Asia Cup 2025: গত এপ্রিল মাসে কাশ্মীরের পহলগামে নিরছ পর্যটকদের উপর গুলি চালিয়েছিলো পাক মদতপুষ্ট চার জঙ্গি। প্রাণ হারান ২৬ জন। এই ঘটনার পর ৭ তারিখ ভোররাতে পাক ভূখণ্ড ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গিঘাঁটিতে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী। ধ্বংস করে দেওয়া হয় সেগুলি। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিলো ‘অপারেশন সিঁদুর।’ প্রত্যাঘাতের চেষ্টা করেছিলো পাক সেনা। কিন্তু বিশেষ ফলপ্রসূ হয় নি তা। বেশ কয়েকদিন ধরে চলে সীমান্ত সংঘর্ষ। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে এমনিতেই ভালো নয়। এই ঘটনার পর আরওই তলানিতে ঠেকেছে তা। এই পরিস্থিতিতে বহুদলীয় টুর্নামেন্টে পড়শি দেশের বিপক্ষে মাঠে নামতে বিসিসিআই অসম্মত হবে, মনে করেছিলেন দেশের ক্রিকেটজনতা। কিন্তু তা না হওয়ায় বেশ চমকেছেন তাঁরা।
Read More: এক নিমেষে আনন্দ পরিণত হচ্ছে বিষাদে, ওভাল টেস্টের একাদশে সুযোগ পাবেন না এই ক্রিকেটার !!
এশিয়া কাপে মুখোমুখি ভারত-পাক-

এশিয়া কাপ (Asia Cup 2025) আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে একটা সময় সন্দেহ ছিলো। কিন্তু গত সপ্তাহে এসিসি’র বৈঠকের পর মিলেছে সবুজ সংকেত। ২৪ জুলাই কার্গিল বিজয় দিবসের দিন পাক প্রশাসক মহসীন নকভি’র নেতৃত্বাধীন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল প্রকাশ করেছে টুর্নামেন্টের সূচি। তা দেখে চোখ কপালে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। পাকিস্তানের সাথে এক গ্রুপে রয়েছে ভারত। দুই দল শুধুমাত্র গ্রুপ পর্বে নয় বরং মুখোমুখি হতে পারে শেষের চারের লড়াই, এমনকি ফাইনালেও। পহলগামের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের পর কেটেছে মাত্র তিন মাস। এর মধ্যেই যাবতীয় বৈরিতা ভূলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নামা সম্ভব ভারতীয় ক্রিকেটারদের পক্ষে? প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ। ম্যাচের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন একাধিক রাজনৈতিক নেতা’ও।
ভারত-পাক ম্যাচ বয়কটের দাবী উঠলেও এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) মত টুর্নামেন্টে তা করার ক্ষমতা বিসিসিআই-এর নেই বলেই খবর বোর্ড সূত্রে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক বোর্ড কর্তা জানিয়েছেন, “এটা তো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নয় বরং একটি বহুদলীয় টুর্নামেন্ট। ভারত যদি এই ম্যাচ না খেলে বা সরে দাঁড়ায় সেক্ষেত্রে পাকিস্তান বড়সড় সুবিধা পেয়ে যাবে। ওদের ওয়াকওভার দেওয়ার মত ব্যাপার হবে। যেটা মোটেই কাঙ্ক্ষিত নয়।” ক্রিকেট মাঠের সমীকরণ ভুলে দেশের স্বার্থে সরেই দাঁড়াক ভারত, দাবী তুলেছেন বাংলার প্রাক্তনী শ্রীবৎস গোস্বামী। তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল ট্যুইটারে লিখেছেন, “পাকিস্তানের সাথে কোনো ক্ষেত্রেই ভারতের কোনো রকম সম্পর্ক রাখা উচিৎ নয়। একমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রে দেখা হতে পারে।”
দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নিয়ে চলছে চর্চা-

২০০৭ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শেষবার টেস্ট সিরিজ খেলেছে ভারতীয় দল। ২০১২-১৩ মরসুমে খেলেছে শেষ ওয়ান ডে সিরিজ। এরপর থেকেই শুধুমাত্র বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, টি-২০ বিশ্বকাপ বা এশিয়া কাপের (Asia Cup) মত বহুদলীয় প্রতিযোগিতায় দেখা হয়েছে দুই দেশের। অপারেশন সিঁদুরের পর সেই টুর্নামেন্টগুলি থেকেও পড়শি দেশকে বয়কট করার দাবী তুলেছিলেন ভারতীয় সমর্থকেরা। কিন্তু সেই পথে বোর্ড যে হাঁটবেনা তা স্পষ্ট এশিয়া কাপের সূচি থেকেই। ১৪ সেপ্টেম্বর রাখা হয়েছে গ্রুপ পর্বের ভারত-পাক (IND vs PAK) দ্বৈরথ। আরও দু’বার মুখোমুখি হতে হবে দুই পক্ষ। সূচি সামনে আসার পরেই কটাক্ষ করেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। যদি বহুদলীয় টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা যায় তাহলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নয় কেন? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। ভারত বা পাকিস্তানের মাটিতে না হলেও দুবাই বা আবু ধাবিতে হোক দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, উড়ে এসেছে তীর্যক মন্তব্য।