কলকাতায় ফুটবলের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য তরুণ প্রজন্মকে বছরের পর বছর ধরে উদ্বুদ্ধ করে আসছে। ফলে এই শহরে লিওনেল মেসি (Lionel Messi) আসার কথা সামনে আসতে ভক্তদের মধ্যে উৎসাহ তৈরি হয়। গত কয়েক মাস ধরে প্রস্তুতির ছবি সামনে উঠে আসে। টিকিট বিক্রি শুরু হতেই দাম চড়া হলেও হাউসফুল হয়ে যায়। শুক্রবার মধ্যরাতে এই তারকা ফুটবলার শহরে পা রাখেন। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে একাধিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাকে সংবর্ধনা জানানোর কথা ছিল। কিন্তু ভক্তরা ফুটবলের এই জাদুকরকে দেখতে না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। এরপরেই আয়োজক শতদ্রু দত্ত (Satadru Dutta) গ্রেফতার হন। আজ তাকে আদালতে পেশ করা হয়।
Read More: সৌরভ গাঙ্গুলীর দিকে উড়ে এল খালি বোতল, যুবভারতীতে একটুর জন্য বাঁচলেন মহারাজ !!
রণক্ষেত্র যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন-

শুক্রবার ভোর-রাতে কলকাতায় লিওনেল মেসি ইন্টার মিয়ামির (Inter Miami) সতীর্থ প্রিয় বন্ধু লুইস সুয়ারেজ (Luis Suarez) এবং আর্জেন্টিনার সতীর্থ রদ্রিগো ডি’পল (Rodrigo De Paul)’কে নিয়ে কলকাতায় আসেন। শনিবার সকাল থেকেই তাকে ঘিরে ছিল একাধিক কর্মসূচি। হোটেল থেকে ভার্চুয়ালি নিজের মূর্তি উদ্বোধন করেন। তারপর সময়মতো পৌঁছে যান যুবভারতীতে। এই কিংবদন্তি তারকাকে এক ঝলক দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন হাজার-হাজার দর্শক।
কিন্তু চড়া দামে টিকিট কেটেও তারা মেসিকে এক মুহূর্তের জন্যেও দেখতে পাননি। এই তারকাকে মাঠের মধ্যে আয়োজক কমিটির সদস্য সহ রাজনৈতিক দলের অসংখ্য ব্যক্তিত্ব ঘিরে ছিলেন। বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন হাত নাড়িয়ে দর্শকদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার চেষ্টা করলেও তা স্টেডিয়ামের আসন থেকে দেখা যায়নি। ফলে ক্ষোভ তৈরি হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে মেসিকে মাঠের বাইরে নিয়ে চলে যাওয়া হয়। এরপরই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভাঙচুর চলে। আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা পর্যন্ত করা হয়।
আদালতের নির্দেশ-

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বিশৃঙ্খলার ঘটনায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শনিবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকে শতদ্রু দত্তকে গ্রেফতার করা হয়। মেসিকে (Lionel Messi) ভারতে আনার বিষয় শতদ্রু ছিলেন প্রধান আয়োজক। ফলে ডিজিপি রাজীব কুমার তাকে সমস্ত দায় নিতে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। টিকিটের দাম ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশ দেন তিনি। আজ বিধাননগর আদালতে শতদ্রুকে পেশ করা হয়। সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত চত্বরে পৌঁছাতেই চোর-চোর বলে বিক্ষুব্ধ জনতা আওয়াজ তোলেন। প্রধান আয়োজকের আইনজীবী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দর্শকদের ওপরেই দায় চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, “ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এবং অর্গানাইজারের কাজ সম্পূর্ণ আলাদা। সাধারণ দর্শকদের জন্য এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমার মক্কেলের কোনও দোষ নেই। নিরাপত্তার বিষয় যখন প্রশ্ন উঠেছে তখন সকলকে দায়িত্ব নিতে হবে। সাধারণ জনতা যেভাবে উত্তেজিত হয়ে উঠেছিল সেটা কখনোই কাম্য ছিল না। ওখানে যারা মেসিকে ঘিরে রেখেছিলেন তাদের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।”