় বোর্ড।
এরপরেই আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছিলো পিসিবি। ভারতীয় বোর্ডের কাছে লিখিত আকারে যাবতীয় সমস্যার তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়। আইসিসি’র হস্তক্ষেপ দাবী করে তারা। টিম ইন্ডিয়াকে বাদ দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) আয়োজনের দাবী তোলারও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না কিছুতেই। শুক্রবার স্বল্প সময়ের জন্য ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসেছিলেন আইসিসি ও সব দেশের ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা। সেখানে ভারতকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব’ও খারিজ হয়ে যায় মুহূর্তে। পাকিস্তানকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে হাইব্রিড মডেলে সায় না দিলে সম্পূর্ণ টুর্নামেন্ট (CT 2025) সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। ইতিমধ্যে ১২৮০ কোটি টাকা খরচ করে পরিকাঠামোর উন্নয়ন করছে তারা। সেই টাকা জলে যাবে পুরোটাই। একদিন সময় দেওয়া হয়েছিলো পিসিবি’কে। শনিবার দ্বিতীয় দফার বৈঠকে পিছু হটতেই হলো তাদের।
টাকা পেতেই সুর বদল পিসিবি’র-
“প্রয়োজনে মাথা কেটে যাক, কিন্তু তা নীচু হবে না”, “আঘাত সহ্য করে নেব, অপমান সহ্য করবো না”-চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি’র (CT 2025) ভেন্যু সমস্যা যখন চরমে, তখন পাক সংবাদমাধ্যমের সামনে এমনই সব বিবৃতি দিয়েছিলেন মহসীন নকভি (Mohsin Naqvi)। আইসিসি’র বৈঠকে অবশ্য এই দাপট ধরে রাখতে পারলেন না তিনি। গুটিকয় শর্তের বিনিময়ে সায় দিলেন হাইব্রিড মডেলে। পিসিবি’র তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে ২০৩১ অবধি আইসিসি ইভেন্টে অংশ নিতে ভারতে যাবে না পাক দল। তারাও দাবী জানায় হাইব্রিড মডেলের। পুরুষদের ক্রিকেটে এই সময়কালের মধ্যে ২০২৬-এর টি-২০ বিশ্বকাপ ও ২০৩১-এর ওডিআই বিশ্বকাপ রয়েছে ভারতের মাঠে। কিন্তু কো-হোস্ট হিসেবে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশেরও থাকার কথা। ফলে এই শর্ত মানা এমন কিছু কঠিন ব্যাপার নয়। সমস্যা হতে পারে ২০২৫-এর নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ ও ২০২৯-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে।
এই মুহূর্তে আইসিসি’র লভ্যাংশের ৫.৭৫ শতাংশ পায় পিসিবি। বিসিসিআই পায় ৩৮ শতাংশ। বন্টনের এই হারে বদল চেয়েছেন মহসীন নকভি’রা (Mohsin Naqvi)। যেহেতু আইসিসি’র ল্ভ্যাংশের অনেকটাই আসে ভারত-পাক দ্বৈরথ থেকে সেহেতু অন্তত ৭ শতাংশ বা তারও বেশী টাকা তাদের পাওয়া উচিৎ বলে দাবী করেছে পিসিবি। টাকার অঙ্কে্র হিসেবে যা দাঁড়াতে পারে ৪০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে টপকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থ প্রাপক হতে পারে তারা। হাইব্রিড মডেলে মান্যতা দেওয়া হবে না, দেশের জনতাকে জানিয়েছিলেন মহসীন নকভিরা। পিঠ বাঁচাতে বিকল্প ফর্মূলার নাম বদলের অনুরোধ’ও নাকি রাখা হয়েছে তাঁদের তরফ থেকে। তাঁদের শর্তগুলির মধ্যে আদৌ কোনোটি মানা হবে কিনা তা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা এখনও দেওয়া হয় নি আইসিসি’র তরফে।
ICC-কে শর্ত দিলো PCB-
🚨 PCB SET TO BECOME THE SECOND MOST POWERFUL BOARD IN THE WORLD
PCB has demanded Pakistan’s ICC annual revenue share to be increased from 5.75% to 7% or more, close to 40 Million USD per year 🇵🇰🇮🇳🔥
Watch full video 👇🏽👇🏽👇🏽https://t.co/BBsUoqrMKn pic.twitter.com/jr70fDejuq
— Farid Khan (@_FaridKhan) December 1, 2024