World Cup 2023: ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বিরাট কোহলি টি-২০ ফর্ম্যাট থেকে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর একই বছরের ডিসেম্বর মাসে বিরাট কোহলিকে (Virat Kohli) ওডিআই অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন বিরাট। কোহলির এই বিদায়ের পর রোহিত শর্মাকে তিন ফর্ম্যাটেই অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। মনে করা হয়েছিল, নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেটে।
বিরাট যুগের অবসানের পর রোহিতের হাতে অধিনায়কত্ব হস্তান্তর করার সময় আশা করা হয়েছিল যে তিনি ভারতকে আইসিসি টুর্নামেন্ট জিততে সাহায্য করবেন। কিন্তু আদতে তা হয়নি। বরং, তার অধিনায়কত্বে ভারত এশিয়া কাপ ২০২২, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২২ এবং টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হেরেছে ভারত। চলতি বছর দেশের মাটিতে বসতে চলেছে বিশ্বকাপের আসর। এমন পরিস্থিতিতে ফের বিরাট কোহলিকে অধিনায়ক করার দাবি উঠেছে। এমতাবস্থায়, এমন ৩টি কারণ সম্পর্কে বলা যেতে পারে কেন কোহলিকে আবার অধিনায়কত্ব দেওয়া উচিত?
ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন বিরাট
যে কোন দলের অধিনায়ক নিজের দলকে পথ দেখায়। আর সেটা শুধুমাত্র অধিনায়কত্ব দিয়ে নয়, ব্যক্তিগত পারফরমেন্স দিয়ে দলকে চাগিয়ে তুলতে হয়। চলতি সময় ব্যাট হাতে একেবারেই ছন্দে নেই রোহিত শর্মা। পরপর সব টুর্নামেন্টেই ফ্লপ করছেন তিনি। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হারার পর তাকে সরিয়ে দেওয়ার আওয়াজও ওঠে। অন্যদিকে, বিরাট কোহলি কিন্তু সব ফর্ম্যাটেই রানের মধ্যে রয়েছেন।
২০২৩ সালের আইপিএলের ১৪টি ম্যাচে ৬৩৯ রান করেছেন বিরাট। তার এবারের গড় ছিল ৫৩.২৫। সেখানেই অবশ্য শেষ নয়। ২০২২ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে ২৯৬ রান করেছিলেন কোহলি। তিনিই ছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান স্কোরার। এরপর ২০২৩ সালের আইপিএলে ছ’শোর ওপর রান করে তাক লাগিয়ে দেন বিরাট। দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে না পারলেও, ফাফ দু’প্লেসিসের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে রানের পাহাড় গড়েন তিনি। তাই এই মুহূর্তে বিরাটকে অধিনায়ক বানিয়ে বিশ্বকাপের আসরে মাঠে নামা উচিত ভারতের।
বিরাটের আগ্রাসী মেজাজ কাজে লাগবে
বিরাট কোহলিকে আবারও টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক করার কথা ভাবাই জেতে পারে কারণ তার নেতৃত্বের দুর্দান্ত দক্ষতা রয়েছে। কোহলি তার অধিনায়কত্বের জামানায় নিজেকে একজন আগ্রাসী অধিনায়ক হিসাবে প্রমাণ করেছেন। অধিনায়ক থাকাকালীন খেলার সমস্ত ফর্ম্যাটে দলকে বেশ কয়েকটি জয় উপহার দেওয়ার নজির রয়েছে তার। মাঠে তার আক্রমণাত্মক এবং সক্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি কেবল খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করে না, বরং দলের মধ্যে একটি চ্যাম্পিয়নের মানসিকতাও তৈরি করেছে।
চাপের মধ্যে কোহলির কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং তার চমৎকার ম্যান-ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা তাকে অধিনায়কত্বের জন্য উপযুক্ত প্রার্থী করে তোলে। রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বে সেই জিনিসটাই দেখা যায় না। চাপের মুখে রোহিতের দিক থেকে কোন দুর্দান্ত চাল কখনই দেখা যায়নি। টিম ইন্ডিয়াকে গতানুগতিক ক্রিকেট খেলতে দেখা যাচ্ছে। তাই বিশ্বকাপের আসর থেকে ট্রফি জিততে হলে বিরাটকেই অধিনায়ক করতে হবে।
ট্রফি জিতেই ‘আলবিদা’ জানানোর তাগিদ
অধিনায়ক থাকাকালীন বিরাট কোহলি প্রচুর সাফল্য পেয়েছেন। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-২০, সব ক্ষেত্রেই দলকে তুলেছেন সাফল্যের সিঁড়িতে। তবে আইসিসি টুর্নামেন্টের আসরে কোন ট্রফি জিততে পারেনি বিরাটের দল। তাই আধিনায়ক বিরাটের আনেক কিছু না-পাওয়া রয়ে গিয়েছে। সেটা পাওয়ার জন্য বিরাট তাই নিজের সেরাটা দিয়েই ঝাঁপাবেন। সেই বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকা উচিত নয়।
বিশ্বকাপ যখন হবে তখন বিরাটের ৩৫ বছর বয়স হয়ে যাবে। তাই বয়সের চাপ বাড়ছে ‘কিং কোহলি’-র ওপর। এমন একটা সময় তাকে অধিনায়ক করা হলে একটা বড় লাভ হবে টিম ইন্ডিয়ার। আগামীদিনে চোটমুক্ত হয়ে বিরাট কতদিন খেলতে পারবেন তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থাকছেই। তাই অধিনায়ক হিসেবে ট্রফি জিতে নিজের কেরিয়ার শেষ করতে সবকিছু উজাড় করে দেবেন বিরাট। টিম ম্যানজেমেন্ট যদি এই বিষয়টাকে মাথায় রেখে তাকে অধিনায়ক করে তাহলে আখেরে দলেরই লাভ হবে।