নতুন বছরের গোড়াতেই বিশ্বের দুই প্রান্তে ক্রিকেটের কঠিনতম পরীক্ষায় নেমেছে চার হেভিওয়েট দল। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান (AUS vs PAK)। পারথ ও মেলবোর্নে আগের দুটি টেস্টেই সহজ জয় পেয়েছে অজিরা। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ তালিকার শীর্ষস্থানের দিকে নিজেদের অগ্রগমন বজায় রাখতে তৃতীয় টেস্টেও জয় চাইছেন প্যাট কামিন্সরা (Pat Cummins)। অন্যদিকে ক্যাঙারুর দেশে একটানা ১৬ টেস্ট হারার পর সান্ত্বনা পুরষ্কার হিসেবে সিডনি টেস্টে সাফল্যের সন্ধানে শান মাসুদের (Shan Masood) দল’ও। আপাতত প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের তোলা ৩১৩ রানের জবাবে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় দিনের শেষে ২ উইকেটের বিনিময়ে করেছে ১১৬ রান।
অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনে প্রোটিয়া পরীক্ষার সম্মুখীন ‘মেন ইন ব্লু।’ সেঞ্চুরিয়নের প্রথম টেস্টে ভারত হেরেছে ইনিংস ও ৩২ রানে। কেপ টাউনের নিউল্যান্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সমতা ফেরানোর লড়াই তাদের। বোলিং স্বর্গসম পিচে প্রথম দিনেই পড়েছে ২৩ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫৫ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর ভারতের ইনিংসও শেষ হয়েছে ১৫৩ রানেই। ৯৮ রানের লীড নিতে সক্ষম হয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। দ্বিতীয় দিনের সকালে মধ্যাহ্নভোজের মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসও ভারত গুটিয়ে দিয়েছে ১৭৬ রানের মধ্যে। জয়ের জন্য এখন প্রয়োজন ৭৯ রান। বিশ্বের দুই প্রান্তে দুই ম্যাচ ঘিরেই আবেগের বন্যায় ভাসছেন ক্রিকেট অনুরাগীরা। কারণ বাইশ গজকে বিদায় জানাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার (David Warner) ও ডিন এলগার (Dean Elgar)।
Read More: IND vs AUS: টেস্টে অবারও এন্ট্রি নিচ্ছেন ডেভিড ওয়ার্নার, ভারতের বিপক্ষেই শুরু করবেন নতুন ইনিংস !!
নীরবেই বিদায় নিলেন ফিঞ্চ’ও-
ওয়ার্নার ও এলগার আগেই জানিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার কথা। সিডনিতে অজি ওপেনার মাঠে নামার আগে তাঁকে গার্ড অফ অনার দিয়ে সম্মান জানিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেটাররা। এলগারের (Dean Elgar) প্রতিপক্ষ টিম ইন্ডিয়াও মাঠে এলগার’কে যথেষ্ট সম্মান জানিয়েছে। কেরিয়ারের শেষ ইনিংসে যখন আউট হয়ে ফিরছিলেন তিনি, তখন বোলার মুকেশ কুমারকে উইকেট উদযাপন করতে বারণ করেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। এছাড়াও এলগারকে বুকে জড়িয়ে বর্ণময় কেরিয়ারের জন্য শুভেচ্ছা জানাতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। নিউল্যান্ডসের সবুজ ঘাসে তৈরি হয়েছে আবেগময় সব দৃশ্য। মেলবোর্ন ও কেপ টাউনে যখন দুই কিংবদন্তি ওপেনারের বিদায়গাথা লেখা হচ্ছে আবেগের দোয়াতে কলম ডুবিয়ে, তখন খানিক যেন নিভৃতেই বাইশ গজের দুনিয়াকে বিদায় জানালেন অস্ট্রেলিয়ার আরেক কিংবদন্তি ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ (Aaron Finch)।
অস্ট্রেলিয়ার টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ (Aaron Finch) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন ২০২২ সালেই। তারপর যোগ দিয়েছিলেন ধারাভাষ্যের কাজেও। ভারতেও নানা সময় বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন। ছিলেন বিশ্বকাপের সময়েও। তবে মাঠের সাথে যোগাযোগ একেবারে ছিঁড়ে যায় নি তাঁর। চুটিয়ে বিগ ব্যাশ লীগে (BBL) খেলছিলেন। নিয়মিত তাঁকে মাঠে দেখা যেত মেলবোর্ন রেনেগেডসের জার্সিতে। ২০২৪-এর গোড়াই এসে সেই সুতোটুকুও কেটে ফেললেন ফিঞ্চ। আজ তিনি জানিয়ে দিয়েছেন সব ধরণের ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। ফিঞ্চের বিদায়ের খবরে ভারাক্রান্ত অনুরাগীরা। টি-২০ বিশ্বকাপ জেতানোর জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অস্ট্রেলীয় ভক্তেরা। অনেকেই আবার তাঁকে বিগ ব্যাশ লীগের মুখ বলেও বর্ণনা করেছেন।
বর্ণময় কেরিয়ার অ্যারন ফিঞ্চের-
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে গত দশকের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার বলা চলে অ্যারন ফিঞ্চকে (Aaron Finch)। লম্বা সময় ফিঞ্চ ও ওয়ার্নারের ওপেনিং জুটি ত্রাসের সঞ্চার করেছে বিশ্বের সেরা বোলিং বিভাগের উপরেও। মাত্র ৫টি টেস্ট খেলেছেন তিনি। রান ২৭৮। কিন্তু ওয়ান ডে ও টি-২০ ক্রিকেটে প্রায় দশক জোড়া বিস্তার ফিঞ্চের (Aaron Finch) কেরিয়ারের। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে ওডিআই ক্রিকেটে পথচলা শুরু করেছিলেন। ২০২২ সালে হলুদ জার্সিকে বিদায় জানানোর আগে পর্যন্ত খেলেছেন ১৪৬ ম্যাচ। করেছেন ৫৪০৬ রান। শতরানের সংখ্যা ১৭। অর্ধশতক ৩০টি। অন্যদিকে টি-২০ ক্রিকেটে তিনি দেশের হয়ে খেলেছেন ১০৩ ম্যাচ। প্রায় ৩৫ গড়ে করেছেন ৩১২০ রান। শতরানের সংখ্যা ২। অর্ধশতক ১৯টি। স্ট্রাইক রেট ১৪৩-এর কাছাকাছি।