রাঁচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্য়াচের সিরিজের প্রথম টি-২০ আন্তর্জাতিকে জয়ের পর দলের বোলারদের প্রশংসা করেছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্য়াচটি ভারত নয় উইকেটে জিতে নেয়। জেএসসিএ ইন্টারন্য়াশনাল স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সে টসে জিতে বিরাট অজিদের প্রথমে ব্য়াট করতে পাঠান। কিন্তু প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির শহরের আকাশ অন্য় রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষা করছিল। টার্গেট সেট করতে নেমে নিয়মিত ব্য়বধানে উইকেট হারাতে থাকা অস্ট্রেলিয়া হারবে, এ প্রায় নিশ্চিত ছিল। বিশেষ করে আঠারো ওভার চার বলে অজিদের রান তখন ১১৮। আট উইকেট ততক্ষণে চলে গিয়েছে। আটের মধ্য়ে ছ’জন আবার বোল্ড আউট। রেকর্ডের বিচারে ভারতের তৈরি করা আরও একটি নজির এটি। এর আগে সীমায়িত ওভারের ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক আঙিনায় বিপক্ষের এতজন ব্য়াটসম্য়ানকে বোল্ড করে প্যাভিলিয়নের পথ দেখাতে কোনও ক্রিকেট খেলিয়ে দেশ পারেনি। এরপরই শুরু হয় বৃষ্টি। ঘণ্টা দু’য়েক খেলা বন্ধ থাকার পর ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথোডে ভারতের সামনে পরিবর্তিত টার্গেট দাঁড়ায় ছয় ওভারে আটচল্লিশ রান। ওপেনার রোহিত শর্মার উইকেট হারালেও তিন বল বাকি থাকতেই ঊনপঞ্চাশ রান করে ন’উইকেটে ম্য়াচ জিতে নেয় ভারত। দলে কামব্য়াক করা অপর ওপেনার শিখর ধওয়নের সঙ্গে অপরাজিত থেকে যান অধিনায়ক কোহলি।
ভারত ম্য়াচ জিতলেও, কোহলি যেভাবে অজিদের হারাতে চেয়েছিলেন, সেই পরিকল্পনাটা বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যায়। ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে ম্য়াচের বয়স ছোটো হয়ে যাওয়ার পর ছয় ওভারে আটচল্লিশ রানের লক্ষ্য়মাত্রা বেঁধে দেওয়ায় বেশ বিরক্ত হন ভারত অধিনায়ক। তাছাড়া, ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়ম ক্রিকেটে যেদিন থেকে চালু হয়েছে, তারপর থেকেই শোনা যায়, তাবড় তাবড় ক্রিকেটাররা এই নিয়মটা নিয়ে কেমন যেন চিড়বিড় করে ওঠেন নামটা কানে গেলেই। কারণ, কিভাবে যে কি হিসেবে করা হয় এবং কিভাবে যে পরিবর্তিত টার্গেট সেট করা হয়, তা মস্তিষ্কের জন্য সহজ পাচ্য় করে তোলার পদ্ধতি তাঁদের পোড় খাওয়া ঝানু মাথারও মুরদের বাইরে।
ম্য়াচের পর বিরাট বলেন, ”টসে জেতার পর আমরা প্রথম বল নিয়েছিলাম। যেভাবে বল করা দরকার ছিল, সেভাবে বোলাররা বল করেছে। উইকেট পেয়েছি। কিন্তু, ওই ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথোড। কিছুই বুঝতে পারি না আমরা। ১১৮ রানে ওদেরকে ওই সময় বেঁধে রাখার পর, ভেবেছিলাম চল্লিশ রানের টার্গেট আমাদের সামনে আসবে। তার বদলে আমাদের আটচল্লিশ রান করতে বলা হলো। খুব একটাসহজ ছিল না ওই পরিস্থিতিতে।”
তারপর বোলারদের প্রশংসা করে ভারত অধিনায়ক বলেন, ”এটা দলগত প্রচেষ্টার জয়। তবে, টিম ম্য়ানেজমেন্টের মাথার দাম দিতে হবে। ঠিকমতো প্রথম একাদশ বেছে নেওয়ার জন্য। যেমন দলে মিস্ট্রি বোলারদের রাখা হয়েছিল। ওদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও বাড়তি প্রয়াস চালিয়েছিল ম্য়ানেজমেন্ট। ওরা কোনও কোনও ম্য়াচে রান একটু বেশি খরচ করে ফেললেও, কিভাবে আবার ফিরে আসতে হয় শিখে ফেলেছে। ভুবি-বুমরাহ এখন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভালো বল করেছে। এই ধরনের ফরম্য়াটে সফল হতে গেলে ইয়র্কার, স্লোয়ার বলের সঙ্গে ব্য়ক্তিগত দক্ষতার মিশেল দরকার। সঙ্গে বুদ্ধি। যাতে ব্য়াটসম্য়ান লোভ দেখানো যায় মেরে খেলতে। ভুল জায়গায় মারতে বাধ্য় করলে তবেই উইকেট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা যায়।”
বহুদিন পরে ভারতীয় দলে ফিরে ওপেনার ধওয়নের ১২ বলে অপরাজিত ১৫ রান করেন। সে প্রসঙ্গে কোহলি বলেন, ”দুর্ভাগ্য়বশত, ধওয়নকে অনেকগুলি ম্য়াচ মিস করতে হলো এর মাঝে। কিন্তু, ও দলে ফিরে এসেছে এখন। এই যে পনেরো রান করলো, এতে ওর আত্মবিশ্বাস বাড়বে।”
উল্লেখ্য়, সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০ ম্য়াচটি ভারত ও অস্ট্রেলিয়া গুয়াহাটিতে আগামী মঙ্গলবার দশ অক্টোবর গুয়াহাটির নবনির্মিত বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে খেলবে। ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্য়াচ দিয়েই আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিষেক হতে চলেছে বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামের।
ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে ভীষণ বিরক্ত বিরাট
