প্রথম ম্যাচেই জয় দিকে আইপিএলের একাদশতম সংস্করণে তাদের অভিযান শুরু করল কলকাতা নাইট রাইডার্স। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু করে দুবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স হারাল চার উইকেটে। বিস্ময়কর স্পিনার সুনীল নারিন মাত্র ১৭ বলে দুরন্ত হাফ সেঞ্চুরি করে কেকেআরকে এই ম্যাচে কর্তৃত্ব করার সুযোগ করে দেন। শেষ দিকে কেকেআরের নতুন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের নির্ভরযোগ্য ইনিংস তাদের হাতে জয় এনে দেয় ম্যাচের সাত বল বাকি থাকতেই। টস জিতে ব্যাঙ্গালুরুকে আগে ব্যাট করতে পাঠান কার্তিক। অতিথি দলের হয়ে ওপেন করতে নামেন তাদের সেরা দুই ওপেনিং জুটি ব্রেন্ডন ম্যাকালাম এবং কুইন্টন ডি’কক। এক সময়ের কেকেআর তারকা ম্যাকালাম ম্যাচের শুরু থেকেই বেশ কিছু ব্যাতিক্রমী শট খেলতে শুরু করেন। অন্যদিকে আরেক ওপেনার ডি’কক মাত্র চার রানেই আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান।

যদিও ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন ম্যাকালাম। কিন্তু মিডল অর্ডারে নেমে স্ট্রাইক রোটেট করতে সমস্যায় পড়েন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ব্যাঙ্গালুরুকে নির্ভরতা দিয়ে ২৭ বলে ৪৩ রান করেন ম্যাকালাম, যার মধ্যে ছিল ৬টি চার এবং ২টি বিশাল ছয়। কিন্তু ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই তাকে প্যাভিলয়নে ফেরত পাঠান নারিন। এরপর কোহলিকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসে ডেভিলিয়র্স। শুরু থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার এই তারকা ছন্দে ছিলেন এবং মাত্র ২৩ বলে পাঁচটি বিশাল ছয় এবং একটি চারের সাহায্যে ৪৪ রান করেন তিনি। যদিও পার্ট টাইম বোলার নীতেশ রানা পরপর দুটি বলে তুলে নেন কোহলি এবং ডেভিলিয়র্সকে। ব্যাঙ্গালুরুর লোয়ার মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত প্রদর্শন করেন মনদীপ সিং। মাত্র ১৮ বলে চারটি চার এবং দুটি ছক্কার সাহায্যে তার করা ৩৭ রানের দৌলতেই শেষ পর্যন্ত তাদের নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৬ রানে পৌঁছয় আরবিসি।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে যোগ্য জবাব দিতে শুরু করে কেকেআরের ওপেনিং জুটি সুনিল নারিন এবং ক্রিস লিন। শুরুতেই লিন আউট হলেও বেশ কিছু ব্যাতিক্রমী শট খেলে মাত্র ১৭ বলে দ্রুত হাফ সেঞ্চুরি করেন নারিন। শেষ পর্যন্ত ৪টি চার এবং পাঁচটি ছয়ের সাহায্যে ১৯ বলে ৫০ রান করে আউট হন তিনি। গত বছরের আরবিসির বিরুদ্ধে তার পারফর্মেন্সেরই পুনরাবৃতি ঘটান নারিন। গত বছর আইপিএলে আরবিসির বিরুদ্ধে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এরপর ব্যাট করতে নেমে রবিন উথাপ্পা ওয়াশিংটন সুন্দরকে একটি বিশাল ছয় হাঁকালেও মাত্র ১৩ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফেরত যান তিনি। এরপরই কেকেআরের ইনিংসের হাল ধরেন অধিনায়ক কার্তিক এবং নীতিশ রানা। এই দুজনে মিলে ৫৫ রানের পার্টারশিপ খেলেন। যার মধ্যে দুটি চার এবং দুটি ছয়ের সাহায্যে ২৫ বলে ৩৪ রান করে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে আউট হন তিনি। শেষ পর্যন্ত মাথা ঠান্ডা রেখে দলের জয় নিশ্চিত করেন অধিনায়ক কার্তিক।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে দাঁড়িয়ে কার্তিক জানান, “ দারুণ লাগছে। ভালো শুরুয়াত করার জন্য। সকলেই তাই চায়, আমিও তার ব্যতিক্রম নই। সেই সময় (পাওয়ার প্লে চলাকালীন)আমার মনে হচ্ছিল জোরে বোলারদের বল বেশ ভালো গতিতেই আসছিল। ফলে আমি চেয়েছিলাম রিস্ট স্পিনারদের আক্রমণে আনতে, তার জন্য সামান্য ঝুঁকিও নি আমি যাতে ওদের বড় শট খেলতে সামান্য বেশি সময় লাগে। খুবই কঠিন ছিল যখন বিরাট এবং এবি ব্যাট করছিল। ওরা দুর্দান্ত এবং ওরা দুজনেই বড় প্লেয়ার। ওরা খেলা শুরু করতেই ওদের উইকেটের জন্য প্রার্থনা করছিলাম, এবং আমার মনে হয় আমরা সত্যিই ভীষণ ভাগ্যবান। ভগবানের কাছে আমরা প্রার্থনা করছিলাম ও (সুনীল নারিন) যাতে বেশ কিছু বল খেলে — আসলে আমি বলতে চাইছি এটা ও খুব ভালোই করে। আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে ও আমাদের একটা ভালো শুরুয়াত দেবে। আমরা সকলেই দর্শকদের আনন্দের জন্য খেলি এবং প্রচুর সংখ্যক দর্শক উপস্থিতও ছিল। এরকম একটা দলের হয়ে দর্শকদের জন্য আমরা এভাবেই খেলতে পছন্দ করব”।