ভারতের জার্সিতে অন্যতম সফল বোলার ভুবনেশ্বর কুমার (Bhuvneshwar Kumar) । সাদা বলের ক্রিকেটে বহু সাফল্যের কারিগর তিনি। এমনকি টেস্টেও ইংল্যান্ডের আবহাওয়া ও পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত বোলিং-এর রেকর্ড রয়েছে তাঁর। ২১ টেস্টে নিয়েছেন ৬৩ উইকেট। ১২১ একদিনের ম্যাচে তাঁর উইকেট সংখ্যা ১৪১। কুড়ি-বিশের খেলায় ভুবি ৮৭ ম্যাচে নিয়েছেন ৯০ উইকেট। একটা সময় টি-২০তে ভারতের সফলতম বোলার ছিলেন তিনিই। কিন্তু টিম ইন্ডিয়ার (Team India) হয়ে তাঁর কেরিয়ার গ্রাফ নীচের দিকে নামতে শুরু করে ২০২২ সালে।
জানুয়ারি মাসের পর থেকেই একদিনের দলে ব্রাত্য করা হয় ভুবনেশ্বরকে (Bhuvneshwar Kumar)। টি-২০ বিশ্বকাপ এবং নিউজিল্যান্ড সফরের পর কুড়ি-বিশের ক্রিকেট থেকেও বাদ পড়েন তিনি।গত দুটি আইপিএল মরসুম’ও ভালো কাটে নি ভুবনেশ্বর কুমারের। তাঁর দল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ দুইবারই প্লে-অফ পর্বে জায়গা করে নিতে পারে নি। বল হাতেও চেনা ছন্দে দেখা যায় নি তাঁকে । ২০২২ সালে ১৪ ম্যাচে প্রায় ৩২ বোলিং গড়-সহ ১২ উইকেট নেন। আর ২০২৩-এ ১৪ ম্যাচে প্রায় ২৭ গড়ে তাঁর ঝুলিতে জমা হয় মাত্র ১৬ উইকেট।
আঁটোসাঁটো বোলিং-এর জন্য সুপরিচিত ভুবনেশ্বরের (Bhuvneshwar Kumar) ইকোনমি রেট’ও বেড়েছিলো অনেকটাই। ২০২২-এ ছিলো ৭.৩৪ আর ২০২৩-এ তা দাঁড়িয়েছিলো ৮.৩৩। ভারতীয় দলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেও বাদ পড়েছিলেন। এছাড়াও এশিয়া কাপ বা একদিনের বিশ্বকাপের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতার প্রাথমিক দলেও রাখা হয় নি তাঁকে। ভারতীয় ক্রিকেটে ভুবনেশ্বর কুমার (Bhuvneshwar Kumar) অধ্যায় শেষ হয়ে গিয়েছে বলেই ধরে নিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। মাত্র ৩৩ বছর বয়স তাঁর, বাদ পড়লেও এখুনি থামতে চান নি ভুবি স্বয়ং। তিনি যে ফুরিয়ে যান নি, তা উত্তরপ্রদেশের পেসার বুঝিয়ে দিলেন সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে।
Read More: World Cup 2023: “এমনটা তো হওয়ারই ছিলো…” আফগানদের বিরুদ্ধে হারের পর পাকিস্তানকে তীব্র কটাক্ষ বীরেন্দ্র শেহবাগের !!
কর্ণাটক ধরাশায়ী ভুবির বলের জাদুতে-
চলছে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি (Syed Mushtaq Ali Trophy)। ভারতের ঘরোয়া টি-২০ প্রতিযোগিতাকেই জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন অভিজ্ঞ পেসার ভুবনেশ্বর কুমার (Bhuvneshwar Kumar)। আজ কর্ণাটকের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিলো ভুবির দল উত্তরপ্রদেশের। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে কর্ণাটক নিঃসন্দেহে অন্যতম শক্তিশালী দল। মায়াঙ্ক আগরওয়াল (Mayank Agarwal), মনীশ পাণ্ডে, দেবদত্ত পাডিক্কালের (Devdutt Padikkal) মত নামী তারকা খেলেন কর্ণাটকের হয়ে। বোলিং বিভাগে রয়েছেন কৃষ্ণাপ্পা গৌতম, বিদ্ব্যাৎ কাভেরাপ্পা, বিজয় কুমার বৈশাখদের মত ঘরোয়া ক্রিকেট পরিসরের বড় নামেরা। এহেন কর্ণাটকের বিরুদ্ধেই সাদা বল হাতে জ্বলে উঠলেন ভুবনেশ্বের (Bhuvneshwar Kumar)। এক বা দুটি নয়, পাঁচ উইকেট নিয়ে একাই ভাঙলেন প্রতিপক্ষ ব্যাটিং-এর মেরুদণ্ড। উত্তরপ্রদেশকে এনে দিলেন বড় জয়।
প্রথমে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে ১৯৬ রান যোগ করে উত্তরপ্রদেশ। তাদের হয়ে ৭৭ রান করেন ওপেনার অভিষেক গোস্বামী। নীতিশ রানা করেন ২৯ বলে ৪০ রান। ভারতের জাতীয় দলের আরেক তারকা রিঙ্কু সিং-এর ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ঝোড়ো ৩১* রানের ইনিংস। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিলো কর্ণাটক। যশ দয়াল, শিবা সিং-রাও বেশ কিছু উইকেট নিয়ে এগিয়ে দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশকে। কিন্তু জয়ে সিলমোহর দেয় ভুবনেশ্বর কুমারের বোলিং পারফর্ম্যান্স।
ডেথ ওভারে পুরনো বল হাতে জ্বলে ওঠেন ভুবি। ১৭তম ওভারে তুলে নেন তিন উইকেট। ফেরেন অভিবন মনোহর, মনোজ ভাংড়ে এবং শুভাঙ্গ হেগড়ে। ১৯তম ওভারে ফিরে এসে বিজয় কুমার বৈশাখ এবং বিদ্ব্যাৎ কাভেরাপ্পাকে বোল্ড করে কর্ণাটক ইনিংসে ইতি টেনে দেন ভুবনেশ্বর (Bhuvneshwar Kumar)। কর্ণাটক থামে ১৫৬ রানে। ১৬ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে জাতীয় টি-১০ দলে প্রত্যাবর্তনের দাবী জোরালো করলেন ভুবনেশ্বর কুমার।