‘হ্যান্ডশেক’ বিতর্কে এখন উত্তাল উপমহাদেশের ক্রিকেট। আর এই প্রসঙ্গে যাঁর নাম এখন আলোচনার কেন্দ্রে তিনি অ্যান্ডি পাইক্রফট (Andy Pycroft)। রবিবারের ভারত বনাম পাকিস্তান দ্বৈরথে ম্যাচ রেফারির পদে ছিলেন তিনিই। টসের সময় পাইক্রফটই নাকি পাক অধিনায়ক সলমন আলি আঘা’কে নির্দেশ দিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের সাথে হাত না মেলাতে। খেলা শেষেও অপেক্ষারত পাকিস্তান ক্রিকেটারদের এড়িয়ে মাঠ ছাড়েন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) ও শিবম দুবে (Shivam Dube)। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ড্রেসিংরুমের দরজাও বন্ধ করে দেয় টিম ইন্ডিয়া। এহেন ‘অখেলোয়াড়োচিত’ আচরণের পরেও ‘মেন ইন ব্লু’র বিরুদ্ধে চুপই থেকেছেন পাইক্রফট (Andy Pycroft), অভিযোগ এনেছে পিসিবি। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে আইসিসি’র কাছে একটি নয় বরং দু’টি চিঠিও পাঠিয়েছেন মহসীন নকভিরা।
Read More: “রাহুল গান্ধী ভালো মানুষ…” ‘হ্যান্ডশেক’ বিতর্কের মাঝেই শাহীদ আফ্রিদির মন্তব্য ঝড় তুললো ভারতের রাজনীতিতে !!
আইসিসিকে জোড়া চিঠি পিসিবি’র-

ভারতীয় ক্রিকেটাররা হাত না মেলানোয় অসন্তুষ্ট পাক দলের ম্যানেজার নাভীদ আক্রম চীমা ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র জমা করেন। এরপর পাইক্রফটকেও (Andy Pycroft) কাঠগড়ায় তোলে পিসিবি। চলতি এশিয়া কাপ (Asia Cup 2025) থেকে তাঁকে সরিয়ে না দেওয়া হলে টুর্নামেন্টই বয়কট করবেন শাহীন শাহ আফ্রিদি’রা, হুমকি দিয়েছিলো পাক ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। সেই তর্জনগর্জন বিশেষ ফলপ্রসূ অবশ্য হয় নি। গোটা ‘করমর্দন কেলেঙ্কারি’তে পাইক্রফটের বিশেষ ভূমিকা ছিলো না বলেই মনে করেছে সর্বোচ্চ ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা (ICC)। পহলগাম সন্ত্রাস ও অপারেশন সিঁদুরের পর সূর্য যে পড়শি দেশের অধিনায়কের সাথে হাত মেলাতে রাজী হবেন না তা আগেই জানতেই তিনি। তাই সলমন আলি আঘা যাতে বিড়ম্বনায় না পড়েন, তা নিশ্চিত করতেই তাঁকে হাত মেলাতে নিষেধ করেছিলেন পাইক্রফট (Andy Pycroft)।
গত পরশু দিন রাতেই পিসিবি’কে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলো আইসিসি। তাদের অনুরোধ যে রাখা হচ্ছে না, স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় তাতে। মঙ্গলবার সন্ধ্যেয় আইসিসিকে (ICC) ফের একটি ই-মেল পাঠায় পাক ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। টুর্নামেন্টে বাকি যে কয়টি ম্যাচ পাক দল খেলবে, সেগুলিতে অ্যান্ডি পাইক্রফট (Andy Pycroft) নয়, যেন রিচি রিচার্ডসন’কে (Richie Richardson) ম্যাচ রেফারি পদে দায়িত্ব দেওয়া হোক, আবেদন জানিয়েছিলো তারা। সেই চিঠির ঠিক কি উত্তর আইসিসি দিয়েছে তা স্পষ্ট নয় এখনও। আজ দুবাইয়ের মাঠে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর (UAE) বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচ রয়েছে সাইম আইয়ুব, সলমন আলি আঘাদের (Salman Ali Agha)। ম্যাচ রেফারি পদে থাকার কথা ছিলো অ্যান্ডি পাইক্রফটেরই (Andy Pycroft)। কিন্তু শেষমেশ পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে তা নিয়ে অব্যাহত ধোঁয়াশা।
নতুন নয় পাইক্রফট বনাম পাকিস্তান-

জিম্বাবুয়ের ম্যাচ রেফারির রোষানলে আগেও পড়তে হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেটকে। আজ থেকে ২৪ বছর আগে অর্থাৎ ২০০১ সালে অলরাউন্ডার শোয়েব মালিকের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অ্যান্ডি পাইক্রফট (Andy Pycroft)। আইসিসি’র আতসকাঁচের নীচে সেই সময় জায়গা করে নেন মালিক। বোলিং করার ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত পেতে বেশ কিছুদিন সময় লেগেছিলো তাঁর। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে সঈদ আজমল (Saeed Ajmal) ও মহম্মদ হাফিজের (Mohammad Hafeez) বোলিং অ্যাকশন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। হাফিজ ছিলেন মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ফলে বোলিং-এর ক্ষেত্রে তাঁর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার তেমন প্রভাব পড়ে নি। কিন্তু আজমলকে হারানো বড় ক্ষতির মুখে ফেলেছিলো পাকিস্তানকে। অ্যাকশন শুধরে তিনি পরে মাঠে ফেরেন ঠিকই, কিন্তু পুরনো ধার আর ছিলো না তাঁর বোলিং-এ।