ব্যাক্তিগত কারণে প্রথম টেস্টে উপলব্ধ ছিলেন না অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। তবে দ্বিতীয় টেস্টে তিনি দলে ফিরে এসেছেন ভক্তরা ভেবেছিল অধিনায়ক রোহিত শর্মা ফিরতে দলের উন্নতি দেখা যাবে। তবে অ্যাডিলেড টেস্টে মাত্র তিন দিনের মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ্যে এসেছে, ভারতীয় দলকে ১০ উইকেটে পরাস্ত করলো অস্ট্রেলিয়া দল। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে এসে ভারতীয় দল প্রথম ইনিংসে কেবলমাত্র ১৮০ রান বানিয়ে ১০ উইকেট হারিয়ে ফেলে। জবাবে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে ১৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন ট্রেভিস হেড (Travis Head) এবং দলকে ৩৩৭ রানে পৌঁছাতে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় ইনিংসে টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং করার সুযোগ আসলে আবার একবার ব্যাটসম্যানদের গোলাপি বলে অস্বস্তিতে পড়তে দেখা গিয়েছিল এবং দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া পিঙ্ক বল টেস্টে কতটা ভয়ঙ্কর তা ক্রিকেট বিশ্ব জানে। দ্বিতীয় ইনিংসে কেবলমাত্র ১৭৫ রানে গুটিয়ে যায় পুরো ভারতীয় দল। অজিদের বানানো প্রথম ইনিংসের রানের তুলনায় ভারত দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৮ রান বেশি বানায়। এই রান তাড়া করতে এসে কেবলমাত্র চার ওভারের মধ্যেই জয় সুনিশ্চিত করে। দ্বিতীয় টেস্টে রোহিতের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য পস্তাতে হয়েছে ভারতীয় দলকে।
Read More: IND vs AUS 2nd Test: “সরে দাঁড়াক সিনিয়ররা…” অ্যাডিলেডে হার ভারতের, সোশ্যাল মিডিয়া জমছে ক্ষোভের পাহাড় !!
টস জিতে ভুল সিদ্ধান্ত
অ্যাডিলেড টেস্টের প্রথম দিনে মেঘলা ছিল এবং পেসারদের একটি উপযুক্ত মাঠ ছিল, এই পরিস্থিতিতে ক্যাপ্টেন রোহিত টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিতে বেশ সওয়াল জবাব দিতে রয়েছে হিটম্যানকে। তবে রোহিতের নেওয়া এই সিদ্ধান্তে খুবই অবাক হয়েছে ভক্তরা। ফলস্বরূপ অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলাররা মেঘাচ্ছন্ন অবস্থার পুরো সদ্ব্যবহার করে এবং গোলাপি বলে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপকে ধ্বংস করে দেয়।
রোহিতের ক্যাপ্টেনসির উপরে প্রশ্ন তুলেছেন রবি শাস্ত্রী (Ravi Shastri) থেকে শুরু করে অনিল কুম্বলেও (Anil Kumble)। ভারতীয় দলের প্রাক্তন দুই তারকা খেলোয়াড় শুধু খেলোয়াড় হিসেবে নয় বরং ভারতীয় দলের সঙ্গে প্রধান কোচের ভূমিকাও পালন করেছেন তারা। রোহিত শর্মার ফিল্ডিং প্লেসমেন্টের উপরেও প্রশ্ন তোলেন তারা। শাস্ত্রী জানিয়েছেন, “২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে র মতন একই ভুল রোহিত করেছেন, সেসময় রোহিত (হেডের ক্ষেত্রে) কোনো স্লিপ ফিল্ডার ব্যাবহার করেনি, ঠিক তেমনই একই ভুল করছেন।” অন্যদিকে কুম্বলের মত, প্রথম টেস্টে জয়ের পর ক্যাপ্টেনের পরিবর্তন করার কোনো প্রয়োজন ছিল না।
ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন
অ্যাডিলেডে খেলা এই দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করা ভারতীয় দলের কাল হয়েছে। প্রথম টেস্টে কেএল রাহুল এবং যশস্বী জয়সওয়াল ওপেনিংয়ে দুর্ধর্ষ ব্যাটিং করেছিলেন। তার কারণে দ্বিতীয় টেস্টেও একই ওপেনিং জুটিতে খেলতে দেখা গেল ভারতীয় দলকে। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে দ্বিতীয় টেস্টে ওপেনিং করতে এসেছেন রাহুল ও যশস্বীই। তাই, অধিনায়ক রোহিত শর্মা নিজে ব্যাট করতে আসেন ৬ নম্বরে। রোহিত এর আগে ২০১৯ সালের দিকে টেস্ট ক্রিকেটে ছয় নম্বরে ব্যাটিং করতেন তবে লম্বা সময় ধরে তার এখানে খেলার কোন অভ্যাস নেই তবুও দলের স্বার্থে তিনি নিজেকে মিডিল ওর্ডারে নামিয়ে নিয়ে আসেন। যার ফলে তার ব্যাটিংয়ে বড় প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। তার বদলে ম্যাচের উদ্বোধন করতে এসে কেএল রাহুল প্রথম ইনিংসে ৩৭ রান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ রান করেন। অন্যদিকে ৬ নম্বরে ব্যাট করার সময় অধিনায়ক রোহিত শর্মার পারফরম্যান্স ছিল খুবই খারাপ। এই ম্যাচে ৬ নম্বরে ব্যাট করে প্রথম ইনিংসে তিনি ৩ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৬ রান বানাতে সক্ষম হয়েছেন।
ওয়াসিংটন সুন্দরকে বাদ দেওয়া
রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) উপরে দল পরিবর্তন নিয়ে আঙুল উঠেছে। আসলে প্রথম টেস্টে শুভমান গিল এবং রোহিত শর্মা দুজনেই খেলতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় টেস্টের আগে শুভমন সুস্থ হওয়ায় রোহিত এবং তিনি যে দ্বিতীয় টেস্টটি খেলবে তার নিশ্চয়তা ছিল। তবে দলের স্পিন অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দরকে বাদ দিতেই শুরু হয়েছে সমালোচনা। বিগত কয়েক মাস ধরে দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছে ওয়াশিংটন সুন্দর (Washington Sundar)। ব্যাট এবং বল হাতে দলের হয়ে দুর্দান্ত প্রদর্শন দেখাচ্ছেন তিনি। চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ব্যাটা হাতে রান পেয়েছেন তিনি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে দুটি উইকেট সংগ্রহ করে নেন তামিলনাড়ুর এই অলরাউন্ডার। ভালো প্রদর্শনের পরেও ওয়াশিংটনকে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে দূরে রাখেন ক্যাপ্টেন। এই পরিস্থিতিতে রোহিতের ক্যাপ্টেন্সির উপরে উঠেছে প্রশ্ন।