গতকাল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে অতি জঘন্যভাবে ম্যাচ হারের পর স্বভাবতই শুরু হয়ে গিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের উপর সমালোচনার বন্যা। একাধিক পরিবর্তন করেও নিজেদের দলকে কোনওভাবেই জয়ের রাস্তায় নিয়ে আসতে পারছে না কলকাতা নাইট রাইডার্স টিম ম্যানেজমেন্ট। এমন কি, ম্যাচ শুরুর ঘন্টা কয়েক আগে নিজেদের অধিনায়ক বদল করে বিশ্বকাপজয়ী ইয়ন মর্গ্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও ভাগ্য ফেরেনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের।
আর এই নিয়ে সমালোচনায় ভরে যায় কলকাতা নাইট রাইডার্স। এবার কেকেআর এর এই অবস্থা নিয়ে তাদের সমালোচনা করেন প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র সেহওয়াগ। যে কোনও বিষয়ে অতি উবাচ বিধ্বংসী এই প্রাক্তন ওপেনার। এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের টিম ম্যানেজমেন্ট এবং দলের স্ট্র্যাটেজি নিয়েও বেলাগাল সমালোচনা করে বসলেন সেহওয়াগ।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের এই খারাপ পারফর্মেন্স নিয়ে বীরেন্দ্র সেহওয়াগ বলেছেন, “এটি অত্যন্ত জরুরি কোনও অধিনায়কের কাছে যে সে তার টিমকে নিয়ে বসে যে জায়গাগুলিতে সমস্যা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা। কোনও দলকে সব সময় তাদের পজিটিভ নিয়ে কাজ করা উচিত এবং প্রথম একাদশ নিয়ে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত আগামী দিনে।”
এরপর কলকাতা নাইট রাইডার্সের দলকে নিয়ে বীরেন্দ্র সেহওয়াগ জানিয়েছেন, “প্রত্যেককে খোলা মনে খেলতে দেওয়া উচিত এবং মাঠে নিজেদের আত্মপ্রকাশ করা উচিত। কারণ এই দলটিকে এই মুহুর্তে বিটস অ্যান্ড পিসেস সাইড মনে হচ্ছে। অধিনায়কের উচিত সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এবং কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া। শুভমন গিলকে পরামর্শ দেওয়া উচিত যে হয় পাওয়ার প্লেতে আগ্রাসী ভূমিকা নিক নইলে ওনার ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তন করা উচিত। এটি খুবই জরুরি ভালো ভাবে শুরু করা কারণ যদি ভিতই শক্ত না হয়, তাহলে দেওয়াল ভেঙে পড়তে বাধ্য।”
আর বীরেন্দ্র সেহওয়াগের এই মন্তব্য অনেকটাই শোনাল প্রখ্যাত ধারাভাষ্যকার এবং প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকরের মত। গত বছর বিশ্বকাপে ভারতীয় অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাকে বিটস অ্যান্ড পিসেস ক্রিকেটার বলেছিলেন মাঞ্জরেকর। যা নিয়ে বিশ্বকাপ চলাকালীনই টুইট যুদ্ধে লেগে পড়েছিলেন জাদেজা। এবার এই একই কথার ব্যবহার করলেন বীরেন্দ্র সেহওয়াগ, এবার কলকাতা নাইট রাইডার্স দলটিকে এমনটা বললেন।
প্রথমে ব্যাট করে বেশ বড়সড় ব্যাটিং ধসের মুখে পড়েছিল নাইট রাইডার্স। এক সময় নাইটদের স্কোর ছিল ৬৭/৫। সেখান থেকে ভালো একটি পার্টনারশিপ গড়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে একটি ভদ্রস্থ স্কোরে নিয়ে গিয়েছিলেন অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান এবং পেসার প্যাট কামিন্স। নিজের টি২০ কেরিয়ারের প্রথম অর্ধশতরান করেন কামিন্স। ৩৬ বলে ৫৩ রান করেছিলেন কামিন্স, অন্যদিকে তাকে যোগ্য সহায়তা দিয়ে ২৯ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন মর্গ্যান। কিন্তু মুম্বইয়ের ওপেনিং পার্টনারশিপে রোহিত শর্মা ও কুইন্টন ডি ককের ৯৪ রানের পার্টনারশিপেই ম্যাচ হাত থেকে বেরিয়ে যায় নাইট রাইডার্সের। এই হারের ফলে কলকাতা নাইট রাইডার্স রয়েই গেল চতুর্থ স্থানে, অন্যদিকে দুর্দান্ত জয়ের দরুণ আবারও আইপিএল এর লিগ টেবিলের শীর্ষস্থানে পৌঁছল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।