ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের আঙিনায় গত কয়েক বছরে নিজের স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করে নিয়েছেন দিল্লীর আয়ুষ বাদোনি (Ayush Badoni)। মাত্র ১৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচেই করে ফেলেছেন ১৩৩০ রান। ব্যাটিং গড় ৬৬.৫০। লিস্ট-এ ক্রিকেটে এখনও অবধি খেলেছেন ১৮টি ম্যাচ। প্রায় ৩৯ গড়ে তাঁর সংগ্রহ ৫৪০ রান। লক্ষ্ণৌর জার্সিতে আইপিএলেও সফল আয়ুষ। মোট ৮৯ টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ২৯.৫৪ গড়ে তাঁর সংগ্রহ ১৫৮২ রান। মাত্র ২৫ বছর বয়সেই দিল্লীর অধিনায়কও নির্বাচিত হয়েছেন। আগামীতে রাজ্য বা আইপিএল দলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আঙিনাতেও ঝড় তুলতে পারেন আয়ুষ (Ayush Badoni), ভবিষ্যদ্বাণী করছেন অনেক বিশেষজ্ঞই। সম্প্রতি দলীপ ট্রফিতে নর্থ জোনের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে ইস্ট জোন’কে কার্যত উড়িয়ে দিলেন ব্যাট হাতে। ছেলেখেলা করলেন প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণ নিয়ে।
Read More: নাইট শিবিরের ‘চোখের বালি’ ডোয়েন ব্র্যাভো, আইপিএল শুরুর আগেই হতে পারেন ছাঁটাই !!
ঝোড়ো দ্বিশতক আয়ুষ বাদোনি’র-

বেঙ্গালুরুর সেন্টার অফ এক্সেলেন্সের মাঠে দলীপ ট্রফির (Duleep Trophy) কোয়ার্টার ফাইনালে দাপট নর্থ জোনের। নূন্যতম প্রতিরোধও গড়ে তুলতে পারলো না ইস্ট জোন। প্রথম ইনিংসে ৪০৫ রান তুলেছিলো উত্তরাঞ্চল। এরপর প্রতিপক্ষকে ২৩০ রানেই গুটিয়ে দেয় তারা। ১৭৫ রানের লিডের সুবাদে কার্যত সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েই গিয়েছিলো নর্থ জোনের। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রতিপক্ষের প্রতি বিন্দুমাত্র মায়াদয়া দেখান নি তাদের ব্যাটাররা। শুভমান গিলের (Shubman Gill) অনুপস্থিতি সত্ত্বেও দ্বিতীয় ইনিংস রানের পাহাড় গড়ে তারা। শুরুতে ২১ রান করে আউট হয়েছিলেন ওপেনার শুভম খাজুরিয়া। পরবর্তী তিনজন ব্যাটারই পেরোন তিন অঙ্কের মাইলস্টোন। অঙ্কিত কুমার (১৯৮), যশ ধূল (১৩৩) করেন। আয়ুষ বাদোনির (Ayush Badoni) ব্যাট থেকে আসে ঝলমলে দ্বিশতরান।
যশ ধুল সাজঘরে ফেরার পর মাঠে নামেন আয়ুষ বাদোনি (Ayush Badoni)। অধিনায়ক অঙ্কিত কুমারের (Ankit Kumar) সাথে লম্বা জুটি গড়েন তিনি। মহম্মদ শামি, মুকেশ কুমারদের (Mukesh Kumar) মত আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পেসাররা ছিলেন ইস্ট জোনের বোলিং লাইন-আপে। কিন্তু বেঙ্গালুরুর বাইশ গজে বেশ ফিকে দেখিয়েছে তাঁদের। অঙ্কিত-আয়ুষের (Ayush Badoni) ধুন্ধুমার ব্যাটিং রোখার কোনো পরিকল্পনা চোখে পড়ে নি তাঁদের বোলিং-এ। বাংলার আরেক পেসার সূরজ সিন্ধু জয়সওয়ালও ছিলেন বেশ ম্রিয়মান। ১৯৮ করে অঙ্কিত ফেরার পরেও আক্রমণ চালিয়ে যান আয়ুষ (Ayush Badoni)। পেরিয়ে যান দুর্দান্ত দ্বিশতক। শেষমেশ ১৩টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে তাঁর নামের পাশে যখন ২২৩ বলে ২০৪ রান, তখন ডিক্লেয়ার করে নর্থ জোন। সময়ের অভাবে আর খেলা এগোয় নি।
কাশ্মীরি তারকার নজির দলীপ ট্রফিতে-

প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সুবাদে দলীপ ট্রফির সেমিফাইনালে নর্থ জোন। অঙ্কিত কুমার, আয়ুষ বাদোনিদের (Ayush Badoni) ছাপিয়ে এই ম্যাচে সংবাদমাধ্যমের চর্চার কেন্দ্রে জায়গা করে নিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের তরুণ পেসার আকিব নবি (Aquib Nabi)। ইস্ট জোনের বিরুদ্ধে বল হাতে মাত্র ২৮ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে চার উইকেট এসেছে পরপর চারটি ডেলিভারিতে। ৫৩তম ওভারে বিরাট সিং-কে বোল্ড করে ধ্বংসযজ্ঞের শুরুটা করেছিলেন আকিব। ওভারের বাকি দু’টি বলে তিনি সাজঘরের পথ দেখান মনীষী ও মুক্তার আহমেদকে। পরবর্তী ওভারের প্রথম বলেই সূরজ সিন্ধু জয়সওয়ালকেও ফেরান কাশ্মীরের তারকা। নাম তুলে নেন রেকর্ড বইয়ের পাতায়। তাঁর পঞ্চম শিকার মহম্মদ শামি। গত বছর রঞ্জি ট্রফিতে সফলতম পেসার ছিলেন আকিব। সেই সাফল্য যে ‘ফ্লুক’ ছিলো না তা দলীপ ট্রফিতে দেখিয়ে দিলেন তিনি।