রোহিত সরতেই ছড়িয়েছিলো আশঙ্কা। শেষমেশ সত্যি হলো সেটাই। গত ১২ তারিখ একটি দীর্ঘ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ঘোষণা করেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ২০১১ সালে কিংসটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলেছিলেন তিনি। ১৪ বছরব্যপী কেরিয়ারে ইতি টানলেন সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলে। ১২৩ ম্যাচে ৯২৩০ রান করেই থামলেন কোহলি। সুযোগ ছিলো শচীন, গাওস্কর ও দ্রাবিড়ের পর চতুর্থ ভারতীয় হিসেবে ১০০০০ রানের মাইলস্টোন স্পর্শ করার। কিন্তু সেই কীর্তি আর স্থাপন করতে পারলেন না তিনি। ৩০টি শতরান রয়েছে বিরাটের (Virat Kohli)। এর মধ্যে ৭ দ্বিশতরান। ঝুলিতে অর্ধশতকের সংখ্যা ৩১। এই মুহূর্তে ৩৬ বছর বয়স তাঁর। সমস্যা নেই ফিটনেসেও। তাও কেন টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি? প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ক্রিকেটমহল।
Read More: টেস্ট দলের নতুন অধিনায়ক বেছে নিলো বোর্ড, দায়িত্বে নয়া সহ-অধিনায়ক’ও !!
কোহলিকে ছাড় দিতে রাজী ছিলো না বোর্ড-

২০১৯-এর পর থেকেই টেস্টে সেরা ছন্দে ছিলেন না বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। গত পাঁচ বছরে শতরান করেছেন মাত্র তিনটি। গড়’ও ৫৫.১০ থেকে কমতে কমতে এসে দাঁড়িয়েছে ৪৬.৮৫তে। শেষ ২৪ রানে ভারতীয় দলের কিংবদন্তি তারকার টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটিং গড় ছিলো ৩২.৫৬। সাম্প্রতিক অতীতে বাংলাদেশ বা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে সাফল্য পান নি তিনি। অস্ট্রেলিয়ার সফরের শুরুটা ভালো করেছিলেন। পার্থ-এ এসেছিলো শতরান। কিন্তু তারপর বাকি চারটে টেস্টের একটি ইনিংসেও রানের মুখ দেখেন নি কোহলি (Virat Kohli)। অফস্টাম্পের বাইরের বলে একের পর এক খোঁচা দিয়ে ক্যাচ তুলে এসেছেন উইকেটরক্ষক বা স্লিপ ফিল্ডারদের হাতে। লাগাতার ব্যর্থতাই তাঁকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে, প্রথমে মনে করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কয়েকদিন কাটতেই সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথে নাকি নেতার আসন ফিরে পেতে চেয়েছিলেন কোহলি (Virat Kohli)। কিন্তু রাজী হয় নি বোর্ড। তখনই মনক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন তারকা ক্রিকেটার। সতীর্থদের নাকি বলেওছিলেন যে টেস্টে আর তাঁর কিছু দেওয়ার নেই। সেই মন্তব্য যে নিছক হতাশা থেকে ছিলো না তা স্পষ্ট হয়েছে গত কয়েক দিনে। কোহলি অবসর নিতে পারেন, এই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিলো রোহিত সরে দাঁড়ানোর পরেই। ইংল্যান্ড সফরের আগে বিরাটকে (Virat Kohli) সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছে বোর্ড, চলছিলো সেই জল্পনাও। কিন্তু বর্তমানে সামনে এসেছে একেবারে উলটো ছবি। সংবাদমাধ্যমের একটি রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে যে বিরাটকে ভিআইপি ট্রিটমেন্ট দিতে রাজী ছিলো না বিসিসিআই। অফ ফর্মের কারণে তিনি যে আর দলে ‘অটোমেটিক চয়েজ’ নন, স্পষ্ট করে দেওয়া হয় তাও। দেওয়াল লিখন পড়তে পেরেই সরে দাঁড়িয়েছেন তারকা খেলোয়াড়।
বিতর্কিত মন্তব্য কোহলির কোচের-

বিরাটের (Virat Kohli) অবসরে রয়েছে বিসিসিআই যোগ, ইঙ্গিত দিল্লী রঞ্জি দলের কোচ সরণদীপ সিং-এর। “আমি যখন জানতে পারি যে বিরাট কোহলি অবসর নিয়েছে, তখন বেশ অবাকই হয়েছিলাম। বিরাট কোন কোন রঞ্জি ম্যাচ খেলতে চায় সে সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছিলাম। ও খেলার ব্যপারে আগ্রহও দেখিয়েছিলো। ও ইংল্যান্ড সফরের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। বলেছিলো কি ভাবে ইংল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ জিতবে। যে ব্যক্তি ইংল্যান্ড যাওয়ার জন্য নিয়মিত প্রস্তুতি সারছিলো, সেই আজ নাকি ইংল্যান্ড যাচ্ছে না!” জিও হটস্টারকে দেওয়া একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে বিস্ময় ব্যক্ত করেছেন তিনি। আরও জানিয়েছেন, “দিনকয়েক আগেও আমার সাথে মেসেজে কথা হয়েছে ওর, তখনও অবসরের কোনো আভাস দেয় নি ও।” যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা সেই বিরাট (Virat Kohli) অবশ্য রয়েছেন লাইমলাইট থেকে দূরে। গতকাল সস্ত্রীক বৃন্দাবন গিয়েছিলেন তিনি।