নিউজিল্যান্ড আর ভারতের মধ্যে চলা তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত আরো একবার নিউজিল্যান্ডের হাতে হেরেছে। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে খেলা হওয়া দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ভারতীয় দলকে ২২ রানে হারতে হয়েছিল, সেই সঙ্গে এই সিরিজও ভারতের হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে আর তারা ০-২ পেছিয়ে গিয়েছে।
রবীন্দ্র জাদেজার জন্য ভালো প্রমানিত হয়েছে অকল্যান্ড ওয়ানডে
ভারতীয় দল সিরিজ তো হারিয়ে ফেলেছে, কিন্তু যেভাবে ভারতীয় দলের অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা অকল্যান্ড ওয়ানডে ম্যাচে প্রদর্শন করেছেন তাতে তার চারদিকেই প্রশংসা হচ্ছে। জাদেজা ভারতীয় দলের টপ অর্ডারের ব্যর্থ হওয়ার পরও দলকে লক্ষ্যের কাছাকাছি নিয়ে যান। রবীন্দ্র জাদেজা যেখানে ব্যাটিংয়ে ৫৫ রানের একটি দারুণ ইনিংস খেলেন সেই সঙ্গে বোলিংয়েও ১০ ওভারে মাত্র ৩৫ রান দিয়ে একটি সফলতা হাসিল করেছেন। অন্যদিকে তিনি একটি রানআউটও করেন অর্থাৎ ওভারঅল রবীন্দ্র জাদেজার জন্য এই ম্যাচ ভালো প্রমানিত হয়েছে।
অজয় জাদেজা আর মহম্মদ কাইফ রবীন্দ্র জাদেজাকে দিলেন পরামর্শ
রবীন্দ্র জাদেজার এই প্রদর্শনের পর এখন তার দারুণ প্রশংসা হয়ে চলেছে, যেখানে ক্রিকবাজের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে ক্রিকেট এক্সপার্ট হিসেবে থাকা প্রাক্তন ক্রিকেটার অজয় জাদেজা আর মহম্মদ কাইফ জমিয়ে প্রশংসা করেছেন। কিন্তু সেই সঙ্গে এই দুজনেই রবীন্দ্র জাদেজাকে ম্যাচ ফিনিশ করার ব্যাপারে শেখার পরামর্শ দিয়েছেন।
কাইফ বললেন, ম্যাচ ফিনিশ করার কৌশল শেখো
মহম্মদ কাইফ বলেন, “এত ভালো ম্যাচ এতদূর নিয়ে এসেছে, হিরো হওয়ার সুযোগ ছিল। জাদেজা তো জাদেজাই এটা মানুষ বলতে ভোলে না। বিশ্বকাপেও সুযোগ ছিল, এত ভালো ম্যাচ নিয়ে এসেছিল কিন্তু শেহশে ভুল হয়ে যায়। অলরাউন্ডার হিসেবে ৭ নম্বরে খেলেন, তো এমন সুযোগ ওর কাছে বেশকয়েকবার আসবে। এখন ওকে ম্যাচ ফিনিশ করতে হবে। এই বিষয়টা ওকে শিখতে হবে। কারণ আপনারা দেখবেন যে যখন দুটো চার বা দুটি ছক্কা মারার সময় আসে শেষ দিক তো সেখানে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বেড়ে যায়। সেখানে সামান্য ভয় থাকে যে বড়ো শট মারতে পারব কি না। এটা এমন একটা জায়গা যেখানে ও কাজ করতে পারে। ও ভারতের ফিনিশার হতে পারেন কারণ ও রান করতে পারে, ব্যাটিংয়ে টেকনিকও রয়েছে, ছক্কাও মারতে পারে। আমরা দেখেছি আইপিএলে রান করে, নিজের রাজ্যের হয়ে খেলে সেখানেও রান করে। কিন্তু যখন ম্যাচ বার করার কথা আসে তো যে জাদেজা ম্যাচ জেতাতে পারবেন কি না, তো ১০জনের মধ্যে ৮জন বলবেন পারবে না”।
অজয় জাদেজা বললেন, ধোনির কাছ থেকে ফিনিশ করার ধরন শিখতে হবে
এরপর অজয় জাদেজা বলেন যে, “একদম, আমরা তো বলি যে ও থ্রি ডি প্লেয়ার। ওকে আমরা ১০-১২ বছরে কখনো দেখিনি যে ৩,৪ বা ৫ নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছে। ওর মধ্যে ধারাবাহিকতা রয়েছে আর শটও খেলতে পারে। তো আপনি ওকে ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারেন। যে কোনো খেলোয়াড়ই নিজের একটি উইকনেস আর একটি স্ট্রেংথ থাকে। ও কখনো বিশ্বাস হারায় না, যখন সকলে হাল ছেড়ে দেয় ও টিকে থাকে। ও একটু কৌশলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছে না। যেমন শেষ ওভারে ১০-১২ রান দরকার আর সেই সময় ও বোলারকে এতটা খেলতে পারছে না। দেখুন উন্নতি তো করে যেতে হবে”।
যখন অজয় জাদেজাকে রবীন্দ্র জাদেজার ইনিংসের তুলনা ধোনির ইনিংসের সঙ্গে করতে বলা হয় তো তিনি বলেন, “দেখুন যার সঙ্গে আপনি ওঠা বসা করেন তো কিছু না কিছু শিখেই নেন, এত বছর ও ওর (ধোনির) সঙ্গে খেলে এসেছে। কারণ আপনি ওর সঙ্গে থাকেন। ধোনি যখন খেলতে যায় তো তার আগেও আপনি ওর সঙ্গে বসেই থাকেন। চেন্নাতে খেলেন, ভারতের হয়ে খেলেন। সেই সময় ভাবো থাকলে শেষ পর্যন্ত থাকব, শেষ পর্যন্ত দেখি কি হয়। এমনটা নয় যে শেষ ওভারে ১৫ রান বা ১৮ রান হয় না, হয়ে যায়। কিন্তু এখনো কত বল বাকি রয়েছে। সামনে এমন কেউ থাকলে যিনি প্রত্যেক বলে রান করতে পারেন তো ১২ বলে ১২ রান হয়েই যায়, কিন্তু যখন এটা হয় যে ওকেই একা খলতে হবে, ওকেই চার বা ছক্কা মারতে হবে তো বোলারের জন্য সহজ হয়ে যায়। সামান্য কমতি রয়েছে গেছে।
কিন্তু আমি মনে করি ধীরে ধীরে ও সলিডিটারি দেখাচ্ছে। প্রথমে দেখা যেত যে শট মারছে কিন্তু এত ধারাবাহিকতা দেখা যেত না, কিন্তু এখন আশা করছি যে ওকে কখনো এগিয়ে আনা হবে। পেছনে খেলার বিষয়টাই আলাদা। যেখানে সকলে আউট হয়ে যায় তো বড়ো বড়ো ব্যাটসম্যানেরও ব্যাট ওঠে না। কারণ সেই সময় তো আপনিই একমাত্র সেন্সিবল মানুষ, কারণ বোলারদের কাছ থেকে আশা করা যায় না। কিন্তু অন্যদিকে যখন ব্যাটসম্যান থাকেন তো তাকেই খেলতে হয় এবং তাকে সেন্সিবল হয়ে খেলতে হয়। এই খেলাটা চাপের খেলা নাহলে সেই একই বল আর একই ২২ গজ। ভাবনা আর কাজের সমস্ত খেলাটা বদলে যায়। তো আপনাকে এটা ভাবতে হবে যে খেলাটা কোনদিকে যাচ্ছে। আমার মতে আজ ভারতীয় দল ম্যাচের কোথাও ছিল না। সেই ১০ ওভার ছাড়া যেখানে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের ব্রেন ফেড হয়েছিল। ২৯ ওভার থেকে ৪০ ওভার পর্যন্ত, এছাড়াও তো শুরু থেকেই নিউজিল্যান্ড ডমিনেট করছিল। আপনারাও কোথায় ব্যাটিং করেননি একমাত্র নভদীপ সাইনি আর রবীন্দ্র জাদেজা ছাড়া”।