পাকিস্তান ক্রিকেটের ডামাডোল অব্যাহত। এশিয়া কাপের (Asia Cup 2023) শেষ চারে ভরাডুবির পর বিশ্বকাপে ঘুরে দাঁড়ানোই লক্ষ্য ছিলো বাবর আজম (Babar Azam), মহম্মদ রিজওয়ানদের। ১৯৯২-এর পর দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন বুকে নিয়ে ভারতের মাটিতে পা দিয়েছিলো পাকিস্তান দল। প্রথম দুই ম্যাচে জয় ছিনিয়ে শুরুটাও আশা জাগিয়েই করেছিলো তারা। কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ভারতের বিরুদ্ধে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ৭ উইকেটের ব্যবধানে পরাজয় তাদের বেলাইন করে দেয়। এরপর আরও তিনটি ম্যাচে পরপর জোটে পরাজয়।
শেষবেলায় বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালের আশা ফের একবার জাগিয়েছিলেন বটে শাহীন (Shaheen Shah Afridi), হারিস’রা, কিন্তু শেষ অবধি শিকে ছেঁড়ে নি। গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে গিয়েই দেশে ফিরতে হয়েছে পাকিস্তানকে। লাগাতার ব্যর্থতায় জর্জরিত পাকিস্তান শিবির। সেই দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে বাধ্য হয়েই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হয়েছে আপাতত। নতুন চেয়ারম্যান জাকা আশরাফ (Zaka Ashraf) দায়িত্ব নিয়েছেন বেশী দিন হয় নি। এর মধ্যেই দলের খোলনলচে বদলে ফেলার কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি।
অধিনায়কের পদ থেকে সরেছেন বাবর আজম (Babar Azam)। টেস্ট দলের নেতা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে শান মাসুদ’কে। কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে অধিনায়ক করা হয়েছে পেসার শাহীন আফ্রিদিকে। ওডিআই ম্যাচে কে অধিনায়কত্ব করবেন তা যদিও এখনও স্থির হয় নি। কোচিং স্টাফেও আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে জাকা আশরাফের (Zaka Ashraf) নেতৃত্বাধীন বোর্ড। মিকি আর্থার, মর্ণি মর্কেলরা (Morne Morkel) সরে গিয়েছেন। প্রধান কোচ এবং ডায়রেক্টর অফ ক্রিকেট পদে নিয়োগ করা হয়েছে মহম্মদ হাফিজ’কে (Mohammad Hafeez)। বোলিং কোচ হয়েছেন সোহেল তনবীর, মুখ্য নির্বাচক করা হয়েছে ওয়াহার রিয়াজকে (Wahab Riaz)। নতুন করে দল গড়তে গিয়ে শুরুতেই অবশ্য ধাক্কা খেয়েছেন হাফিজ। তাঁর পাঠানো প্রত্যাবর্তনের প্রস্তাব নাকচ করেছেন মহম্মদ আমির।
Read More: আগামী টি-২০ বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার ভাবনায় নেই রোহিত-কোহলি, তারুণ্যেই আস্থা রাখছেন নির্বাচকেরা !!
পাকিস্তানের হয়ে খেলতে রাজী নন মহম্মদ আমির-

আধুনিক সময়ে যে কয়জন বোলার পাকিস্তান জার্সিতে বিশ্বের কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মহম্মদ আমির (Mohammad Amir)। কেরিয়ারের গোড়ায় স্পট ফিক্সিং বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। ফিরে এসে নিজেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন তিনি। বাম হাতি পেসার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ভারতকে বেশ কয়েকটি ম্যাচে বেকায়দায় ফেলেছেন। এশিয়া কাপ (Asia Cup) বা টি-২০ বিশ্বকাপের ম্যাচে বিরাট কোহলির সাথে তাঁর ডুয়েল উপভোগ্য হয়ে উঠেছিলো দর্শকদের কাছে। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (Champions Trophy) ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। সেই সাফল্যেও বড় ভূমিকা রেখেছিলেন মহম্মদ আমির (Mohammad Amir)। বর্তমানে মাত্র ৩১ বছর বয়স আমিরের। ইতিমধ্যেই তিনি বিদায় জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে। ২০২০ সালেই তুলে রেখেছেন পাকিস্তানের জার্সি।
পাকিস্তান ক্রিকেটমহলের অনেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমিরের (Mohammad Amir) কামব্যাক দেখতে মুখিয়ে রয়েছেন। শাহীন-নাসিম’দের সাথে আমির’ই পারবেন স্যুইং-এর জাদুতে পাকিস্তানকে সাফল্য এনে দিতে, মত তাঁদের। প্রতিভাবান পেসারকে দলে ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন পাক দলের নবনিযুক্ত ডায়রেক্টর অফ ক্রিকেট মহম্মদ হাফিজ’ও (Mohammad Hafeez)। কিন্তু ইতিবাচক উত্তর পান নি তিনি। সামনেই পাকিস্তান দলের অস্ট্রেলিয়া সফর রয়েছে। তার আগে এক সাংবাদিক সম্মেলনে হাফিজ বলেন, “আমি হাফিজকে ফোন করেছিলাম। বলেছিলাম যে তুমি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলো, যদি পাকিস্তানের হয়ে খেলতে চাও তাহলে নিজেকে প্রমাণ করো। আমি বলেছিলাম যে ও বাকিদের সমান সুযোগই পাবে। কিন্তু ও আমায় জানায় যে ও জাতীয় দলের হয়ে খেলতে ইচ্ছুক নয়। আন্তর্জাতিক লীগ গুলিই ওর ভবিষ্যত বলে আমির জানিয়েছে।”