CT 2025: আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) নিয়ে দড়ি-টানাটানি চলছেই। আয়োজক হিসেবে পাকিস্তানের নাম ঘোষণা করেছিলো আইসিসি। কিন্তু ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা যথেষ্ট নয়, দাবী করে পড়শি দেশে যেতে অসম্মত হয় ভারতীয় বোর্ড। উপমহাদেশের দুই ক্রিকেটীয় শক্তির মধ্যে টানাপোড়েন চলেছে লম্বা সময় ধরে। বিসিসিআই-এর হাইব্রিড মডেলের দাবী নস্যাৎ করার পথে হেঁটেছিলো পিসিবি (PCB)। কিন্তু কূটনৈতিক চাপে শেষমেশ মাথানত করতেই হয়েছে তাদের। গত সপ্তাহের ভার্চুয়াল বৈঠকে শেষমেশ হাইব্রিড মডেলেই পড়েছে সিলমোহর। বাকি টুর্নামেন্ট পাকিস্তানে হলেও ভারতীয় দলের সবক’টি ম্যাচ আয়োজিত হতে চলেছে মধ্যপ্রাচ্যে। এমনকি সেমিফাইনাল বা ফাইনালে টিম ইন্ডিয়া (Team India) উঠলে সেগুলিও সরবে পাকিস্তান থেকে। বেকায়দায় পড়ার পর পিসিবি কর্তারা এবার ভারতকে পালটা দেওয়ার চেষ্টায়।
Read More: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হাইব্রিড মডেলে রাজি পাকিস্তান, ICC’র কাছে নিল মোটা অঙ্কের টাকা !!
বাড়তি টাকা চায় না পাকিস্তান-
গতকাল খবর মিলেছিলো যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) ক্ষেত্রে হাইব্রিড মডেল মেনে নিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB)। কিন্তু সম্মতি দেওয়ার আগে দুটি শর্ত তারা রেখেছে আইসিসি’র কাছে। এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার কাছ থেকে তাদের লভ্যাংশের ৫.৭৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৩৫ মিলিয়র মার্কিন ডলার প্রত্যেক বছর পায় পিসিবি। টাকার এই অঙ্কটা নাকি বাড়ানোর দাবী করেছিলো তারা। যেহেতু ভারত-পাক (IND vs PAK) দ্বৈরথ থেকে লভ্যাংশের অনেকখানি আসে আইসিসি’র কোষাগারে সেহেতু অন্তত ৭ শতাংশ বা তার বেশী লভ্যাংশ পাওয়া উচিৎ পিসিবি’র, দাবী ছিলো তাদের। যদি আইসিসি এই দাবী মেনে নিত তাহলে পাক বোর্ডের বাৎসরিক আয় দাঁড়াতে পারত প্রায় ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে টপকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থপ্রাপক ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা হতে পারত তারা।
এই খবর সামনে আসার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছিলো ক্রিকেটমহল থেকে। কেউ কেউ এই দাবীকে ন্যায্য বলেন ঠিকই তবে কোনো মূল্যেই হাইব্রিড মডেল না মানার যে অবস্থান নেওয়ার কথা এতদিন ঘোষণা করে এসেছিলেন পিসিবি কর্তা’রা, তা থেকে সরে এসে সমালোচনার মুখেও পড়েন তাঁরা। সম্ভবত সেই কারণেই পূর্বের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক বোর্ড (PCB)। পড়শি দেশের ক্রিকেট সাংবাদিক ফরিদ খান একটি ইউটিউব ভিডিওতে জানিয়েছেন যে পিসিবি চেয়ারম্যান নকভি (Mohsin Naqvi) ও তাঁর সতীর্থরা নাকি আইসিসি’কে জানিয়ে দিয়েছেন যে ৭ বা ৭.৭৫ শতাংশ নয়, লভ্যাংশের ৫.৭৫ শতাংশ পেলেই খুশি তারা। তবে ভারত যদি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) খেলতে না আসে তাহলে আগামীতে তাদের দল’কে যেন কোনো ম্যাচ খেলতে ভারতে যেতে না হয়
ভারতকে পালটা দেওয়ার চেষ্টায় পিসিবি-
মুখরক্ষার প্রচেষ্টায় হাইব্রিড মডেলের নাম বদলের চেষ্টা চালাচ্ছে পিসিবি (PCB), গতকালই এই খবর সামনে এসেছিলো। আজ পাক সাংবাদিক ফরিদ খানকেও পার্টনারশিপ ও ফিউশন ফর্মূলা নামক সমাধানসূত্রের কথা উল্লেখ করতে দেখা যায়। যদিও হাইব্রিড মডেলের সাথে তাঁর কোনো পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছে না ক্রিকেটমহল। এশিয়া কাপের (Asia Cup 2023) পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) ক্ষেত্রে ভারত ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে পড়শি দেশে যেতে অসম্মত হওয়ায় পাকিস্তান আপাতত প্রত্যাঘাতের প্রচেষ্টায়। বাড়তি অর্থের দাবী থেকে সরে এসে ভারতে আয়োজিত আসন্ন টুর্নামেন্টগুলিও যাতে হাইব্রিড মডেলে হয় তা নিশ্চিত করার চেষ্টাই নাকি মরিয়া হয়ে করছেন মহসীন নকভি’রা (Mohsin Naqvi)।
২০২৭ অবধি কোনো বহুদেশীয় টুর্নামেন্টের কোনো ম্যাচ ভারতে এসে যাতে না খেলতে হয় সে বিষয়ে আইসিসি’র সবুজ সংকেত চেয়েছে পাক বোর্ড (PCB)। আসন্ন টুর্নামেন্ট গুলির মধ্যে ২০২৬-এর টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup 2026) রয়েছে ভারতের মাটিতে। যদিও সেখানে কো-হোস্ট হিসেবে থাকার কথা শ্রীলঙ্কার। ফলে পাকিস্তান চাইলে দ্বীপরাষ্ট্রে খেলতেই পারে ম্যাচগুলি। সমস্যা দেখা যেতে পারে আগামী বছরে মহিলাদের ওডিআই বিশ্বকাপ (Women’s World Cup 2025) ও পুরুষদের এশিয়া কাপ (Asia Cup 2025) নিয়ে। দুটি টুর্নামেন্টেরই একমাত্র হোস্ট ভারত। পাকিস্তান না এলে তাদের ম্যাচগুলি মধ্যপ্রাচ্য বা অন্য কোথাও আয়োজনের কথা ভাবতে হবে বিসিসিআই-কে। শোনা যাচ্ছে প্রতিটি টুর্নামেন্টের ফাইনালের জন্যও নাকি নিরপেক্ষ ভেন্যু চেয়েছে পিসিবি, তা আদৌ মানা হবে কিনা তা নিয়ে যদিও সংশয় রয়েছে।