২০২০ সালের ডিসেম্বরে নৃত্যশিল্পী ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ধনশ্রী ভার্মা’র সাথে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন তারকা লেগস্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল (Yuzvendra Chahal)। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের জীবনের নানা টুকরো ছবি অনুরাগীদের সাথে ভাগ করে নিতেন তাঁরা। অল্প সময়েই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলো তাঁদের জুটি। কিন্তু বেশীদিন সম্পর্ক টেকে নি তাঁদের। ২০২৪-এর দ্বিতীয়ার্ধেই শোনা গিয়েছিলো ভাঙনের গুঞ্জন। গ্যালারিতে ধনশ্রী’র (Dhanashree Verma) অনুপস্থিতি, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের বিয়ে ও দাম্পত্য সংক্রান্ত যাবতীয় পোস্ট মুছে ফেলা থেকে দুইয়ে দুইয়ে চার করে নিতে অসুবিধা হয় নি কারও। গত ফেব্রুয়ারি মাসে আইনি বিচ্ছেদের আবেদন করেন তাঁরা। ছয় মাসের কুলিং-অফ পিরিয়ড রাখতে চেয়েছিলো বান্দ্রা ফ্যামিলি কোর্ট। কিন্তু বম্বে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয় তারা। মার্চে আইপিএল শুরুর আগেই ডিভোর্স চূড়ান্ত হয় ধনশ্রী ও চাহালের (Yuzvendra Chahal)।
Read More: বুমরাহ’কে বাড়তি বিশ্রাম ভারতের, পেস আক্রমণের ভার কার্যত একাই সামলাচ্ছেন এই তারকা !!
বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম, স্বীকারোক্তি চাহালের-

সম্প্রতি ইউটিউবার রাজ শামানি’র পডকাস্ট অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন যুজবেন্দ্র চাহাল (Yuzvendra Chahal)। ধনশ্রীর সাথে বিবাহবিচ্ছেদের যন্ত্রণা যে তাঁকে রীতিমত বিপর্যস্ত করে তুলেছিলো তা স্বীকার করে নিয়েছেন হরিয়ানার স্পিন তারকা। তিনি বলেছেন, “সেই সময় আমি চার-পাঁচ মাস চূড়ান্ত অবসাদে ভুগছিলাম। আমার অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হত। চোখে অন্ধকার দেখতাম। শুধুমাত্র কয়েকজন এই বিষয়গুলি জানেন, যাঁরা ঐ সময় আমার সাথে ছিলেন। তা ছাড়া আর কারও সাথে এই অনভূতিগুলি ভাগ করে নিই নি। ঐ সময়ে আমি আত্মহত্যা করার কথাও ভেবেছি। কারণ আমার মস্তিষ্ক সম্পূর্ণভাবে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলো।” “উদ্বেগের কারণে দিনে মাত্র দুই থেকে তিন ঘন্টাই ঘুমোতে পারতাম, বাকি সময়টা কাটত বিশেষ বন্ধুদের সাথে কথাবার্তা বলে,” সংযোজন তাঁর।
২০২৩ সালে শেষবার দেশের হয়ে খেলেছেন যুজবেন্দ্র চাহাল (Yuzvendra Chahal)। ২০২৪-এর টি-২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকলেও মাঠে নামার সুযোগ পান নি। ব্যক্তিগত জীবনের বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছিলো ক্রিকেটেও, মেনে নিয়েছেন তিনি। রাজ শামানি’র পডকাস্ট অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “সম্পর্ক নিয়ে এতটাই উদ্বেগের মধ্যে ছিলাম যে ক্রিকেট মাঠ থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম। আমি মাঠে আমার ১০০ শতাংশটা দিতে পারছিলাম না। তাই জন্যই ক্রিকেট থেকে বিরতি নিতে হয়েছিলো। জীবনে যাবতীয় সুযোগসুবিধা থাকা সত্তেও খালি খালি লাগছিলো। আপনার কাছে বিলাসব্যসনের যাবতীয় উপকরণ থাকতে পারে, তা সত্ত্বেও আনন্দের অনুভূতিটা হারিয়ে ফেলতে পারেন। তখনই এইসব চিন্তাভাবনা মাথায় আসে। মনে হয়-এই জীবন রেখে লাভ কি? তার চেয়ে এটা শেষই করে ফেলা যাক।”
প্রতারক নন, সাফ জানালেন চাহাল-

বিবাহবিচ্ছেদের পর চাহালের গায়ে লেগেছিলো ‘প্রতারক’ তকমা। সেই আক্রমণ যে যন্ত্রণা দিয়েছে তাঁকে, তা মেনে নিয়েছেন তারকা স্পিনার। বলেছেন, “আমি কারও সাথে প্রতারণা করি নি। আমি আমার কাছের মানুষদের জন্য হৃদয় দিয়ে ভাবি। কারও থেকে কিচ্ছু চাই নি। শুধু দিয়েই গিয়েছি। আমার দুই বোন রয়েছে। মহিলাদের কি করে সম্মান দিতে হয় তা আমি জানি।” ধনশ্রীর সাথে বিচ্ছেদ পর্ব চলাকালীন আরজে মাহবেশের সাথে নানা অনুষ্ঠানে ফ্রেমবন্দী হয়েছিলেন চাহাল (Yuzvendra Chahal)। তা নিয়েও শুরু হয়েছিলো চর্চা। সেই প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “কারও সাথে একবার দেখা গেলেই অনেকে অনেক কিছু ভেবে ফেলেন আর যা খুশি লিখতে থাকেন ভিউ পাওয়ার লক্ষ্যে। একবার প্রতিক্রিয়া দিয়ে ফেললেন মুশকিল। তখন বারবার সেটা নিয়ে আপনাকে তাঁরা খোঁচা দেওয়া হয়। যদি আপনি কিছু বলে ফেলেন সেই আশায়।”