সিডনিতে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির শেষ টেস্ট থেকে যখন নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma), তখনই শুরু হয়েছিলো অবসরের গুঞ্জন। ম্যাচের মাঝেই ভক্তদের আশ্বস্ত করতে এগিয়ে এসেছিলো স্বয়ং হিটম্যান। স্টার স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, “আরে ভাই কোথাও যাচ্ছি না। শুধু এই টেস্টটা খেলছি না।” কিন্তু কথা রাখতে পারলেন না তিনি। মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বক্সিং ডে টেস্টটিই লাল বলের কেরিয়ারে তাঁর শেষ ম্যাচ হয়ে রইলো। গতকাল আচমকাই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফর্ম্যাটকে বিদায় জানালেন তিনি। রোহিতের (Rohit Sharma) সরে দাঁড়ানোকে টেস্ট ফর্ম্যাটে টিম ইন্ডিয়ায় এক নতুন যুগের সূচনা বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। অশ্বিন সরেছেন আগেই,এবার অন্যান্য সিনিয়রদেরও ধীরে ধীরে দেখানো হতে পারে বাইরের রাস্তা।
Read More: নতুন টেস্ট অধিনায়ক ঘোষণা করলো বিসিসিআই, এই তরুণ তারকা পাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব !!
টেস্ট ক্রিকেটে অতীত রোহিত জমানা-

২০২৪-এর ২৯ জুন টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর ক্ষুদ্রতম ফর্ম্যাটকে বিদায় জানিয়েছিলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। গতকাল সরে দাঁড়ালেন টেস্ট থেকেও। সন্ধ্যে ৭টা ২৯ মিনিটে একটি ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে নিজের টেস্ট ক্যাপের একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। ক্যাপশনে লেখেন, “আমি কেবল জানাতে চাই যে আমি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি। সাদা জার্সিতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছি যা আমার কাছে অত্যন্ত সম্মানের। এতগুলো বছর ধরে ভালোবাসা ও সমর্থন যোগানোর জন্য ধন্যবাদ। একদিনের ক্রিকেটে এখনও দেশের হয়ে খেলবো।” শেষ কয়েকটি সিরিজে চূড়ান্ত হতাশ করেছিলেন তিনি। রান পান নি বাংলাদেশ বা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। অস্ট্রেলিয়া সফরে রোহিতের গড় ছিলো ৬.২০। লাল বলের ফর্ম্যাটে ভবিষ্যত যে অনিশ্চিত তা বুঝতে পারছিলেন রোহিত (Rohit Sharma)। সেই কারণেই সম্ভবত নিজেই সরে দাঁড়ালেন তিনি।
২০১৩ সালে ইডেন গার্ডেন্সে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিলো রোহিত শর্মা’র (Rohit Sharma)। অভিষেক ম্যাচে করেছিলেন শতরান। মুম্বইতে দ্বিতীয় টেস্টেও তিন অঙ্কের মাইলস্টোন পেরোন তিনি। শুরুটা বিস্ফোরক হলেও টেস্ট দলে নিয়মিত হয়ে উঠতে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে রোহিতকে। প্রথম দিকে খেলতেন মিডল অর্ডারে। সেখানে ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেন নি। ২০১৯-এ সাদা বলের ক্রিকেটের মত টেস্টেও শুরু করেন ওপেনিং। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি তাঁকে। ২০২২-এ কোহলি সরে দাঁড়ানোর পর পান ভারতের অধিনায়কত্ব’ও। নেতা হিসেবে ২৪ টেস্টের মধ্যে ১২টিতে জিতেছেন তিনি। হার ৯টিতে। অমীমাংসিত বাকি ৩টি। ৬৭ টেস্টে ৪০.৫৭ গড়ে ৪৩০১ রান নিয়ে লাল বলের কেরিয়ারে দাঁড়ি টানলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। ঝুলিতে ১২ শতরান ও ১৮ অর্ধশতক’ও।
অবসর ঘোষণা করতে পারেন হার্দিক-

রোহিতের (Rohit Sharma) পথে হেঁটে টেস্ট ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অবসর ঘোষণা করতে পারেন হার্দিক পান্ডিয়াও (Hardik Pandya)। ২০১৭ সালে দীর্ঘতম ফর্ম্যাটে অভিষেক হয়েছিলো তাঁর। শেষবার টেস্ট জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন ২০১৮তে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। পরের সাত বছরে নানা সময় তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে টেস্ট প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে। কোনো স্পষ্ট উত্তর দেন নি হার্দিক। ফোকাস করেছেন সাদা বলের দুই ফর্ম্যাটে। সূত্রের খবর যে কোচ গম্ভীরের হাত ধরে টেস্ট দলে নতুন অধ্যায় শুরু করতে চায় ভারত। লাল বলের ক্রিকেটে হার্দিকের নাম ভাবনায় নেই নির্বাচকদের। বরং পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে প্রথম পছন্দ নীতিশ কুমার রেড্ডি। ফলে রোহিতকে যেমন কার্যত সরিয়ে দেওয়া হলো তেমন তাঁকেও অবসর ঘোষণার অনুরোধ করতে পারেন নির্বাচকেরা।