IPL: গত বছরের জুলাইতে গণ অভ্যুত্থান হয়েছিলো বাংলাদেশে। ক্ষমতাচ্যুত হতে হয় শেখ হাসিনা’কে। দিনকয়েকের অচলাবস্থার পর নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূসের তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু অরাজকতায় রাশ টানা যায় নি তাতেও। আইনশৃঙ্খলার অবনতি, সংখ্যালঘুরের উপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়েছে দিনের পর দিন। বাংলাদেশে অন্ধ ভারতবিদ্বেষ মাথাচাড়া দিলেও তা রুখতে বিশেষ করে ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। বরং ইউনূস স্বয়ং একাধিকবার বিতর্কিত মন্তব্য করে সেই ভারত বিরোধিতার পালে হাওয়া যুগিয়েছেন। বিরক্ত দিল্লী ইতিমধ্যেই কূটনৈতিক স্তরে ঢাকা’কে যোগ্য জবাব দেওয়ার পথে হেঁটেছে। বন্ধ করা হয়েছে একাধিক স্থলবন্দর। সঙ্কটে পড়শি দেশের বস্ত্রশিল্প। এবার ক্রিকেটের আঙিনাতেও তাদের চাপে ফেলার পথে হাঁটছে ভারত।
Read More: অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হলো ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ, রাজনৈতিক টানাপোড়নে সিদ্ধান্ত BCCI’র !!
বাদ পড়তে পারেন বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা-

আগামী অগস্ট মাসে বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার কথা ছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। ওয়ান ডে ও টি-২০ সিরিজের সূচিও প্রস্তুত ছিলো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেছে বিসিসিআই। অগস্টে পদ্মাপারে পা রাখা সম্ভব নয় ভারতীয় দলের, সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা। সিরিজ স্থগিত হওয়ায় আপাতত মাথায় হাত বিসিবি’র। আগামী দুই বছরের জন্য সম্প্রচার সত্ত্ব বিক্রি করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। ভারতের এই বেঁকে বসার পিছনে কেন্দ্রীয় সরকারের হাত রয়েছে বলে মনে করছে ক্রিকেটমহল। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে গত এক বছরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যে অবনতি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলাদেশ সফর আপাতত বাতিল করার পরামর্শ বিসিসিআই-কে দিয়েছেন সরকারী আধিকারিকেরা। অদূর ভবিষ্যতেও এই সিরিজ দু’টি হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মত বিশেষজ্ঞমহলের।
বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পরবর্তী পদক্ষেপ হতে পারে আইপিএলে (IPL) সে দেশের ক্রিকেটারদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা, মনে করছেন অনেকে। এনওসি সংক্রান্ত জটিলতায় এমনিতেই টাইগার্স ক্রিকেটারদের নেওয়ার ব্যাপারে দ্বিধায় থাকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি। সাম্প্রতিক মেগা নিলামেও একঝাঁক বাংলাদেশী তারকা ছিলেন অবিক্রিত। শেষমেশ মরসুমের শেষ পর্যায়ে মিচেল স্টার্ক দেশে ফিরে যাওয়ার পর বদলি হিসেবে মুস্তাফিজুর রহমান’কে সই করিয়েছিলো দিল্লী ক্যাপিটালস। অতীতেও মুস্তাফিজুর (Mustafizur Rahman) ছাড়া কেবল শাকিব আল হাসান নিয়মিত আইপিএল (IPL) খেলেছেন। লিটন দাস, মাশরাফি মর্তুজা, মহম্মদ আশরাফুল’রা গুটিকয় ম্যাচে মাঠে নামলেও বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারেন নি আইপিএলে। ভবিষ্যতে সেই সুযোগটুকুও বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের জন্য।
অতীতে পাক তারকাদের ব্যান করেছে ভারত-

২০০৮ সালে আইপিএলের (IPL) প্রথম মরসুমে ভারত ও অন্যান্য দেশের ক্রিকেট তারকাদের পাশাপাশি মাঠে দেখা গিয়েছিলো পাকিস্তানের খেলোয়াড়দেরও। সলমন বাট, উমর গুল, মহম্মদ হাফিজ, শোয়েব আখতাররা ছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে। শাহিদ আফ্রিদি খেলেছেন ডেকান চার্জার্সের জার্সিতে। কামরান আকমল ছিলেন রাজস্থানে। বাম হাতি পেসার সোহেন তনবীর জিতেছিলেন সর্বোচ্চ উইকেটসংগ্রাহকের পার্পল ক্যাপ’ও। কিন্তু ২৬/১১’র মুম্বই হামলার পর বদলে যায় পরিস্থিতি। পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের নিষিদ্ধ করা হয় আইপিএল থেকে। এরপর দেড় দশকেরও বেশী সময় কেটে গেলেও ওঠে নি সেই নিষেধাজ্ঞা। এখনও পাকিস্তানের তারকাদের ছাড়াই হয় আইপিএল (IPL)। বিশ্বের সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে জাত চেনানোর সুযোগ পান না বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ান। মহম্মদ আমিররা।