ফের লো স্কোরিং ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ বোলার আর ফিল্ডারদের সৌজন্যে রাজস্থান রয়্যালসকে ১১ রানে হারিয়ে দিল। হায়দ্রাবাদ দারুণ বোলিং এবং ফিল্ডিং করে এই ম্যাচ নিজেদের নামে করল। প্রথমে টস জিতে হায়দ্রাবাদ আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫১ রান করে। সহজ দেখানো এই লক্ষ্য পর্যন্ত হায়দ্রাবাদের বোলার এবং ফিল্ডাররা রাজস্থানকে পৌঁছতেই দেয় নি এবং মাত্র ১৪০ রানেই আটকে দেয়।
মিডল অর্ডারের ধস
রান তাড়া করতে নেমে ১৩ রান করার পরই রাহুল ত্রিপাঠিকে হারিয়ে প্রথম ধাক্কা খায় রাজস্থান। এরপরই অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে এবং সঞ্জু স্যামসন মিলে রাজস্থানের ইনিংসকে সামলানোর চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু স্যামসন আউট হতেই রাজস্থানের মিডল অর্ডার ভেঙে পড়ে। শেষ পর্যন্ত রাহানে ৬৫ রানে অপরাজিত থাকেন। সঞ্জু স্যামসন ৪০ রান করেন। অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রাহুল ত্রিপাঠি ৪, বেন স্টোকস, ০, জোস বাটলর ১০, মহিপাল লোমরোর ১১, কে গৌতম ৮ রানই করতে পারেন।
বোলার এবং ফিল্ডাররা ম্যাচ ছিনিয়ে নেয়
যদিও হায়দ্রাবাদের ব্যাটসম্যানরা বড় রান করতে পারেন নি, কিন্তু বোলাররা এবং বিশেষ করে ফিল্ডাররা এই ম্যাচে হায়দ্রাবাদকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। সিদ্ধার্থ কৌল ২ উইকেট নেন। এছাড়াও সন্দীপ শর্মা, সাকিব আল হাসান, বাসিল থাম্পি, রশিদ খান এবং ইউসুফ পাঠান একটি করে উইকেট নেন। যতটা দার্যি ত্ব বোলাররা সামলেছে ঠিক ততটাই সামলেছে ফিল্ডাররাও, এমনকী এক সময় এই ম্যাচ উত্তেজক পরিস্থিতিতেও পৌঁছে যায়। এবং রাজস্থানের ব্যাটসম্যানেরা যদি কিছু বড় শট নিতে পারতেন তাহলে অনায়াসে এই ম্যাচ রাজস্থানের দখলে চলে যেত। যদিও রাজস্থানের ব্যাটসম্যানের বড় শট মারার সমস্ত প্রয়াসই করেছিল, কিন্তু কিন্তু ফিল্ডার্সরা তাদের সেই প্রচেষ্টায় জল ঢেলে দেয়। এমনকী প্রায় চার ওভার পর্যন্ত রাজস্থানের তরফে কোনও চার বা ছয় রান নেওয়া সম্ভব হয় নি। মহিপাল লোমরোর বড় শট মারার চেষ্টা করলেও হায়দ্রাবাদ ফিল্ডাররা বাউন্ডারি লাইনেই তা আটকে দেয়। ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং দুই ক্ষেত্রেই রাজস্থানকে নিরাশ করেছেন রাহুল ত্রিপাঠি। রাজস্থান বোলার জোফ্রা আর্চারের বলে স্লিপে হায়দ্রাবাদ অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচ ফেলে দেন রাহুল। যার পরেই উইলিয়ামসন বড় রানের ইনিংস খেলেন। এর আগের ম্যাচেও সিএসকের বিরুদ্ধে রাহুল স্লিপে শেন ওয়াটসনের ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন। যার ফলে রাজস্থান দলকে তার মূল্য চোকাতে হয়। ওই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি করে দলকে বড় রানের দিকে নিয়ে যান ওয়াটসন।
হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক ইনিংসের হাল ধরেন
হায়দ্রাবাদের শুরুটাও খুব ভাল হয় নি, দলের ১৭ রানের মাথায় শিখর ধবনের রূপে প্রথম উইকেট হারায় তারা। মাত্র ৬ রান করে আউট হন ধবন। যদিও অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং অ্যালেক্স হেলস ইনিংস সামলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু হায়দ্রাবাদের রান তোলার গতি ছিল খুবই স্লথ। কিন্তু এই দুই ব্যাটসম্যানই ক্রিজে টিকে থেকে বড় রানের পার্টনারশিপ গড়েন। কে গৌতমের বলে ৪৫ রানে আউট হল হেলস। এরপরই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও আউট হয়ে গেলে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে হায়দ্রাবাদের ব্যাটিং লাইনআইপ। উইলিয়ামসনের আউট হওয়ার পর একমাত্র মনীশ পাণ্ডে (১০) এবং ঋদ্ধিমান সাহা (১০) আর কোনও ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারেন নি।
ধবন ৬, সাকিব ৬, পাঠন ২ এবং রশিদ খান মাত্র ১ রান করেই আউট হন। এক সময় ৩ উইকেটে ১১৬ রান থেকে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানেই শেষ হয়ে যায় হায়দ্রাবাদের ইনিংস। রাজস্থানের হয়ে কে গৌতম উইলিয়ামসন এবং হেলসের উইকেট নিয়ে হায়দ্রাবাদের রানের গতিকে স্লথ করে দেন। ডেথ ওভারে জোফ্রা আর্চার হায়দ্রাবাদের কোমর ভেঙে দেন। ১৮ ওভারের প্রথম বলেই ইয়র্কার করে সাকিব আল হাসানকে তুলে নেন তিনি, এই ওভারের শেষ বলে ইউসুফ পাঠানকেও আউট করেন তিনি। হায়দ্রাবাদের ১৫০ রানের মাথায় রশিদ খানকে বেন স্টোকসের হাতে ক্যাচ আউট করিয়ে ৩ উইকেট দখল করেন তিনি।