Afro-Asia Cup: ২০১২-র পর থেকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দুরত্ব বাড়ার কারণে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হয় না ভারত ও পাকিস্তান। ২০০৯ থেকে আইপিএলেও নির্বাসিত পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। ফলে আইসিসি বা এসিসি আয়োজিত টুর্নামেন্টগুলোতেই একসাথে মাঠে দেখা যায় দুই দেশের তারকাদের। তবে এবার বদলে যেতে চলেছে ছবিটা। খুব দ্রুত একই ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করতে দেখা যেতে পারে বিরাট কোহলি, বাবর আজমদের। একই দলের জার্সি গায়ে মাঠে নামতে পারেন ওয়াঘা সীমান্তের দুই পাড়ের দুই মহাতারকা। সৌজন্যে অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ (Afro-Asia Cup)। ২০০৫ সালে চালু হয়েছিলো এই আন্তঃমহাদেশী টুর্নামেন্ট। দুটি সংস্করণ আয়োজন করা গিয়েছিলো। ২০০৭-এর পর বন্ধ হয়ে যায় তা। তবে সতেরো বছর পর এই অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ’কে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সুখবর মিললো আফ্রিকান ক্রিকেট সংস্থা মারফত।
Read More: “ফিরে আসুক সেরা সময়…” ৩৬-এ পা বিরাট কোহলি’র, শুভেচ্ছায় ভরালো সোশ্যাল মিডিয়া !!
ফিরতে চলেছে অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ-
২০০৫ সালে পথচলা শুরু হয়েছিলো অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপের (Afro-Asia Cup)। দুই মহাদেশের একঝাঁক তারকা মাঠে নেমেছিলেন সেবার। এশিয়া একাদশে অংশ নিয়েছিলেন ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়’রা। আফ্রিকা মহাদেশের জার্সিতে ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে, কেনিয়ার ক্রিকেটাররা। প্রথম সংস্করণ ১-১ ফলে অমীমাংসিত ভাবে শেষ হয়েছিলো। তৃতীয় ম্যাচটি ভেস্তে গিয়েছিলো বৃষ্টির কারণে। ২০০৭-এ অবশ্য একাধিপত্য দেখিয়েছিলো এশিয়া একাদশ। তারা ৩-০ ফলে পরাজিত করে আফ্রিকা একাদশকে। দুই দলের হয়ে অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপে (Afro-Asia Cup) অংশ নিয়েছেন জ্যাক ক্যালিস, মার্ক বাউচার, মহেন্দ্র সিং ধোনি, মহম্মদ আসিফের মত তারকা। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সংস্করণে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি উপমহাদেশের আরও এক ক্রিকেট শক্তি-বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটারও ছিলেন এশিয়া একাদশে।
সম্প্রচারের সমস্যা, বিনিয়োগের অভাব ও বিশ্বজুড়ে গজিয়ে ওঠা ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ লীগগুলির দাপটে বন্ধ করতে হয়েছিলো অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ। কিন্তু দীর্ঘ বিরতির পর ফের ফিরতে চলেছে এই প্রতিযোগিতা। আফ্রিকান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সভাপতি তাভেনগওয়া মুখুলানি অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপের (Afro-Asia Cup) প্রত্যাবর্তনের খবর প্রকাশ্যে এনেছেন সম্প্রতি। জিম্বাবুয়ান ক্রিকেট কর্তা জানিয়েছেন, “এই টুর্নামেন্ট বিনোদনের পাশাপাশি আর্থিকভাবেও আমাদের সমৃদ্ধ করে। আমরা এশীয় ক্রিকেট সংস্থার সাথে কথা বলেছি। আফ্রিকার অন্যান্য ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থাগুলির সাথেও কথা বলেছি। আমরা অবশ্যই চাই অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ ফিরে আসুক।” শনিবার সাধারণ বার্ষিক সভাতে ছয় সদস্যের এক কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করেছে ACA। বৈঠকে এশিয়া ও আফ্রিকার মধ্যে ক্রিকেটীয় সুযোগসুবিধা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আগামী বছর হবে টুর্নামেন্ট?
ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকে আইসিসি’র চেয়ারম্যান পদে বসতে চলেছেন জয় শাহ (Jay Shah)। মাসখানেক আগে শোনা গিয়েছিলো যে এই অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগী তিনিও। আফ্রিকান ক্রিকেট সংস্থার অভিমতকে তিনি সিলমোহর দেবেন বলেই মনে করছে ক্রিকেটমহল। কিন্তু কোন সময়ে টুর্নামেন্ট আয়োজিত হতে পারে তা নিয়ে রয়েই গিয়েছে ধন্ধ। বর্তমান সময়ে সারা বছর জুড়ে ক্রিকেটীয় কর্মসূচি থাকে দলগুলির। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না থাকলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগগুলি খেলে থাকেন ক্রিকেটাররা। সব কিছু সামলে আদৌ তাঁদের কাছে অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ খেলার সুযোগ থাকবে কিনা সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানা যায় নি। ২০০৯-এর আয়োজক হওয়ার কথা ছিলো কেনিয়ার। কিন্তু সেবার ভেস্তে যায় প্রতিযোগিতা। তাই মনে করা হচ্ছে যে ২০২৫-এর টুর্নামেন্ট আফ্রিকা মহাদেশে আয়োজিত হতে পারে।