ভারতীয় দল (Team India) জুলাই মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাচ্ছে যেখানে তাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২টি টেস্ট, ৩টি ওয়ানডে এবং ৫টি টি-২০ ম্যাচের সিরিজ খেলতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য ভারতীয় দলের টেস্ট ও ওয়ানডে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিসিআই। তবে বিসিসিআই প্রকাশিত স্কোয়াড দেখে ক্ষুব্ধ ক্রিকেট ভক্তরা। আসলে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য ভারতীয় দলের স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার যোগ্য ৫ জন খেলোয়াড়, সুযোগ না পাওয়ায় ভক্তরা ক্ষুব্ধ। এই কারণে অনেকেই বিসিসিআইকে রাজনীতি করার অভিযোগ করছেন।
তবে এর মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, আর কতদিন এই বৈষম্য সহ্য করবেন এই সব ক্রিকেটাররা? আইপিএল হোক বা ঘরোয়া ক্রিকেট, প্রায় সব জায়গাতেই নিজেদের ক্যারিশমা দেখিয়েছেন এই সব ক্রিকেটাররা। তা সত্ত্বেও বিসিসিআই কেন তাদের সুযোগ দিচ্ছে না তা নিয়ে ধোাঁয়াশা রয়েই যাচ্ছে। তবে আগামী দিনে এই সব ক্রিকেটাররা যদি অন্য দেশের হয়ে এবার মাঠে নামতে পারেন। তাই দেখে নেওয়া যাক এমন ৫ ক্রিকেটারকে যারা করতে পারেন এমন কাজ।
রিংকু সিং
রিংকু সিং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওডিআই সিরিজের জন্য ভারতীয় দলে জায়গা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তবে, বিসিসিআই কর্তৃক প্রকাশিত দলে তাকে জায়গা করে দেওয়া হয়নি। আসলে, আইপিএল ২০২৩-এ, রিংকু সিং তার দল কলকাতা নাইট রাইডার্সকে কঠিন সময়ে বেশ কয়েকবার জিতিয়েছেন এবং সেই কারণেই সবাই মনে করেছিল যে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলে সুযোগ পাবেন কিন্তু তা হয়নি। আইপিএল ২০২৩-এ, রিংকু সিং ১৪টি ম্যাচ খেলেছেন যাতে তিনি ৫৯ গড়ে ৪৭৪ রান করেছিলেন। এমন দুর্দান্ত পারফরমেন্স সত্ত্বেও দলে সুযোগ না পাওয়ায় তিনি অন্য দেশের হয়ে খেললে সত্যিই অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
তিলক ভার্মা
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তিলক ভার্মার নাম। তিলক ভার্মা আইপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে দেখিয়েছেন। তিনি ২০২২ সালে তার আইপিএল কেরিয়ার শুরু করেছিলেন এবং এখনও পর্যন্ত তিনি ২৫টি ম্যাচ খেলে ৩৮ গড়ে ৭৪০ রান করেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিলক ভার্মা ওয়ানডে দলে জায়গা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ফ্যানরা। আসলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে হারের পর টিম ইন্ডিয়া পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সেই কারণে দলে বহু তরুণ ক্রিকেটাররা সুযোগ পাচ্ছেন। এমন একটা সময়ও তিলকের সুযোগ না পাওয়াটা অবশ্যই চোখে লাগছে সবার। তাই আগামীদিনে বিসিসিআইয়ের ওপর ক্ষোভ দেখিয়ে তিনি যদি অন্য দেশের হয়ে খেলেন তাহলে কারও কিছু বলার থাকবে না।
সরফরাজ খান
এই তালিকায় অবশ্যই থাকতে চলেছে সরফরাজ খানের নাম। সরফরাজ খানকে টেস্ট ক্রিকেটের একজন ভাল খেলোয়াড় হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং সরফরাজ খান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অনুষ্ঠিত হতে চলা টেস্ট সিরিজে সুযোগ পাওয়ার আশায় ছিলেন। কিন্তু এবারও তিনি টিম ইন্ডিয়াতে সুযোগ পাননি। সরফরাজ খান তার কেরিয়ারে এখনও পর্যন্ত মোট ৩৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন যার মধ্যে তিনি ৫৪ ইনিংসে ৪৯৯২ রান করেছেন। রঞ্জি ট্রফির শেষ মরশুমে তিনি ব্যাট হাতে পাহাড় প্রমাণ রান করেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে তাকে সেরা ব্যাটসম্যানের তকমা দেওয়া যেতেই পারে। এমন একজন খেলোয়াড়কে সুযোগ না দেওয়াটা অপরাধের সামিল। তাই অদূর ভবিষ্যতে এর জন্য পস্তাতে হতে পারে বিসিসিআইকে।
সাই সুদর্শন
তামিলনাড়ুর ব্যাটসম্যান সাই সুদর্শন এবার আইপিএলে অন্যতম বড় নাম হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালের আইপিএলে সবার নজর কাড়ার পর এবার টিএনপিএলে ডানা মেলেছেন তিনি। এমতাবস্থায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টিম ইন্ডিয়াতে সুদর্শন ডাক না পাওয়ায় অনাকেই অবাক হয়েছেন। টিএনপিএল-এর চলতি মরশুমে সুদর্শন ৫ ম্যাচে ৮২.৫০ গড়ে ৩৩০ রান করেছেন যার মধ্যে ৪টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে। বাঁ-হাতি উঠতি তারকা আইপিএলে মোট ১৩টি ম্যাচ খেলেছেন এবং ৪৬.০৯ গড়ে ৫০৭ রান করেছেন। সুদর্শন হার্দিক পান্ডিয়ার দল গুজরাট টাইটান্সকে ফাইনালে উঠতে সাহায্য করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে এত ভালো পারফরমেন্স সত্ত্বেও নির্বাচকরা তা দিকে ঘুরেও তাকালেন না। এই অবস্থায় আগামীদিনে এই খেলোয়াড় অন্য কোন দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন।
অভিমন্যু ইশ্বরন
ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার হয়ে খেলা তরুণ ব্যাটসম্যান অভিমন্যু ইশ্বরন আবারও টিম ইন্ডিয়াতে জায়গা করে নিতে পারেননি। অভিমন্যু ইশ্বরন 2021 সাল থেকে অনেক সিরিজে টিম ইন্ডিয়ার সাথে স্ট্যান্ডবাই প্লেয়ার হিসেবে থাকলেও, মূল দলে ছিলেন না। বারবার তাকে উপেক্ষিত করা হচ্ছে। তবে, ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ শোরগোল ফেলেছেন ২৭ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়। প্রথম শ্রেণি ও লিস্ট-এ ক্রিকেটে তার রান ৯ হাজারের বেশি। এছাড়া ২৯টি সেঞ্চুরিও করেছেন তিনি। ৮৭ ম্যাচের ১৫০ ইনিংসে ৪৭.৮৫ গড়ে তার প্রথম শ্রেণিতে ৬৫৫৬ রান রয়েছে। একই সাথে, তিনি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২২টি সেঞ্চুরি এবং ২৬টি হাফ সেঞ্চুরিও করেছেন। এর বাইরে যদি লিস্ট এ কেরিয়ারের দিকে তাকানো যায়, তিনি ৭৬ ইনিংসে ৪৬ গড়ে ৩৩৭৬ রান করেছেন। লিস্ট এ-তে তার রয়েছে ৭টি সেঞ্চুরি ও ২১টি হাফ সেঞ্চুরি।