ম্য়াচের পর এমনটা হবে কেউ ভাবতেউ পারেননি। ভারত ম্য়াচ জিতেছে। সহ-অধিনায় ও অধিনায়ক একসঙ্গে ব্য়াট হাতে বড় ভূমিকা নিয়ে স্কোর বোর্ডে বড় রান তুলছিলেন বলে নিউজিল্য়ান্ডকে ২-১ ব্য়বধানে সিরিজে হারাতে পেরেছে ভারত। বিশেষ এই ভারতীয় দলটা একটা ইউনিট হিসেবে খেলে। রোহিত নিজেও এই কথা মিডিয়ার সামনে বক্তব্য় রাখতে গিয়ে বলেছেন। কিন্তু, হঠাৎ করে অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে কেন খোঁচা দিয়ে বসলেন সহ-অধিনায়ক রোহিত শর্মা?
কানপুরে গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে রোহিত ও কোহলি ২৩০ রান যোগ করেন। মাঠের সব প্রান্তেই দু’জনেই শট নিয়েছেন রান তুলতে গিয়ে। কিউয়ি বোলারদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিলেন একেবারে। ব্য়াটিং দক্ষতায় এই দুই ক্রিকেটারের ধারেকাছে কাউকেই রাখা যাবে না, বর্তমান ভারতীয় দলের। অথচ এতদিন ধরে জাতীয় দলে একসঙ্গে খেললেও, রান নেওয়ার ক্ষেত্রে দু’জনের বোঝাপড়া এখনও তৈরি হয়নি।
একদিনের ক্রিকেটে রোহিত ও বিরাট ৫৮টি ইনিংস একসঙ্গে খেলেছেন। ৩০৭১ রান করেছেন দু’জনে। ১১ বার শতাধিক ও আটবার পঞ্চাশ রানের ওপর পার্টনারশিপ করেছেন ভারতীয় দলের দুই সেরা স্তম্ভ। কিন্তু, তা সত্ত্বেও দু’জনের রানিং বিট্য়ুই দ্য় উইকেটে খুব খারাপ। আর এরজন্য় দু’জনকে নিয়ে সমালোচনাও হয় প্রচুর। এখনও পর্যন্ত ছ’বার রান আউটের ঘটনা ঘটেছে এই দুই ক্রিকেটার একসঙ্গে খেলার সময়। প্রথম চার বার বিরাট আউট হলেও, শেষ দু’বার কিন্তু রোহিতকে প্য়াভিলিয়নে ফিরতে হয়েছে। আর সে দু’টি ঘটনা এবছরেই ঘটেছে। দু’বারই রোহিত সেট হয়ে গিয়েছিলেন। এবছরের প্রথমটি হলো চ্য়াম্পিয়ন্স ট্রফির সময় এজবাস্টনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ৯১ রান করে রান আউট হওয়ায় শতরান হাতছাড়া হয় হিটম্য়ানের। তারপর অস্ট্রেলিয়া সিরিজে বেঙ্গালুরুতে বিরাট রান আউট করে ফেলেন রোহিতকে। এবারও বড় স্কোর গড়ার দিকে এগোচ্ছিলেন ভারতের সহ-অধিনায়ক। ফলে এবছরের একদিনের ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করার তালিকায় এগিয়ে যেতে পারতেন রোহিত। যদিও প্রথম চার সাক্ষাতে বিরাটকে আউট করে ফেলেছিলেন হিটম্য়ান। আর তার মধ্য়ে দু’বার ডাবল সেঞ্চুরি করে সেই ক্ষতির মেরামত করে দিয়েছিলেন তিনি। আর একবার শতরান করেছেন রোহিত
কানপুরে তাঁদের পার্টনারশিপ সম্পর্কে রোহিত মিডিয়াতে বক্তব্য় রাখেন, ”আমরা একে অপরের সঙ্গে ব্য়াট করাটা উপভোগ করি। গত তিন-চার বছরে বেশ কয়েকটা ভালো পার্টনারশিপ উপহার দিয়েছি। ওর মতো একজন ব্য়াটসম্য়ান উল্টোদিকে থাকলে কাজটা অনেকর সহজ হয়ে যায়। তবে, নিজেদেরকে রান-আউট করে না ফেলার জন্য় ভাগ্য়বান বলব।”
কানপুরে গত রবিবার (২৯ অক্টোবর) সিরিজ নির্ণায়ক ম্য়াচে রোহিত এবং বিরাট দু’জনেই বেশ সতর্ক হয়ে খেলছিলেন। আগামী টি-২০ সিরিজের দু’জনকে এই ব্য়াপারটা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, ভুল বোঝাবুঝিতে তাঁদের মতো বড় মাপের ব্য়াটসম্য়ান আউট হয় গেলে আখেরে ভারতীয় দলেরই ক্ষতি। কারণ, সেক্ষেত্রে ম্য়াচ জেতার ক্ষেত্রেও তার প্রভাব পড়বে।
যে ছ‘বার রোহিত ও বিরাটের ভুল বোঝাবুঝিতে রান-আউটের ঘটনা ঘটেছে |
২০১১ – কিংস্টন : ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে রান-আউট হল বিরাট |
২০১৩ – বেঙ্গালুরু : অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে রান-আউট হন বিরাট এবং রোহিত দ্বিশতরান করেন |
২০১৪ – কলকাতা : শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে রান-আউট হন বিরাট এবং রোহিত দ্বিশতরান করেন |
২০১৬ – ব্রিসবেন : অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে রান-আউট বিরাট এবং রোহিতের শতরান |
২০১৭ – এজবাস্টন : আইসিসি চ্য়াম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রান-আউট রোহিত |
২০১৭ – বেঙ্গালুরু : অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে রান-আউট রোহিত |