শচীন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar), নামটার সঙ্গেই কোটি কোটি ভারতীয়ের আবেগ জড়িয়ে। ৮০’র দশকের শেষ থেকে নতুন শতাব্দীর প্রথম দেড়টা দশক ব্যাট হাতে বাইশ গজ রাজ করেছেন। কাঁধে করে বয়ে নিয়ে গিয়েছেন টিম ইন্ডিয়াকে। ১০০ শতরান, প্রায় ৩৫০০০ আন্তর্জাতিক রানের মালিক শচীনকে ভারতবাসী ভালোবেসে নাম দিয়েছে ‘ক্রিকেট ঈশ্বর।‘ কিংবদন্তি ক্রিকেটারের পুত্র অর্জুন’ও (Arjun Tendulkar) পা রেখেছেন ক্রিকেটের দুনিয়ায়। ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেট এবং আইপিএলের আসরে নিজের পায়ের তলার মাটির সন্ধানে রয়েছেন তিনি।
শচীনের (Sachin Tendulkar) উত্থান যেমন রকেটের গতিতে হয়েছিলো, মাত্র ১৬ বছর বয়সে দুর্ধর্ষ পাক বোলিং-এর মুখোমুখি হয়েছিলেন টেস্ট ক্রিকেটে, সেই একই পথে এগোয় নি পুত্র অর্জুনের ক্রিকেট কেরিয়ার। বরং বেশ মন্থর গতিতেই এগোচ্ছে তা। বর্তমানে ২৪ বছর বয়স অর্জুন তেন্ডুলকরের (Arjun Tendulkar)। এখনও জাতীয় দলের ধারেকাছেও নেই তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বইয়ের হয়ে যথেষ্ট সুযোগ না পাওয়ায় পাড়ি দিয়েছেন গোয়াতে। সেখানেও বিশেষ সুবিধা করতে পারছেন না শচীন তেন্ডুলকরের পুত্র। এর আগে গত ২৮ জুলাই প্রকাশিত হওয়া রঞ্জি ট্রফির সম্ভাব্য ক্রিকেটারদের তালিকায় ছিলেন না অর্জুন। সাদা বলের ফর্ম্যাটে তাঁকে রাখা হলেও গোয়ার হয়ে বিজয় হাজারে ট্রফিতেও জাত চেনাতে পারছেন না তিনি। ক্রিকেট কেরিয়ারকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে রীতিমত সংঘর্ষ করতে হচ্ছে শচীন তেন্ডুলকরের পুত্রকে।
Read More: “সিলেকশন নয়, রিজেকশন হয়…” টিম ইন্ডিয়ার নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অজয় জাদেজার !!
বিজয় হাজারে ট্রফিতে লাগাতার ব্যর্থ অর্জুন-
চলছে ভারতের ঘরোয়া ওয়ান ডে প্রতিযোগিতা বিজয় হাজারে ট্রফি। গোয়া দলের হয়ে মাঠে নেমেছেন অর্জুন তেন্ডুলকর (Arjun Tendulkar)। বাম হাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার অর্জনের পারফর্ম্যান্স মোটেই আহামরি নয় গোটা টুর্নামেন্টে। গ্রুপ ই-তে সাত দলের মধ্যে অর্জুনের দল গোয়া রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। এখনও অবধি পাঁচ ম্যাচ খেলে মাত্র ১টিতে জিতেছে তারা। হারতে হয়েছে চারটি ম্যাচে। সাকুল্যে সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। গত রবিবার বাংলার বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিলো গোয়ার। রীতিমত খড়কুটোর মত উড়ে গেলো তারা। প্রথমে ব্যাটিং করে গোয়া। আকাশ দীপ (Akash Deep), শাহবাজ আহমেদ, করণ লাল (Karan Lal), মহম্মদ কাইফদের দুর্দান্ত বোলিং-এর সৌজন্যে গোয়া ইনিংস থেকে যায় ১০৬ রানেই। ব্যাট হাতে ১০ বলে শূণ্য রান করেন অর্জুন।
এরপর বল হাতেও বাংলাকে রুখতে পারে নি গোয়া। ২২.৩ ওভারের মধ্যেই জয় ছিনিয়ে নেন অনুষ্টুপ মজুমদার, অভিষেক পোড়েল’রা। ওপেনার হাবিব গান্ধী (Habib Gandhi) করেন ৪৮ রান। অভিষেক পোড়েল আউট হন ২০ রান করে। অধিনায়ক সুদীপ ঘরামি ও অলরাউন্ডার শাহবাজ আহমেদ বাংলা’কে জয় এনে দেন। বল হাতে দাগ কাটতে ব্যর্থ হয়েছেন অর্জুন তেন্ডুলকর (Arjun Tendulkar)। ৭.৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৬.১৩ ইকোনমি রেটে ৪৬ রান খরচ করেছেন তিনি। একটির বেশী উইকেট জোটে নি। গোটা টুর্নামেন্টে তাঁর উইকেট সংখ্যা মাত্র ৯। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর তালিকায় শচীন তেন্ডুলকরের (Sachin Tendulkar) পুত্রের স্থান ৪৭ নম্বরে।
IPL-এ সফল হন নি অর্জুন তেন্ডুলকর-
বেশ কয়েক বছর ধরেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI) স্কোয়াডের সদস্য অর্জুন তেন্ডুলকর (Arjun Tendulkar)। ২০২১-এ তাঁকে বেস প্রাইস ২০ লাখে দলে সামিল করেছিলো মুম্বই। পরে ২০২২-এর নিলামে ফের ৩০ লাখে দলে নেওয়া হয় শচীন তেন্ডুলকরের (Sachin Tendulkar) পুত্রকে। কিন্তু মাঠে নামা হয় নি ২০২৩-এর আগে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে প্রথম খেলার সুযোগ পান তিনি। অভিষেক ম্যাচে কেবল ২ ওভার হাত ঘোরাতে পেরেছিলেন। এরপর বেশ কিছু ম্যাচে অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) ও কোচ মার্ক বাউচার অর্জুনকে সুযোগ দিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন। সফল হন নি তিনি। কখনও অতিরিক্ত রান খরচ করেছেন, আবার কখনও উইকেট তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় শেষমেশ একাদশ থেকে বাদ পড়েন তিনি।
২০২৩-এর আইপিএলে ৪ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন অর্জুন (Arjun Tendulkar)। তিনি ৩ উইকেটের বেশী নিতে পারেন নি। রান খরচ করেছেন ওভার প্রতি ৯.৩৬ গড়ে। ব্যাট হাতেও উল্লেখযোগ্য কোনো পারফর্ম্যান্স উপহার দেন নি দলকে। করেছেন সাকুল্যে ১৩ রান। আইপিএলের মাঝপথে অর্জুনকে সরিয়ে আকাশ মাধওয়ালকে জায়গা করে দিয়েছিলো মুম্বই। তিনি বরং বেশ ভালো বোলিং করেছেন গোটা মরসুম জুড়ে। আসন্ন মরসুমের জন্যও অর্জুন তেন্ডুলকরকে (Arjun Tendulkar) ‘রিটেন’ করেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কিন্তু তিনি আদৌ কতগুলি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন, তা নিয়ে ধন্দ রয়েই গিয়েছে আপাতত।