গৌতম গম্ভীরকে (Gautam Gambhir) প্রধান কোচ করার পর ভারতীয় ক্রিকেটে যেন নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। ভক্তরা গম্ভীরকে শুরুতে বেশ মান্যতা দিয়েছিল। শুরুতেই শ্রীলঙ্কাকে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করে গম্ভীর জামানের সূচনা হয়েছিল। তাঁর আগ্রাসী মানসিকতা ও জেতার মানসিকতা দলের অগ্রগতিতে বেশ কার্যকরী। সাদা বলের ক্রিকেটে গম্ভীরের রেকর্ড বেশ ভালো, তবে লাল বলের ক্রিকেটে গম্ভীরের কোচিং নিয়ে বেশ প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ, চলতি ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজও হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পথে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১০ বছর পর টেস্ট সিরিজে হার – সবকিছু মিলিয়ে টেস্টে জয়ের থেকে বেশি পরাজয় দেখতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। একসময়ে ঘরের মাঠে টেস্ট ক্রিকেটে দাপট ছিল টিম ইন্ডিয়ার, তবে এখন দলের ব্যাটসম্যানরা স্পিন উইকেটে মুখ থুবড়ে পড়ছেন এবং বোলাররা সঠিক লাইন লেন্থ খুঁজতে ব্যার্থ। সমস্ত ব্যর্থতার তোপ এখন গম্ভীরের উপর। যে কারণে গম্ভীরের হেড কোচ হিসেবে টিকে থাকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তাঁর জায়গায় এই ৩ খেলোয়াড়কে ভারতের নতুন হেড কোচ হিসেবে দেখতে পাওয়া যেতে পারে।
রাহুল দ্রাবিড়

প্রথমেই উঠে আসে রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid) নাম। ভারতীয় ক্রিকেটে তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। ভারতের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন দ্রাবিড়। পরে, কোচ হিসাবেও বেশ সফলতা পেয়েছেন দ্রাবিড়। দীর্ঘদিন ধরে অনূর্ধ ১৯ খেলোয়াড়দের অনুশীলন করিয়ে জাতীয় দলের প্রধান কোচের ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। তাঁর কোচিংয়ে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। এমনকি, তাঁর হাত ধরে ভারত পেয়েছে বহু তরুণ প্রতিভা, যারা এখন জাতীয় দলের স্তম্ভ। ঋষভ পন্থ, শুভমান গিল, শ্রেয়স আইয়ার, পৃথ্বী শ – এদের অনেকেই দ্রাবিড়ের শিক্ষা থেকে এগিয়ে এসেছে। দ্রাবিড়ের সবথেকে বড় দিক হলো চাপ সামলানোর দক্ষতা এবং দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে আস্থা বজায় রাখা। সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে সুলভ সম্পর্কও বজায় রেখেছিলেন দ্রাবিড়। তিনি ভারতকে ১৪৪ ম্যাচে কোচিং করিয়েছেন যেখানে দল ১০৩টি ম্যাচ জিতেছে। তার জয়ের শতকরা ৭১.৫ শতাংশ যেটি ভারতের সমস্ত কোচের থেকে ভালো পরিসংখ্যান। তাঁর কোচিংয়েও ভারত ঘরের মাঠে কোনো টেস্ট সিরিজ হারেনি। তিনি ২০২৪’ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর কোচিংকে আলবিদা জানিয়ে দিয়েছিলেন। তবে তিনি টেস্ট কোচ হিসাবে দলে ফিরলে সেটি দলের জন্য লক্ষীলাভ হতে চলেছে।
Read More: কেএল রাহুলকে অধিনায়ক করে মূর্খতার পরিচয় দিল BCCI, দঃ আফ্রিকার বিপক্ষে ODI সিরিজও হারবে দল !!
ভিভিএস লক্ষণ

দ্বিতীয় নামটি হল ভিভিএস লক্ষ্মণের (VVS Laxman)। ভারতীয় ক্রিকেটে অন্যতম সফল টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত ভিভিএস লক্ষণ।বর্তমানে তিনি NCA-এর প্রধান। দেশের প্রত্যেকটি তরুণ খেলোয়াড়ের উন্নতির প্রতিটি ধাপে তাঁর সরাসরি অংশগ্রহণ রয়েছে। পাশাপাশি, বিসিসিআইয়ের COE’তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন তিনি। রাহুল দ্রাবিড় যখন ভারতের প্রধান কোচ ছিলেন তখন বেশ কয়েকটি সিরিজে ভারতের কোচিংয়ের ভূমিকা পালন করেছিলেন লক্ষণ। লক্ষণ টেস্ট ক্রিকেটের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র, ব্যাটিং টেকনিক, প্রয়োজনীয় জায়গায় সঠিক পরামর্শ দেওয়ার জন্য বিখ্যাত এই লক্ষণ। তাঁকে ভারতের নয়া হেড কোচ বানালে তা দলের পক্ষে লাভই হবে।
আশিষ নেহরা

তিন নম্বরে উঠে আসে আশিষ নেহরার (Ashish Nehra) নাম। ভারতীয় ক্রিকেটে তিনি শুধু একজন বোলার নন, বরং সেরা কোচদের একজন। তাঁর কোচিং দক্ষতা সবচেয়ে বেশি ফুটে উঠেছে আইপিএলের মঞ্চে গুজরাট টাইটান্সের (GT) সঙ্গে। প্রথম মৌসুমেই তাঁর কোচিংয়ে IPL চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল গুজরাত। পরের বার আবার ফাইনালে পৌঁছেছিল দল। গত মৌসুমে প্লে-অফ পৌঁছেছিল দল। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের তিনি তিনি একজন পরিপক্ক কোচ। কোচ হিসেবে খুব এনার্জেটিক নেহরা। ডাগআউটে চুপচাপ বসে খুবই কম থাকেন তিনি। তাঁর আগ্রাসী কোচিং দলকে সফল হওয়ার একটা পথ দেখায়। তিনি ভারতের কোচ হলে পেসারদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং দেশে ও বিদেশের মাটিতে ভারত বেশ লাভবান হবে।