গত মাসের ১২ তারিখ হঠাৎ’ই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ইন্সটাগ্রামে এক দীর্ঘ বিদায়বার্তায় তিনি লেখেন, “…সাদা জার্সিতে খেলার অনুভূতিটা একান্ত ব্যক্তিগত। দীর্ঘ সময়, নিঃশব্দ লড়াই, ছোটোখাটো যে মুহূর্তগুলো সবার চোখ এড়িয়ে যায়, সেগুলো আপনার সাথে সর্বক্ষণ থেকে যায়। আজ এই ফর্ম্যাট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তটা সহজ নয়, কিন্তু মনে হচ্ছে সঠিক। আমি আমার সবটুকু দিয়েছি। এই ফর্ম্যাট আমার অনেক বেশী কিছু ফিরিয়ে দিয়েছে।” এই মুহূর্তে কোহলির (Virat Kohli) বয়স ৩৬। ফিটনেস নিয়ে তাঁর দিকে আঙুল তোলার কোনো সুযোগ নেই। তারপরেও এই আচমকা অবসরে কারণ কি? অধিকাংশ ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ অফ ফর্মের দিকে ইঙ্গিত করলেও তা মানতে রাজী নন পাক প্রাক্তনী জাভেজ মিয়াঁদাদ (Javed Miandad) ও শাহিদ আফ্রিদি (Shahid Afridi)। তাঁরা তোপ দেগেছেন বিসিসিআই-এর দিকে।
Read More: “খেলার ঊর্দ্ধে কেউ নয়…” বিস্ফোরক রবিচন্দ্রণ অশ্বিন, স্পিন তারকার নিশানায় বিরাট কোহলি !!
পাক প্রাক্তনীদের নিশানায় BCCI-

সম্প্রতি বিরাট কোহলির (Virat Kohli) অবসর নিয়ে মুখ খুলেছেন কিংবদন্তি পাক ব্যাটার জাভেদ মিয়াঁদাদ (Javed Miandad)। টেলিকম এশিয়া স্পোর্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “কোহলি আধুনিক সময়ের একজন মহান খেলোয়াড়। একজন ম্যাচ উইনার ও এমন একজন অধিনায়ক যে সকলকে অনুপ্রাণিত করে। ও (কোহলি) টেস্ট ক্রিকেটকে খুবই ভালোবাসত। কিন্তু যেভাবে অবসর নিলো তাতে প্রশ্ন থেকেই যায়। বিরাট ২০২৭ অবধি খেলতেই পারত। ও খানিক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলো ঠিকই, কিন্তু প্রত্যেক ব্যাটারকেই তার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।” বোর্ডের চাপেই কি সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন বিরাট (Virat Kohli)? তেমনটাই ইঙ্গিত মিয়াঁদাদের। বলেছেন, “আমি ভুলও হতে পারি। কিন্তু বিসিসিআই ও বিরাটের মধ্যে সব কিছু ঠিকঠাক ছিলো না। ভারতীয় বোর্ড ওর জন্য একটা বিদায়ী ম্যাচও আয়োজন করলো না। সেটাই যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী।”
ভারত ও ভারতীয় ক্রিকেট সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে যেন কিছুতেই বিরত থাকতে পারেন না শাহিদ আফ্রিদি (Shahid Afridi)। সম্প্রতি কোহলির (Virat Kohli) অবসর নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনিও। জানিয়েছেন, “বিরাট বিতর্কিত ছিলো, মেজাজি ছিলো ঠিকই কিন্তু ও ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য অনেক কিছু করেছে। ও নিজের দলের জন্য সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে, ম্যাচ জিতিয়েছে। ওর মত খেলোয়াড়ের সাথে আলাদা আচরণ করা উচিৎ।” এরপরই মিয়াঁদাদের তত্ত্ব’কে সমর্থন করে তিনি বলেছেন, “ও (কোহলি) খানিক বদ্রাগী ছিলো। আমার মনে আছে সুনীল গাওস্কর একবার বিসিসিআই-কে অনুরোধ করেছিলেন ওকে শিক্ষা দিতে। কিন্তু বিয়ের পর ও অনেক পরিণত হয়েছিলো। ওর আরও সম্মান প্রাপ্য ছিলো।” ওয়াঘার ওপার থেকে বিরাট-বিসিসিআই দ্বন্দ্বের তত্ত্ব সামনে এলেও ভারতীয় মহাতারকা নিজে কিন্তু কোনো অভিযোগ আনেন নি বোর্ডের বিরুদ্ধে।
কোহলির প্রত্যাবর্তনের আশায় ক্লার্ক-

অবসরের পরেও টেস্টের প্রতি কোহলির (Virat Kohli) ভালোবাসা যে এক চুলও কমে নি তার প্রমাণ মিলেছে আইপিএল ফাইনালের দিন। আঠারো বছরের অপেক্ষা শেষে ট্রফি জিতেছিলেন বিরাট। সাফল্যের মুহূর্তেও লাল বলের ফর্ম্যাটকে তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা দিতে কোনো ভুল করেন নি তিনি। ম্যাথু হেডেনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “এটা (আইপিএল জয়) আমার কেরিয়ারের সেরা মুহূর্তগুলির একটা। কিন্তু তাও টেস্ট ক্রিকেটের থেকে পাঁচ ধাপ নীচেই থাকবে।” সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হয়েছিলো মহাতারকার সেই মন্তব্য। টেস্টকে এখনও অনেক কিছু দেওয়ার ছিলো কোহলির (Virat Kohli), মনে করেন অজি প্রাক্তনী মাইকেল ক্লার্ক। বিয়ন্ড ২৩ পডকাস্ট অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়েছেন যে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে টিম ইন্ডিয়া যদি পর্যুদস্ত হয় তাহলে হয়ত দলের হাল ধরতে টেস্টের ময়দানে ফিরতেও পারেন বিরাট।
Also Read: WTC Final: মার্করামের শতরানে শাপমোচন, অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টেস্টে বিশ্বসেরা দক্ষিণ আফ্রিকা !!