ভারতের মাটিতে গত বছর ওডিআই বিশ্বকাপে ভালো পারফর্ম্যান্স করেছিলো আফগানিস্তান। পাকিস্তান, ইংল্যান্ডের মত হেভিওয়েট দলকে হারিয়েছিলো তারা। একটুর জন্য হাতছাড়া হয়েছিলো সেমিফাইনালের ছাড়পত্র। এই বছরের টি-২০ বিশ্বকাপেও সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন রশিদ খান’রা। প্রথমবারের জন্য কোনো বড় মাপের আইসিসি প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছিলো আফগানিস্তান। এরপরেই ক্রিকেটদুনিয়ায় নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার সুযোগ পেয়েছেন আফগানরা। নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মত বড় দল তাদের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে রাজী হয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আফগানিস্তানের মাটিতে এই মুহূর্তে ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব নয়। সাহায্যে এগিয়ে এসেছে ভারত। গ্রেটার নয়ডার মাঠকে পড়শি দেশের হোম স্টেডিয়াম হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র দিয়েছে বিসিসিআই।
Read More: IND vs BAN: সরফরাজ খান’কে ধোঁকা দিচ্ছে বিসিসিআই, ছেঁটে ফেলা হচ্ছে টেস্ট দল থেকে !!
দুই দিন ম্যাচ পণ্ড গ্রেটার নয়ডায়-
গ্রেটার নয়ডার শহীদ বিজয় সিং পথিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স-এর মাঠে এর আগেও ম্যাচ খেলেছে আফগানিস্তান। ২০১৭ সালে তাদের হোম স্টেডিয়াম ছিলো গ্রেটার নয়ডায়। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-২০ ও ওডিআই ম্যাচ আয়োজিত হয়েছিলো এখানে। তার প্রায় ৭ বছর পর আফগানরা ফিরেছেন এই মাঠে। স্বভাবতই কৌতূহল ছিলো ক্রিকেটপ্রিয় জনতার মধ্যে। দিল্লী, নয়ডার মত জায়গায় বহু আফগান নাগরিক বসবাস করেন। তাঁরা নিজেদের দেশের ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে মুখিয়ে ছিলেন। শোনা গিয়েছিলো যে ম্যাচের প্রথম দিন ৮০০০ আসনবিশিষ্ট স্টেডিয়ামের কোনো টিকিট নাকি পড়ে নেই। জমজমাট ম্যাচের আশায় অবশ্য জল ঢেলেছে প্রাকৃতিক বিপর্যয় আর বেহাল পরিকাঠামো। আজ হিসেবমত দ্বিতীয় দিন আফগানিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ড ম্যাচের। কিন্তু একটি বল’ও এগোয় নি খেলা।
রবিবার রাতের পর বৃষ্টি হয় নি আর। তাতেও সোমবার ম্যাচের প্রথম দিন পুরো ভেস্তে যায় ম্যাচ। মাঠকর্মীদের দেখা যায় বড় পাখা, ব্লো ড্রায়ার ইত্যাদির সাহায্যে মাঠ শুকনো করার চেষ্টায় ব্যপৃত থাকতে। আম্পায়াররা ছয়বার মাঠ পরিদর্শন করার পরেও খেলা শুরু করার ব্যপারে সবুজ সংকেত দিতে পারেন নি। মিড অন ও মিড অফ অঞ্চলে রীতমত জল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। আজ দ্বিতীয় দিনেও একই চিত্র। মাঠ ক্রিকেটের জন্য তৈরি যে নয়, তা বোঝা গেলো আরও একবার। আকাশে চড়া রোদ থাকলেও আউটফিল্ড ক্রিকেটের জন্য তৈরি না থাকায় দ্বিতীয় দিন’ও খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হন আম্পায়ার’রা। টিম সাউদী, রচিন রবীন্দ্রের মত কিউই তারকারাও বারবার মাঠে নেমে পরিদর্শন সারেন। কিন্তু লাভ হয় নি কিছুই।
পরিকাঠামো নিয়ে সন্তুষ্ট নয় আফগানিস্তান-
খারাপ আউটফিল্ড, নিকাশীর সমস্যা, অপর্যাপ্ত দর্শকাসন, মিডিয়া সেন্টারের বেহাল দশা, সাংবাদিকদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার না থাকা-গ্রেটার নয়ডার স্টেডিয়াম নিয়ে অভিযোগের যেন অন্ত নেই। আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা সঠিক খাবার অবধি পাচ্ছেন না বলে খবর মিলেছে সূত্র মারফৎ। চূড়ান্ত অব্যবস্থা নিয়ে তোপ দেগেছেন আফগান ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তা’ও। নাম না প্রকাশ করার শর্তে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, “এখানে জঘন্য অবস্থা। আর কখনও এখানে ফিরে আসবো না। খেলোয়াড়রাও পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগ করছিলেন। আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিলো সব ঠিকঠাক থাকবে বলে। কিন্তু কিচ্ছু বদলায় নি।” উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার তত্ত্বাবধানে নেই এই মাঠ। দেখভাল করার কথা গ্রেটার নয়ডা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অথরিটি বোর্ডের। তাদের দিকেই তাই উঠছে আঙুল। তবে দিনের শেষে মুখ যে পুড়ছে ভারতেরই, তা বলাই বাহুল্য।