২০২৪-এর টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের (BAN) পারফর্ম্যান্স আবারও এসেছে আতসকাঁচের তলায়। তারা ছিলো D গ্রুপে। নেপাল, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে খেলতে হয়েছিলো টাইগার্সদের। এবার আইসিসি’র তরফে সিডিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। ডি গ্রুপে প্রথম ‘সিড’ বা শীর্ষবাছাই হিসেবে ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা (SA)। D2 বা দ্বিতীয় বাছাই ছিলো লঙ্কানরা। কিন্তু ছন্দ হারানো শ্রীলঙ্কাকে (SL) হারানোয় বাংলাদেশের সামনে চলে এসেছিলো সুপার এইটে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ। তা হাতছাড়া করেন নি শাকিব, মাহমুদুল্লাহ’রা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারলেও নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় তাঁদের পৌঁছে দিয়েছিলো টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) শেষ আটে।
সুপার এইট পর্বে প্রথম গ্রুপে ছিলো বাংলাদেশ। তাদের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিলো অস্ট্রেলিয়া, ভারত (IND) ও আফগানিস্তানের। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ডাকওয়ার্থ ল্যুইস নিয়মে হারে তারা। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে অবশ্য গড়তে পারে নি কোনো প্রতিরোধই। অ্যান্টিগার স্যর ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে দেখা যায় নাজমুল হোসেন শান্ত’র (Najmul Hossain Shanto) দল’কে। জোড়া হারের পরেও সেমিফাইনালে যাওয়ার ক্ষীণ আশা ছিলো তাদের সামনে। অস্ট্রেলিয়া আচমকাই আফগানিস্তানের (AFG) বিরুদ্ধে হেরে যাওয়ায় ভেসে ছিলো বাংলাদেশ। এরপর টিম ইন্ডিয়া সেন্ট লুইসের মাঠে অজিদের হারানোয় বেড়েছিলো তাদের সম্ভাবনা। কিন্তু আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সেই সুযোগের সদ্বব্যবহার করতে পারে নি টাইগার্সরা। ম্যাচ হেরে হাতছাড়া করে সেমিফাইনালে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ।
Read More: IND vs SA, T20 World Cup 2024 Final: বাদ পড়ছেন শিবম দুবে, ফাইনাল ম্যাচের আগে বড় পরিবর্তন ভারতীয় দলে, এন্ট্রি নিচ্ছেন এই তরুণ তুর্কি !!
রুষ্ট সমর্থকেরা, ক্ষোভের মুখে দল-
১৯৮৬ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জায়গা করে নিয়েছিলো বাংলাদেশ দল (BAN)। এরপর কেটে গিয়েছে প্রায় চার দশক। কিন্তু এখনও কোনো উল্লেখযোগ্য সাফল্য নেই তাদের। শিবরাত্রির সলতের মত কেবল একটি অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ (ICC U19 World Cup) রয়েছে তাদের ট্রফি ক্যাবিনেটে। ক্রিকেটদুনিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধ ফ্যানবেস রয়েছে তাদের, তবুও মাঠের পারফর্ম্যান্সের গ্রাফ এহেন নিম্নগামী হওয়ায় ক্ষোভের আবহ তৈরি হয়েছে পদ্মার পাড়ে। আফগানিস্তানের (AFG) মত দেশ, যারা দেড় দশক আগেও আইসিসি’র পঞ্চম ডিভিশনে জাপান, কোরিয়ার মত দেশের বিরুদ্ধে খেলত, তারা যদি দ্রুত উন্নতি করে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মত প্রথম সারির দলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে তাহলে বাংলাদেশের সমস্যা কোথায়? লিটন (Litton Das), শান্ত, শাকিবদের কাছে জবাবদিহি চাইছেন সমর্থকেরা।
টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) সুপার এইট পর্বের শেষ খেলায় আফগানিস্তানকে মাত্র ১১৫ রানে আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছিলো বাংলাদেশ। ১২.৫ ওভারের মধ্যে লক্ষ্য তাড়া করতে পারলে অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তানকে টপকে সেমিফাইনালে পা রাখার সুযোগ ছিলো তাদের সামনে। কিন্তু সেই চেষ্টাই যেন করেন নি বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা। পিঠ বাঁচিয়ে কোনোক্রমে জয়ই লক্ষ্য ছিলো তাদের। মাহমুদুল্লাহ, শাকিব আল হাসানের (Shakib Al Hasan) মত সিনিয়র প্লেয়ার যেভাবে উইকেট হারিয়েছেন তা ক্ষমার অযোগ্য বলে মনে করছেন সমর্থকেরা। মরিয়া আফগানিস্তানের সামনে শেষমেশ পরাজয়ই জোটে বাংলাদেশের ভাগ্যে। ১০৫ রানে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। প্রথমবার সেমিফাইনালে পৌঁছে ইতিহাস লেখেন রশিদ খান (Rashid Khan), গুলবদিন নাইব’রা।
লজ্জার হারের পর সোশ্যাল মিডিয়াতে সরব হয়েছিলেন টাইগার্স অনুরাগীরা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনেও ধরা পড়েছিলো গণবিক্ষোভ। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন নিজেদের বিরক্তি জাহির করেছিলেন প্রকাশ্যেই। জানা গিয়েছে গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে দেশে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা। বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য নাকি ঢাকার বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন একঝাঁক সমর্থক। তাদের নজর এড়িয়ে কোনোক্রমে বিমানবন্দর ছাড়েন ক্রিকেটাররা। প্রসঙ্গত এই প্রথম নয়, এর আগে গত বছরের ওডিআই বিশ্বকাপে (ICC World Cup) হতশ্রী পারফর্ম্যান্সের পরও সমর্থকদের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিলো টিম টাইগার্স’কে। সেবার তারকা শাকিব আল হাসানকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া’ ভুয়া’ রব উঠেছিলো মাঠেই। আক্রমণের মুখে পড়েন তাস্কিন, লিটনরাও।