আইপিএল ২০২১ শুরু হতে আর মাত্র কিছু সময় বাকি রয়েছে। আইপিএল পৃথিবীর অন্যতম সেরা টি-২০ ক্রিকেট লীগ। এই লীগে সারা পৃথিবীর অন্যতম সেরা ক্রিকেটাররা অংশ গ্রহণ করেন। শুধু ভারতেই নয় বরং সারা বিশ্বেই এই লীগ বিপুল জনপ্রিয়। পয়সাবহুল এই লীগে প্রতি ম্যাচেই বহু রেকর্ড রয়েছে। প্রতি ম্যাচেই নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি এবং ভাঙে এই লীগে। এমনই একটি রেকর্ডের অধিকারী ওয়েস্টইন্ডিজের বিস্ফোরক ওপেনার ক্রিস গেইল। গেইল আইপিএলে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান করেছেন। ইউনিভার্সাল বস নামে সারা পৃথিবীতে পরিচিত ক্রিস গেইল ২০১৩র আইপিএল মরশুমের এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড গড়েছিলেন। তিনি পুণে ওয়ারিওয়ার্সের বিরুদ্ধে মাত্র ৬৬ বলে ১৭৫ রানের ধামাকেদার ইনিংস খেলেছিলেন। আজ আমরা এই বিশেষ প্রতিবেদনে সেই ৫জন ব্যাটসম্যানের নাম জানাব যারা এই মরশুমে ক্রিস গেইলের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের রেকর্ড ভাঙতে পারেন।
ক্রিস গেইল
ক্রিস গেইলের চেয়ে ভালো আর কে হতে পারেন নিজের এই রেকর্ড ভাঙার জন্য। আইপিএলের ইতিহাসে ক্রিস গেই সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানদের একজন। তিনি আইপিএলে বহু ফ্রেঞ্চাইজির হয়েই খেলেছেন। ক্রিস গেইল তার ১৭৫ রানে ১৩টি বাউন্ডারি এবং ১৭টি ছক্কা মেরেছিলেন যা আরসিবিকে প্রথম ইনিংসে ২৬০ রান করতে সাহায্য করেছিল। তিনি এই টুর্নামেন্টে ৬টি সেঞ্চুরি করে সেঞ্চুরির তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। ২০১১ এবং ২০১২য় ৪০ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান পরপর ২ বার অরেঞ্জ ক্যাপ জিতেছিলেন। আইপিএলে ১২৫টি ম্যাচে এই জামাইকান তারকা ১৫১.০৩ স্ট্রাইকরেটে ৪৪৮৪ রান করেছেন। তার রান করার বিধ্বংসী ক্ষমতাকে দেখে এটা বলা ভুল হবে না যে নিজেকে ছাপিয়ে যেতে এই ক্যারিবিয়ানের মাত্র একটা ইনিংসের প্রয়োজন।
জোস বাটলার
জোস বাটলার একজন শক্তিশালী পাওয়ার হিটার, এবং ইংল্যাণ্ডের সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সাফল্যের পেছনে জোস বাটলারের এই ক্ষমতা অন্যতম কারণ। আইপিএলে যদিও বাটলার নীচের দিকে ব্যাট করে থাকেন কিন্তু ২০১৮য় রাজস্থান রয়্যালস তাকে ব্যাটিং লাইনআপে উপরের দিকে তুলে আনে। এবং এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান কিছু অসাধারণ ইনিংসও খেলেছেন। ২০১৮য় বাটলারের ব্যাট হাতে বিস্ফোরনই ২০০৮ এ আইপিএলের প্রথম চ্যাম্পিয়নদের প্লে অফে পৌঁছে দিয়েছিল। ২০১৮য় বাটলার রাজস্থানের হয়ে মোট ৫৪৮ রান করেছিলেন ৫টি সেঞ্চুরির সাহায্যে, যার মধ্যে তার সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৯৫ রান। ২০২০তেও বাটলার ওই ফর্ম ধরে রাখতে পারলে অনায়াসেই ক্রিস গেইলের ১৭৫ রানের রেকর্ড ভেঙে ফেলতে পারেন। আইপিএলে ১৫৭ স্ট্রাইকরেটে রান করা বাটলার মাঠের চারদিকেই শট খেলার ক্ষমতা রাখেন।
রোহিত শর্মা
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বিশ্বের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠব্যাটসম্যানদের অন্যতম রোহিত শর্মা একজন প্রথম সারির ব্যাটসম্যান। বলকে মাঠের বাইরে পাঠাতে রোহিত শক্তির চেয়ে টাইমিংয়ের উপর বেশি নির্ভর করেন। আইপিএলের ইতিহাসে ৪৮৯৮ রান করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক এই টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী। গত কিছু বছরে এই ৩৩ বছর বয়সী ভারতীয় ব্যাটসম্যান নিজেকে সাদা বলের ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যানে পরিণত করেছেন। শুরুটা ধিমে তালে করলেও একবার সেট হয়ে যাওয়ার পর রোহিত শর্মাকে থামানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। আইপিএলে রোহিত শর্মার স্ট্রাইকরেট ১৩০.৮২ এবং দীর্ঘদিন তিনি ক্রিকেটের থেকে দূরে রয়েছেন। ফলে আসন্ন আইপিএলে তিনি বেশকিছু বিস্ফোরক ইনিংস খেলার চেষ্টা করবেন।
অ্যারণ ফিঞ্চ
অস্ট্রেলিয়ার সীমিত ওভার দলের অধিনায়ক অ্যারণ ফিঞ্চও এই রেকর্ড ভাঙার তালিকায় রয়েছেন, এবং ওপেনিংয়ের একজন বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান। আইপিএলে যদিও তিনি তুলনামূলকভাবে অনভিজ্ঞ তবে তার গ্রহণ করাআর সক্ষমতার আর সবচেয়ে বড়ো শক্তি। এবং টি-২০ ক্রিকেটে তাকে এই ক্ষমতা আরও বিস্ফরক ব্যাটসম্যানে পরিণত করেছে। এই মরশুমে ফিঞ্চ বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন আরসিবির হয়ে খেলবেন। ৩৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান নিজের ১৫৬ রানের রেকর্ড ভেঙে টি-২০ আই আন্তর্জাতিকে ১৭২ রানে উন্নত করেছেন। এছাড়াও এই ব্যাটসম্যানের দীর্ঘ ইনিংস খেলার টেম্পারমেন্ট এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে ফলে তিনি সহজেই ক্রিস গেইলের এই রেকর্ড ভাঙার যোগ্য।
ডেভিড ওয়ার্নার
ক্রিস গেইলের ১৭৫ রানের রেকর্ড ভাঙার তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। ওয়ার্নার না শুধু একজন বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান বরং তিনি দারুণ ধারাবাহিকও। দীর্ঘদিন ক্রিকেট থেকে ব্যান থাকার পর গত মরশুমে আইপিএলে তিনি দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছিলেন। গত মরশুমে সবকটি ম্যাচ না খেলেও এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হয়েছিলেন। আইপিএলের ইতিহাসে ১২৬টি ম্যাচে ১৪২.৩৯ স্ট্রাইকরেটে ৪৭০৬ রান করে এই টুর্নামেন্টের তিনি চতুর্থ সর্বোচ্চ রান করা ব্যাটসম্যানও। এছাড়াও অধিনায়কের বাড়তি দায়িত্ব তাকে ক্রিস গেইলের রেকর্ড ভাঙার ব্যাপারে মোটিভেট করতে পারে।